আজ: বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ইং, ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৭ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৭ অগাস্ট ২০১৮, সোমবার |

kidarkar

২১ আগস্ট হামলার প্রকৃত অপরাধীদের বিচার চান ফখরুল

শেয়ারবাজার ডেস্ক: ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার বিষয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপি তখনো নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে, এখনো জানায়। ওই ঘটনার জন্য দায়ী প্রকৃত অপরাধীদের বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চায় বিএনপি। তিনি বলেন, ‘কারণ, আমরাও চাই এমন নির্মম অরাজনৈতিক ঘটনার যেন আর পুনরাবৃত্তি না হয়।’

আজ সোমবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সম্প্রতি ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়কে ঘিরে সরকারপ্রধান থেকে শুরু করে আইনমন্ত্রী, সেতুমন্ত্রী এবং ক্ষমতাসীনদের দায়িত্বশীল নেতারা যে বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন, তা কখনো কাম্য হতে পারে না। কেননা, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার বিচার চলাকালেও এমন হয়েছে এবং তার ফলাফল মামলার রায়ে প্রতিফলিত হয়েছে।

ফখরুল ইসলাম বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার গোটা বিষয়টিকে সরকার প্রতিপক্ষ বিএনপিকে ‘দমন’ ও ‘দুর্বল’ করার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। তিনি বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি আলোচনার মাধ্যমে বিদ্যমান সব সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানকে দেশের স্বার্থে একান্ত প্রয়োজনীয় বলে মনে করে। সরকারের উচিত নতুন সংকট সৃষ্টির পরিবর্তে বিদ্যমান সমস্যাগুলো সমাধানের উদ্দেশ্যে ইতিবাচক উদ্যোগ নেওয়া।

ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ২০০৭ সালে শেখ হাসিনা সাব-জেলে বন্দী থাকার সময় এই মামলার (গ্রেনেড হামলা) পঞ্চম তদন্ত কর্মকর্তা ফজলুল কবির তাঁকে (শেখ হাসিনা) জিজ্ঞেস করলে ১৬১ ধারায় গৃহীত জবানবন্দিতে তিনি (শেখ হাসিনা) কোথাও খালেদা জিয়া কিংবা তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করেননি। এমনকি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মামলার (ভিকটিম) চার্জশিটভুক্ত দুই নম্বর সাক্ষী থাকার পরও তিনি আদালতে আসেননি, সাক্ষ্য দেননি, কোনো কথা বলেননি এবং সহযোগিতাও করেননি। তিনি দাবি করেন, ‘২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার পরপরই বিএনপির পক্ষ থেকে সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি জানানো হয়, উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু শেখ হাসিনা তদন্তকাজে অসহযোগিতা করেন।’

ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত বিতর্কিত কর্মকর্তা আবদুল কাহার আকন্দের পেশকৃত অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনাকে হত্যা করার জন্যই গ্রেনেড হামলা চালানো হয়েছিল। শেখ হাসিনাও ক্রমাগত বলে এসেছেন, এই হামলার ষড়যন্ত্রের জন্য দায়ী খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান। কিন্তু আজ পর্যন্ত শেখ হাসিনা কোনো তদন্ত কর্মকর্তা কিংবা আইনজীবীকে কখনো খালেদা জিয়া কিংবা তারেক রহমান তাঁকে হত্যা করতে চেয়েছেন বলেননি।’ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় তারেক রহমানকে জড়ানোর বিষয়টি রাজনৈতিক ‘প্রতিহিংসা’ ও ‘দুরভিসন্ধিমূলক’ ছাড়া কিছু নয় বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

বিএনপির মহাসচিব অভিযোগ করেন, ‘সরকার বিচার বিভাগকে দিয়ে নিজেদের রাজনৈতিক ইচ্ছা পূরণের অপচেষ্টা করছে। বিচারক নয়, এখন কোন মামলার রায় কী হবে, কবে হবে, তা ঠিক করেন আইনমন্ত্রী।’

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ের পর বিএনপি নেতৃত্ব-সংকটে পড়বে—আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন মন্তব্যের সমালোচনা করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, এই কথার অর্থ হলো তিনি (ওবায়দুল কাদের) জানেন যে কী রায় হতে যাচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বলা এসব বক্তব্যকে কোনো বিচারেই গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার কিংবা আইনের শাসনের পক্ষে বলা যাবে না। একমাত্র স্বৈরতান্ত্রিক রাষ্ট্রেই শুধু এমন ঘটনা সম্ভব।

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব হোসেন, জয়নাল আবেদীন, আইনবিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল, সানাউল্লাহ মিয়া, মিজবাহ প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ারবাজারনিউজ/মু

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.