আজ: বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ইং, ৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৫ জানুয়ারী ২০১৫, বৃহস্পতিবার |

kidarkar

শর্তপূরণ না করায় লাইসেন্স পাচ্ছেনা তাইও-সামিট

summitশেয়ারবাজার রিপোর্ট : বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ)নির্দেশনা অনুযায়ী পরিচালক ও অংশীদারিত্বের শর্তপূরণ বিষয়ে কোন জবাব দেয়নি জাপান-বাংলাদেশের মালিকানাধীন তাইও-সামিট লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি। এ কারণে কোম্পানিটিকে বাংলাদেশে বীমা ব্যবসা করার লাইসেন্স না দেওয়ার চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইডিআরএ।

এর আগে গতবছর গত বছর ২০১৪ এর অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে কোম্পানিটির জাপানি উদ্যোক্তাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে শর্ত পূরণের জন্য সময় বেঁধে দেয় আইডিআরএ। শর্ত পূরণ না করলে লাইসেন্স পাবে না বলেও উদোক্তাদের জানিয়ে দেয়া হয়।

প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, দেশের একমাত্র দেশি-বিদেশি যৌথ মালিকানার এই জীবন বীমা কোম্পানিটির উদ্যোক্তা বাংলাদেশের সামিট গ্রুপ, আর জাপানের বীমা কোম্পানি তাইও লাইফ। প্রাথমিক আবেদনের ভিত্তিতে অনুমোদন পাওয়ার পর লাইসেন্স পেতে করা আবেদনে পরিশোধিত মূলধন, পরিচালকদের শেয়ার ধারণের হারে পরিবর্তনের পাশাপাশি অংশীদার ও পরিচালক পরিবর্তন করেও নতুন প্রস্তাব দেয় উদ্যোক্তারা।

তাইও-সামিট লাইসেন্স প্রাথমিক আবেদনপত্রে পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ উল্লেখ করে ১৫০ কোটি টাকা। তবে নিবন্ধন সনদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হওয়ার পরেই কোম্পানিটি পরিশোধিত মূলধন প্রস্তাব পরিবর্তন করে মাত্র ৩০ কোটি টাকা।

প্রাথমিক আবেদনপত্রে বলা হয়, পরিশোধিত মূলধনে পরিচালকদের জন্য সংরক্ষিত সর্বোচ্চ ৬০ শতাংশ শেয়ারের ৫৭ শতাংশ জাপানের তাইও কোম্পানির এবং বাকি ৫৩ শতাংশ বাংলাদেশের সামিটগ্রুপের থাকবে। কিন্তু নিবন্ধনের আবেদনে কোম্পানিটির এ প্রস্তাব পরিবর্তন করে শেয়ারের হার তাইও’র প্রস্তাবিত ৫৭ শতাংশ থেকে মাত্র ১৯.৯ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নেয়। অন্যদিকে সামিট গ্রুপের শেয়ার ৩৯ শতাংশ বাড়িয়ে ৮১.১ শতাংশ করা হয়।

অনুমোদনের জন্য করা আবেদনপত্রে জাপানের তাইও কোম্পানি থেকে ৪ জন সদস্য বোর্ডে রাখার কথা থাকলেও নতুন প্রস্তাবে পরিচালনা বোর্ডে তাইও’র কোন সদস্যই রাখতে চাচ্ছে না অপর অংশীদার পক্ষ সামিট গ্রুপ।

এছাড়া কয়েকজন শেয়ারহোল্ডার পরিবর্তন করে নতুন কয়েকজন শেয়ারহোল্ডার নেয়া হয়।

আইডিআরএ’র এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ বিষয়ে শেয়ারবাজার নিউজ ডট কমকে বলেন, ‘শর্ত পূরণ না করায় তাইও-সামিটকে লাইসেন্স দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। লাইসেন্স না দেয়ার সিদ্ধান্তের কথা শিগগিরই উদ্যোক্তাদের জানিয়ে দেয়া হবে। এ বিষয়ে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।’

এদিকে আইডিআরএ থেকে লাইসেন্স পেতে ব্যর্থ হয়ে কোম্পানিটি অর্থমন্ত্রণালয়ে আবেদন করে। বিষয়টির ব্যাখ্যা দিতে আইডিআরএ-কে চিঠি দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। ওই চিঠির জবাবেও শর্তপূরণ না করার বিষয়টি তুলে ধরবে আইডিআরএ নিশ্চিত করে একাধিক সূত্র।

এ বিষয়ে সামিট গ্রুপের একাধিক উর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে জানতে চাইলে তারা এ বিষয়ে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান।

প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের অর্থমন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে জারি করা এক সার্কুলারে বলা হয় দেশি-বিদেশী উদ্যোক্তাদের যৌথমালিকানায় বীমা কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করতে হলে উদ্যোক্তাদের ৬০ শতাংশ পরিশোধিত মূলধনের সর্বোচ্চ ৬০ শতাংশের অংশিদার হতে পারবেন বিদেশী উদ্যোক্তারা। এ ছাড়া বীমাকারির নিবন্ধণ প্রবিধানমালা-২০১৩ এর ২০ ধারা অনুসারে উদ্যোক্তা বা পরিচালকবৃন্দের ধারণকৃত শেয়ার আগামী ৩ বছরের জন্য হস্তান্তর করা যাবে না। পরিচালক বা উদ্যোক্তা হতে শেয়ার ধারণ করতে হবে কমপক্ষে ২% সর্বোচ্চ ১০%। কিন্তু এর কোনটিই পূরণ করতে পারেনি দেশি-বিদেশি যৌথ মালিকানাধীন তাইও-সামিট লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিটি।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.