কম্পিউটারে সমস্যা হলে যা করবেন
শেয়ারবাজার ডেস্ক: কম্পিউটারে গণ্ডগোল! সমস্যা কোথায়, তা না খতিয়ে শর্টকাট উপায় খোঁজেন অনেকে। কেউ কেউ না বুঝেই নতুন করে উইন্ডোজ ইনস্টল বা রিসেট দিয়ে দেন। বিষয়টা ঠিক নয়। এতে সময় ও অর্থ- দুভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। এ ক্ষেত্রে তড়িঘড়ি না করে মাথা খাটিয়ে সমস্যার মূলে যেতে হবে। এরপর সমস্যা অনুযায়ী সমাধান করতে হবে।
চালু হতে সমস্যা
কম্পিউটার চালু বা বুট হতে সমস্যা হচ্ছে। স্বাভাবিক সময়ের চেয়েও বেশি সময় লাগছে। তা ছাড়া চালু হওয়ার পরপরই ‘এরর’ বার্তা দেখাচ্ছে। এমন সমস্যার জট খুলতে প্রথমেই ‘পাওয়ার অন সেলফ টেস্ট’ (পোস্ট) করে নিন। এর জন্য বায়োস বা সিমোসে ঢুকতে হবে। কম্পিউটার চালু হওয়ার সময় কালো পর্দায় কিছু তথ্য দেখায়। নিচে বায়োসে কাজ করার নির্দেশনা থাকে। সাধারণত কিবোর্ডের উবষবঃব বাটনে চেপে বায়োসে ঢুকতে হয়। যখন ওই কালো পর্দা দেখাবে, ঠিক তখনই এ বাটনে চাপতে হবে। কোনো কোনো মাদারবোর্ডের ক্ষেত্রে বায়োসে যেতে উবষবঃব বাটনের বদলে ঋ২ চাপতে হয়।
সেলফ টেস্ট করার পর কম্পিউটারে যুক্ত থাকা ডিভাইসগুলো ঠিকঠাক কাজ করছে কি না দেখাবে। কোথাও সমস্যা থাকলে তাও দেখাবে। কম্পিউটারে অনেক সময় পেন ড্রাইভ বা এ ধরনের বাড়তি (এক্সটারনাল) ডিভাইস লাগানো থাকে। এসব ডিভাইসে ‘এরর’ পেলে কম্পিউটার চালু হতে সমস্যা হয়। সেলফ টেস্টে কোথায় সমস্যা পেল, এর ওপর নির্ভর করবে পরবর্তী পদক্ষেপ। র্যাম, ডিভিডি রম, হার্ডডিস্ক বা অন্য কোনো ডিভাইসের কানেকশন নড়বড়ে থাকলে তা খুলে ভালো করে লাগিয়ে নিন।
শব্দ শুনে জট খুলুন
কম্পিউটার চালুর সময় বিপ বা এ ধরনের সাংকেতিক আওয়াজ হয়। এ আওয়াজ শুনেই সমস্যা ধরা যায়। যদি একটি ছোট বিপ হয়, তাহলে সব ঠিকঠাক আছে। ছোট দুটি বিপ হলে সমস্যা আছে। কোথায় সমস্যা, তা পর্দায় দেখাবে। আর যদি কোনো বিপ না হয়, তাহলে পাওয়ার সাপ্লাই, মাদারবোর্ড, প্রসেসরে এর কোনো একটির সমস্যা থাকতে পারে। স্পিকার লাগানো থাকলে তা খুলে দেখতে পারেন।
অনবরত বিপ হলে কিবোর্ডে সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। অনেক সময় কিবোর্ডের কোনো বাটন চেপে লেগে থাকতে পারে। কিবোর্ডের লাইন খুলে কম্পিউটার আবার চালু করলে এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
একটি লম্বা বিপ দেওয়ার পর ছোট বিপ- তাহলে ধরে নিতে হবে মাদারবোর্ডে গণ্ডগোল।
গ্রাফিকস বা এজিপি কার্ডে সমস্যা থাকলে একটি লম্বা বিপের সঙ্গে দু-তিনটি ছোট বিপ শোনা যায়।
অটো রিস্টার্ট হচ্ছে?
প্রথমে পাওয়ার সাপ্লাই, কেব্ল্ কানেকশন, পাওয়ার বাটন চেক করুন।
আর যা যা করবেন-
* কিছু কিছু ডিভাইস আছে, যেগুলো না থাকলেও কম্পিউটার চালু করা যায়। যেমন- সিডি/ডিভিডি রম, সাউন্ড কার্ড, টিভি কার্ড, মাউস, কিবোর্ড, স্পিকার ইত্যাদি। এগুলো খুলেই কম্পিউটার চালান। দেখুন, এবারও অটো রিস্টার্ট হচ্ছে কি না। যদি না হয়, তাহলে ধরে নেবেন- যে ডিভাইসগুলো খোলা হয়েছে, সেগুলোর কোনো একটিতে ঝামেলা আছে।
* প্রসেসরের সঙ্গে থাকা কুলিং সিস্টেম ঠিকঠাক কাজ করছে কি না, দেখুন। কাজ না করলে প্রসেসর অল্পতেই গরম হতে পারে। আর এ থেকেও কম্পিউটার নিজে থেকেই রিস্টার্ট হতে পারে।
* পিসিআই স্লট, র্যাম স্লট, গ্রাফিকস কার্ড, সাউন্ড কার্ড কিংবা ইন্টারনাল টিভি কার্ড লাগানো থাকলে তা খুলে পরিষ্কারের পর ভালো করে লাগান।
কাজে গতি নেই!
সাধারণ কাজে গতি নেই। অল্প চাপেই হ্যাং! কম্পিউটারে এমনটি হলে দুটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে- হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার কম্পিউটারে অপ্রয়োজনীয় বা ভারী সফটওয়্যার ইনস্টল, না বুঝে সেটিংস পরিবর্তন, সি ড্রাইভে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকার কারণে এমনটি হতে পারে।
এ ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল মেমোরি বাড়ালে ভালো গতি পাবেন। এর জন্য ডেস্কটপের ‘মাই কম্পিউটার’ আইকনে ডান বাটন ক্লিক করে প্রোপার্টিজে যান। এরপর ‘অ্যাডভান্সড সিস্টেম সেটিংস’-এ ক্লিক করুন। এরপর অ্যাডভান্সড, পারফরমেন্স হয়ে আবার ‘অ্যাডভান্সড’ ট্যাবে ক্লিক করুন। নিচেই পাবেন ভার্চুয়াল মেমোরি বাড়িয়ে নেওয়ার অপশন।
সাময়িক ফাইল মুছে ফেললে কম্পিউটারের ওপর চাপ কমবে। টাস্কবারের স্টার্ট থেকে রানে গিয়ে %ঃবসঢ়% লিখে ‘এন্টার’ চাপুন। সাময়িক ফাইলগুলো দেখতে পাবেন। সব ধরে মুছে ফেলুন। যদি কোনো ফাইল না মুছে, তাহলে ধরে নেবেই ওই মুহূর্তে ফাইলটি রান আছে।
সংযোগ পাচ্ছে না!
কম্পিউটারে পাওয়ার কেব্ল্ লাগানোর পরও সংযোগ পাচ্ছে না। অনেকেই ভেবে বসেন, মাদারবোর্ডে সমস্যা। এটি কেব্ল্ কিংবা অ্যাডাপ্টারের কারণেও হতে পারে। এ ক্ষেত্রে প্রথম কাজ, পাওয়ার কেব্ল্ চেক করা। কেব্লের কোনো অংশে সমস্যা থাকতে পারে। ল্যাপটপের ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে অ্যাডাপ্টারেও। বাড়তি কোনো কেব্ল্ থাকলে লাগিয়ে দেখতে পারেন। এ যাত্রায় উপায় না হলে পাওয়ার সাপ্লাই (ডেস্কটপের ক্ষেত্রে) ঠিক কি না, দেখে নিন।
যদি দেখা যায়, ডেস্কটপের পাওয়ার সাপ্লাইয়ের ফ্যান ঘুরছে, কিন্তু কম্পিউটারের পাওয়ার বাটনে চাপ দিলে চালু হচ্ছে না। তাহলে পাওয়ার সাপ্লাইয়ের তারটি মাদারবোর্ডে লেগে আছে কি না, চেক করতে হবে।
ক্যাসিংয়ের পাওয়ার বাটনে চেপে আমরা কম্পিউটার চালু করি। এ বাটনের সঙ্গে থাকা তারটি আবার মাদারবোর্ডের সঙ্গে গিয়ে মিলেছে। এটি কাজ না করলে কম্পিউটার চালু হবে না।
শেয়ারবাজারনিউজ/অ/মু