কোটার বাতিলের প্রজ্ঞাপণের দাবিতে বিক্ষোভ কাল
শেয়ারবাজার ডেস্ক: কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপণ জারির দাবিতে কাল রোববার বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এ কর্মসূচির অংশ হিসেবে কাল সারা দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বেলা ১টা পর্যন্ত সব ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রাখার কথা বলেছেন তাঁরা।
আজ শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরির সামনে সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন।
হাসান আল মামুন বলেন, ‘আন্দোলনকারীরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। কুমিল্লা ও রংপুরে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তারের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এ ধরনের অপচেষ্টা করলে ছাত্ররা বসে থাকবে না।’
কোটা আন্দোলনে আটক করা শিক্ষার্থীদের অবিলম্বে ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মামুন বলেন, ‘কাল বিক্ষোভ সমাবেশ। এ সময় সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস পরীক্ষা স্থগিত থাকবে।’
সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারীদের ওপর অতি উৎসাহী কিছু সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানানো হয়। একই সঙ্গে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক, ফারুক হাসান, জসীমউদ্দিন প্রমুখ।
এ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছাত্রদের অভিযোগ, রংপুরে শান্তিপূর্ণ অবরোধ কর্মসূচিতে পুলিশ বাধা দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের ছবি তুলে পুলিশ আন্দোলনকারীদের গ্রেপ্তার করার চেষ্টা করছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক জসীমউদ্দিনের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। পরিবারের সদস্যদের নাজেহাল করেছে।
যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসান বলেন, প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাস্তা ছাড়ব না। এ দেশের ছাত্ররা যেমন ৫২, ৬৯, ৭১ ও ৯০ সালে যেমন রাস্তা ছাড়েনি, আমরাও ছাড়ব না। প্রধানমন্ত্রী সরকারের প্রধান নির্বাহী। তিনি সংসদে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, কোটা বাতিল হবে। আইন অনুযায়ী সংসদে কোনো প্রতিশ্রুতি তা বাস্তবায়ন করতে হয় নির্বাহী বিভাগকে। কিন্তু জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সেটা বাস্তবায়ন করছে না।
সংবাদ সম্মেলনে এই আন্দোলনে নামা শিক্ষার্থীরা বলেন, আগে থেকেই তাগিদ দিচ্ছেন তাঁরা। আর আন্দোলন করতে চান না, পড়াশোনা করতে চান। কিন্তু সরকারের আমলারা বার বার আমাদের যে আশ্বাস দিয়েছেন, তা মিথ্যা আশ্বাস। আমলারা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ বাস্তবায়ন না করে সরকার ও ছাত্রদের সঙ্গে ডাবল গেম খেলছেন। প্রজ্ঞাপন জারি নিয়ে যে কমিটি করা হয়েছে তা ভুয়া। এর জন্য কোনো কমিটি গঠনের দরকার হয় না। সরকারকে বেকায়দায় ফেলার পাঁয়তারা করে যাচ্ছেন।
কোটা সংস্কার বা বাতিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে কমিটি গঠনের প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরেই আন্দোলন করছিলেন শিক্ষার্থীরা। ৯ এপ্রিল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠকে কোটা সংস্কার নিয়ে আন্দোলনকারীরা।
কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১১ এপ্রিল বুধবার জাতীয় সংসদে কোটা ব্যবস্থা বাতিলের কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোটা নিয়ে যখন এত কিছু, তখন কোটাই থাকবে না। কোনো কোটারই দরকার নেই। যারা প্রতিবন্ধী ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী তাদের আমরা অন্যভাবে চাকরির ব্যবস্থা করে দেব।’
এরপর প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী কোটা নিয়ে কোনো প্রজ্ঞাপন জারি করা না হলে ফের সোচ্চার হন শিক্ষার্থীরা।
শেয়ারবাজারনিউজ/মু