ফ্যামিলিটেক্সের ডিভিডেন্ড কমার নেপথ্যে
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: মুনাফায় বড় ধরণের পরিবর্তন না আসলেও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার দোহাই দিয়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্রথাতের কোম্পানি ফ্যামিলিটেক্স প্রাপ্য ও যৌক্তিক ডিভিডেন্ড থেকে বঞ্চিত করেছে বিনিয়োগকারীদের।
৩১ ডিসেম্বর ২০১৪ সমাপ্ত অর্থবছরে হিসাব নিরীক্ষা শেষে বিনিয়োগকারীদের জন্য ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। এ বছরের জন্য কোম্পানিটি ১০ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড দেয়ার ঘোষণা দেয়। যেখানে আগের বছরেও কোম্পানিটি ১০০ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড দিয়েছিলো।
আর ডিভিডেন্ড কমে যাওয়ার নেপথ্যে কোম্পানির পক্ষ থেকে দেয়া হচ্ছে গত বছরের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার দোহাই। অথচ কোম্পানির মুনাফা ও শেয়ার সংখ্যার বিচারে আরও বেশি ডিভিডেন্ড দেয়া যেত বলে মনে করছেন বিনিয়োগকারীরা।
পুঁজিবাজারে ২০১৩ সালে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির তালিকাভুক্তির দ্বিতীয় বছরেই ডিভিডেন্ডে নেমে আসে বিশাল ধস। আর এর প্রভাবে কোম্পানিটি রোববার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের লুজারের শীর্ষে নেমে আসে। বাজারে বেশ কিছু কোম্পানি বড় ধরনের চমক দিয়ে যাত্রা শুরু করলেও পরবর্তী সময়ে তা হারিয়ে যায়। এমনকি পরিচালকরা কোম্পানির ভিত্তি ভালো করার কথা বলে রিজার্ভে বিশাল অঙ্কের টাকা জমাতে থাকলেও বিনিয়োগকারীদের ভাগ্যের শিকে আর ছিঁড়ে না। আর বিনিয়োগকারীদের আশঙ্কা ফ্যামিলিটেক্সও হাঁটছে একই পথে।
এ প্রসঙ্গে কোম্পানি সচিব ফয়সাল আহমেদ শেয়ারবাজারনিউজ ডটকমকে বলেন, ‘আপনারা তো জানেন গত বছর রাজনৈতিক পরিস্থিতি কেমন ছিল। এ কারণেই ব্যবসার এমন মন্দ পরিস্থিতি হয়েছে। এ অবস্থা কাটিয়ে এ বছর থেকেই আবার ব্যবসা ভালো হচ্ছে।’
গত বছর ১০০ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড দেয়া কোম্পানির মোট সিকিউরিটিজের পরিমান দাঁড়িয়েছে ২৭ কোটি ৮১ লাখ ২৪ হাজার ৬০০টি। ২০১৪ সালে কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৩.২৮ টাকা। এ হিসেবে কোম্পানির কর প্রদানের পর মুনাফার পরিমান দাঁড়ায় ৯১ কোটি ২২ লাখ টাকার কিছু বেশি। অন্যদিকে ২০১৩ অর্থবছরে কোম্পানির কর প্রদানের পর মুনাফার পরিমান হয়েছিল ৯২ কোটি ১৮ লাখ ২০ হাজার টাকা। কিন্তু প্রায় সমপরিমান মুনাফা হলেও এ বছরে ডিভিডেন্ডে বড় ধরনের পার্থক্য দেখা দিয়েছে।
আর্থিক হিসাবে দেখা যায়, কোম্পানি এ বছর বিনিয়োগকারীদের ১০ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড দিলে কোম্পানির শেয়ার সংখ্যা ২ কোটি ৭৮ লাখ ১২ হাজার ৪৬০ টি বেড়ে মোট ৩০ কোটি ৫৯ লাখ ৩৭ হাজার ৬০টি শেয়ার হবে। কোম্পানির বর্তমান রিজার্ভের পরিমান দাঁড়িয়েছে ২৩ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। আর শেয়ার সংখ্যা বাড়ানোর সাথে সাথে কোম্পানির শেয়ার দরে বড় ধরনের পতন ঘটছে। দুই বছরে কোম্পানির শেয়ার দর ৬৮.৬০ টাকা থেকে নেমে ১৫.৬০ টাকায় নেমে এসেছে।
ডিভিডেন্ড আরও বেশি দেয়ার সুযোগ থাকলেও কেন দেয়া হয়নি এমন প্রশ্নের জবাবে কোম্পানি সচিব জানান, ‘এটা বোর্ডের সিদ্ধান্ত।’ এর বাইরে তিনি আর কিছুই জানাতে রাজি হননি।
শেয়ারবাজারনিউজ/ও/তু