বিএসআরএম লিমিটেড: কমছে মুনাফা বাড়ছে দর
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রকৌশল খাতের ‘এন’ ক্যাটাগরির বিএসআরএম লিমিটেডের শেয়ার দর অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে। আর একারনেই কোম্পানির প্রাইস আনিং (পিই) রেশিও মার্জিন ঋণের নূন্যতম সীমা পার হয়ে গেছে।
জানা যায়, কোম্পানিটি সম্প্রতি প্রথম প্রান্তিক (জানুয়ারি’১৫-মার্চ’১৫) অনিরিক্ষীত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ প্রান্তিকে কোম্পানির মুনাফা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ২৭.৩৮ শতাংশ কমেছে। টাকার অঙ্কে প্রায় ১ কোটি ১১ লাখ ১০ হাজার টাকা। এর পরও বিনিয়োগবারীদের অতি উৎসাহে কোম্পানির শেয়ার দর আস্বাভাবিক হারে বাড়ছে। এ কারণেই বাজারে কোম্পানির পিই রেশিও বাড়ছে।
বিএসআরএমে’র এর বর্তমান পিই রেশিও ১১৪.৮৬। টানা গত ৬ কার্যদিবস এ কোম্পানির শেয়ার দর বাড়ছে।
ডিএসই সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
ডিএসই সূত্রে জানা যায়, গত ২১ মে কোম্পানির শেয়ারের দর ছিল ৫৭.০০ টাকা। রবিবার সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস ৩১ মে কোম্পানির শেয়ার দর বেড়ে সর্বশেষ ৮১.৭০ টাকায় লেনদেন হয়। আলোচিত সময়ের মধ্যেই কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে প্রায় ৪৩.৩৩ শতাংশ বা ২৪.৭০ টাকা।
জানা যায়, এর আগে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পক্ষ থেকে কোম্পানির শেয়ার দর বাড়ার কারণ জানতে চাওয়া হয়। জবাবে বৃহস্পতিবার কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়, কোনো অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই। কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য না থাকা সত্ত্বেও আজ সপ্তাহের প্রথম কার্যদবসে কোম্পানির শেয়ার দর ৮.৩৬ শতাংশ বা ৬.৩০ টাকা বেড়েছে।
মৌলভিত্তি হওয়া সত্ত্বেও শেয়ার দর অতিমূল্যায়িত হয়ে পড়ায় কোম্পানির পিই রেশিও ৪০ এর ওপরে অবস্থান করছে। মার্জিন রুলস, ১৯৯৯ এর আইন অনুযায়ী যেসব কোম্পানির পিই রেশিও ৪০ এর ওপরে অবস্থান করবে সেসব কোম্পানির শেয়ার বিনিয়োগে কোনো মার্জিন সুবিধা পাওয়া যাবে না।
রোববার কোম্পানির শেয়ার দর ৭৪.৫০ টাকা থেকে ৮২.৯০ টাকায় উঠানামা করে সর্বশেষ ৮১.৭০ টাকায় লেনদেন হয়। এদিন কোম্পানির ২১ লাখ ২ হাজার ৩৬৬টি শেয়ার মোট ৪ হাজার ৯৮০ বার হাতবদল হয়, যার বাজার মূল্য দাঁড়ায় ১৬ কোটি ৬৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা। গত এক মাসে এ কোম্পানির সর্বনিম্ন দর ছিল ৪৭.১০ টাকা ও সর্বোচ্চ ৮২.৭০ টাকা।
সদ্য পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া বিএসআরএম লিমিটেডের পরিশোধিত মুলধন ১৭৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। কোম্পানির রিজার্ভে রয়েছে ৬৫৬ কোটি ২ লাখ টাকা। কোম্পানির মোট ১৭ কোটি ৩৩ লাখ ৫১ হাজার ০৩৮ টি শেয়ার রয়েছে। মোট শেয়ারের মধ্যে পরিচালনা পর্ষদের কাছে রয়েছে ৫৮.৪৩ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ১.০১ শতাংশ বিদেশি বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে ৩১.২৮ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে ৯.২৮ শতাংশ শেয়ার।
উল্লেখ্য, ইতিমধ্যে ৪০ এর ওপরে থাকা বেশকিছু কোম্পানির শেয়ার বিনিয়োগে বিনিয়োগকারীদের মার্জিন ঋণ সুবিধা প্রদান করায় কয়েকটি হাউজকে লক্ষাধিক টাকা জরিমানার সম্মুখীন হতে হয়েছে। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) মনে করে পিই রেশিও ৪০ এর উপরে হলে তাতে বিনিয়োগ ঝুঁকিপূর্ন। আর এ কারনে মার্জিন রুলস, ১৯৯৯ অনুযায়ী মার্জিন ঋণের যোগ্যতা হিসেবে পিই রেশিও বেঁধে দেয়া হয়েছে সর্বোচ্চ ৪০ পর্যন্ত।
শেয়ারবাজারনিউজ/মু/ও