আজ: শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ইং, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, শনিবার |

kidarkar

শেয়ারবাজার উন্নয়নে সরকারের উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন

শেয়ারবাজার রিপোর্ট: সাপ্তাহিক ব্যবধানে দেশের উভয় পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সেচঞ্জে (সিএসই) সূচকের পতন ঘটেছে। সপ্তাহজুড়ে লেনদেন হওয়া ৫ কার্যদিবসের মধ্যে তিন দিনই কমেছে সূচক। বাকি দুইদিন বাড়লেও এর মাত্র ছিলো সামান্য। এদিকে সূচকের পাশাপাশি কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর। আর টাকার অংকেও গত সপ্তাহে লেনদেনের পরিমান কিছুটা কমেছে। আলোচিত সপ্তাহটিতে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৪ হাজার ৭৮ কোটি ৩০ লাখ ৮৪ হাজার ৯০৩ টাকা।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জানুয়ারি মাসে কিছুটা উত্থান থাকলেও ফেব্রুয়ারির শুরু থেকেই নাজুক অবস্থায় রয়েছে পুঁজিবাজার। যদিও বাজার পরিস্থিতি নাজুক হওয়ার মতো বর্তমানে কোন কারণ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। কিন্তু তারপরও কেন যেন আস্থা পাচ্ছেনা বিনিয়োগকারীরা। কাজেই পুঁজিবাজারকে ভালো করতে হলে সরকারকেই প্রধান ভূমিকা পালন করতে হবে। বিশেষ করে সরকারি ব্যাংকসহ আরও যে প্রতিষ্ঠানগুলো রয়েছে, সেগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা। এছাড়া বেসরকারি ও বহুজাতিক কোম্পানিগুলো আনার ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করতে হবে। যদি এগুলো অন্তর্ভুক্ত করা যায়, তাহলে বাজার সম্প্রসারিত হবে এবং নতুন নতুন বিনিয়োগকারী আসবে। আবার বাজার কীভাবে উন্নয়ন করা যায়, এজন্য পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে স্বচ্ছতায় আনতে হবে। এর জন্য সরকারের উদ্যোগ প্রয়োজন বলেও মনে করছেন তারা।

সাপ্তাহিক বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সপ্তাহশেষে ডিএসই ব্রড ইনডেক্স বা ডিএসইএক্স সূচক কমেছে ১.০৬ শতাংশ বা ৬১.৬৩ পয়েন্ট। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসই-৩০ সূচক কমেছে ১.৩৩ শতাংশ বা ২৭.০১ পয়েন্ট। অপরদিকে শরীয়াহ বা ডিএসইএস সূচক কমেছে ০.৯০ শতাংশ বা ১১.৯৬ পয়েন্ট। আর সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত মোট ৩৫১টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৫৫টি কোম্পানির। আর দর কমেছে ১৭৮টির, অপরিবর্তিত রয়েছে ১৬টির এবং লেনদেন হয়নি ২টির। এগুলোর ওপর ভর করে গত সপ্তাহে লেনদেন মোট ৪ হাজার ৭৮ কোটি ৩০ লাখ ৮৪ হাজার ৯০৩ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। তবে এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ৪ হাজার ১১৯ কোটি ৭৫ লাখ ৩৮ হাজার ৬৫৬ টাকার। সেই হিসাবে সমাপ্ত সপ্তাহে লেনদেন কমেছে ১.০১ শতাংশ।

আর সমাপ্ত সপ্তাহে ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৮৮.৯০ শতাংশ। ‘বি’ ক্যাটাগরির কোম্পানির লেনদেন হয়েছে ৭.৫৬ শতাংশ। ‘এন’ ক্যাটাগরির কোম্পানির লেনদেন হয়েছে ২.৫১ শতাংশ। ‘জেড’ ক্যাটাগরির লেনদেন হয়েছে ১.০৩ শতাংশ।

সপ্তাহ শেষে চট্টগ্রাম স্টক এক্সেচঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএসসিএক্স ১০৭.৫৯ পয়েন্ট বা ১.০০ শতাংশ কমে সপ্তাহ শেষে দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৬৫০ পয়েন্টে। আর সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে হাতবদল হওয়ার ৩০৪টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৪১টি কোম্পানির। আর দর কমেছে ১৪৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৫টির। এগুলোর ওপর ভর করে বিদায়ী সপ্তাহে ১৩৯ কোটি ৭২ লাখ ৯২ হাজার ২৭৮ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।

তারা আরও বলছেন, আইসিবির বিরুদ্ধে অনেক দিন ধরেই অভিযোগ রয়েছে। আইসিবির কাজ হচ্ছে যখন বাজার টানা ঊর্ধ্বগতি বা নিম্নগতি থাকবে তখন সেটিকে নিয়ন্ত্রণ করা। এ জন্যই আইসিবিকে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। কিন্তু আইসিবি কখনই দায়িত্ব অনুযায়ী সেভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারছে না। এ জায়গাটি বিবেচনায় আনতে হবে এবং আইসিবির মতো আরও এক-দুটি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আবার পুঁজিবাজারে যে ইনসাইডার ট্রেডিং বিরাজমান রয়েছে সেটি বন্ধ করতে হবে এবং এতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, ইনসাইডার ট্রেডিংয়ের সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে কোম্পানিগুলোর মালিকরাও জড়িত থাকেন। কাজেই এটি বন্ধ করা গেলে বিনিয়োগকারীর আস্থা ফিরবে বলেও মনে করছেন তারা।

শেয়ারবাজারনিউজ/মু

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.