শেয়ারবাজার চাঙ্গা হচ্ছে সরকারি উদ্যোগে: গুজবে নয়
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: একেবারেই মৃতপ্রায় বাজার আস্তে আস্তে করে উজ্জিবীত হচ্ছে। বাজার চাঙ্গা বলতে যা বুঝায় তাও হয়েছে গত কয়েক সপ্তাহের বেশ কয়েকটি দিন। ৫০ পয়েন্টেরও বেশী সূচক বাড়ার ঘটনা এখন প্রায়ই ঘটছে। এর পেছনে সরকারের নানা উদ্যোগ কিংবা উদ্যোগ গ্রহণের অভিমত এবং বাজার সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর (ডিএসই, সিএসই, বিএসইসি, আইসিবি, বিএমবিএ, বিবিএ, বিএলসিএ, বিআইএ প্রভৃতি) চেষ্টা তদবির অনেকটা কাজ দিয়েছে বলে অভিমত দিয়েছেন বিশিষ্টজনেরা।
এখানে ভারতীয় মারোয়ারীদের আবারও বাজারে প্রবেশের গুজব কিংবা ইন্ডিয়ান প্রাইম মিনিস্টার শ্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের বেশ কয়েকজন শীর্ষ ব্যবসায়ীর এদেশে ব্যবসা শুরুর গুজবের কোন সম্পর্কই নেই। বরং বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের পিই এবং ইনডেক্স এখন যে পর্যায়ে আছে সেখানে শুধু ইন্ডিয়ানরাই নন বিশ্বের অন্যান্য দেশের শেয়ার ব্যবসায়ীদেরও এ বাজারে প্রবেশের সমূহ সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে বলেই ধারনা ওই বিশিষ্টজনদের। তারা জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতি বাংলাদেশ সরকারের একজন শীর্ষ নীতিনির্ধারকের ধমক এবং পরোক্ষভাবে ২০১০ সালের ধসের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে দায়ী করার বিষয়ে সরকারের মনোভাব সম্পর্কে ব্যাংকটি কিছুটা উপলব্ধি করেছে বলে ধরে নেয়া হয়েছে। সরকারের ওই নীতিনির্ধারক ব্যাংকটিকে পুঁজিবাজারের প্রতি মনোযোগী হতেও পরামর্শ দেন। একই প্রক্রিয়ায় গত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সরকারের বেশ কয়েকজন মন্ত্রী এবং গুরুত্বপূর্ণ উপদেষ্টা শেয়ারবাজার ভালো করার ওপর জোর দিয়েছেন। তাদের এই বক্তব্যের পাশাপাশি দুটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন শেয়ারবাজারকে চাঙ্গায় উদ্ভুদ্ধ করেছে বলেও মনে করছেন বিশিষ্টজনেরা। বিষয় দুটির প্রথমটি- সঞ্চয়পত্রের সুদহার হ্রাস এবং মেয়াদী আমানতের সুদহার হ্রাস। এর একটি গত মে মাসেই কার্যকর হয়েছে এবং অপরটি আজ ১ জুন থেকে কার্যকর হলো। এর পাশাপাশি এবারের বাজেটে সরকারের নেয়া নানান পদক্ষেপের বিষয়গুলো আগাম ফাঁস হয়ে যাওয়াও বাজারকে চাঙ্গার দিকে এগিয়ে দিচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ও বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ড.এ.বি. মির্জা আজিজুল ইসলাম শেয়ারবাজার নিউজ ডটকমকে বলেন, আসলে পৃথিবীর এমন কোনো স্টক এক্সচেঞ্জ নেই যেখানে গুজব ছড়ায় না। তবে মনে রাখতে হবে গুজব গুজবই। যার কোনো ভিত্তি নেই। বর্তমান পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতায় সরকারের বিভিন্ন মহল থেকে জোর প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। গত কয়েক কার্যদিবসের বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা বৃদ্ধি পেয়েছে। দৈনিক লেনদেন ভালোর দিকে যাচ্ছে। বর্তমান বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়ার পেছনে কোনো গুজব কাজ করছে না। কারণ পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির প্রাইস আর্নি (পিই) রেশিও ১৫ এর নিচে রয়েছে । এতে বিনিয়োগযোগ্য অবস্থা তৈরি হয়েছে। এখন বাজারের জন্য নীতিনির্ধারকদের যেকোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে নিতে হবে। বর্তমান বাজার বিনিয়োগ উপযোগী হওয়ায় যে কেউ এখানে আস্থা রেখে দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ করতে পারে বলে জানান তিনি।
শেয়ারবাজারনিউজ/ও.র/সা