ঝুঁকিপূর্ণ শেয়ারের তালিকায় ৩৮ কোম্পানি!
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: দেশের পুঁজিবাজার এখন বিনিয়োগ উপযোগী। কারণ বাজারের প্রাইস আর্নিং (পিই) রেশিও এখন অতীতের তুলনায় কম। তারপরও বর্তমানে ৩৮টি কোম্পানির পিই রেশিও অনেক বেশি। যে কারণে এসব কোম্পানি শেয়ার বিনিয়োগের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। পাশাপাশি পিই রেশিও ৪০ এর ওপরে থাকায় এসব কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগে কোনো মার্জিন সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে না। তাই উচ্চ পিই সম্পন্ন কোম্পানিতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) মনে করে পিই রেশিও ৪০ এর উপরে হলে তাতে বিনিয়োগ ঝুঁকিপূর্ন। আর এই কারনে মার্জিন রুলস, ১৯৯৯ অনুযায়ী মার্জিন ঋণের যোগ্যতা হিসেবে পিই রেশিও বেঁধে দেয়া হয়েছে সর্বোচ্চ ৪০ পর্যন্ত। আর যেসব কোম্পানির পিই রেশিও ৪০ এর ওপরে অবস্থান করবে সেসব কোম্পানির শেয়ার বিনিয়োগে কোনো মার্জিন সুবিধা পাওয়া যাবে না। আর পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৩৮টি কোম্পানি রয়েছে যেগুলোর পিই রেশিও ৪০ এর ওপরে অবস্থান করছে।
প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, গত ১১ জুন ২০১৫ তারিখের হিসাব অনুযায়ী ডিএসইতে ঝুঁকিপূর্ণ পিই’র তালিকায় থাকা কোম্পানিগুলোর মধ্যে এসিআই লিমিটেডের পিই ৫৪.৯৮। আর এ কোম্পানির শেয়ার দর বর্তমানে ৫০১.১০ টাকায় লেনদেন হচ্ছে। আলহাজ্ব টেক্সটাইলের পিই রেশিও অবস্থান করেছে ৮০.৮১। এ কোম্পানির শেয়ার ৮৬.৭০ টাকায়।
অ্যাম্বী ফার্মার পিই রেশিও ৮৩.০২ এবং সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ২৫২ টাকায়। আনোয়ার গ্যালভানাইজিংয়ের পিই রেশিও ৫১.৩২ এবং সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ৩৪.৮০ টাকায়। অ্যাপেক্স ফুডসের পিই রেশিও ২৮৬.১১ এবং সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ১০৩ টাকায়।
অ্যাপেক্স ট্যানারির পিই রেশিও ৪৬.২৩ এবং সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ১০০.৫০ টাকায়। বঙ্গজের পিই রেশিও ৫১.৮৭ এবং সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ৩১৫ টাকায়।
বিডি অটোকার্সের পিই রেশিও ৯৪.২৯ এবং সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ১৮ টাকায়। বিকন ফার্মার পিই রেশিও ১৯০.০০ এবং সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ১৫.৩০ টাকায়। বিএসসির পিই রেশিও ১৩৯.৭৬ এবং সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ৩৬৯ টাকায়। বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলসের পিই রেশিও ২১৩.১৩ এবং সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ১৩৬.৯০ টাকায়।
বিএসআরএম লিমিটেডের পিই রেশিও ৯১.৯৪ এবং সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ৬৬.৬০ টাকায়। সিভিও পেট্রো কেমিক্যালের পিই রেশিও ৫১.৯১ এবং সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ৩৬০ টাকায়। দেশবন্ধু পলিমারের পিই রেশিও ৯৫.২৫ পয়েন্টে এবং সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ১২.৭০ টাকায়।
ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টসের পিই রেশিও ১৩৪.৯৬ এবং সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ৩৩৩.৫০ টাকায়। ইস্টার্ন কেবলসের পিই রেশিও ১০০.০০ এবং সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ১২২ টাকায়।
জিকিউ বলপেনের পিই রেশিও ৪৭.২৯ এবং সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ৬৮.১০ টাকায়। হাক্কানি পাল্পের পিই রেশিও ৭০.৯১ এবং সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ২০.৪০ টাকায়। ইসলামিক ফাইন্যান্সের পিই রেশিও ৬৩.০০ এবং সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ১২.৭০ টাকায়। ইনফরমেশন সার্ভিস নেটওয়ার্কের পিই রেশিও ৬১.২৫ এবং সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ৯.৯০ টাকায়। জেএমআই সিরিঞ্জের পিই রেশিও ৬৩.৫৯ এবং সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ১৫৫.৬০ টাকায়। কে অ্যান্ড কিউর পিই রেশিও ৪০.৩৬ এবং সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ১১.৩০ টাকায়।
লাফার্জ সুরমার পিই রেশিও ৫৯.১৫ এবং এর সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ১১৭.২০ টাকায়। লিগ্যাসি ফুটওয়্যারের পিই রেশিও ৯২.০০ এবং এর সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ১৮.৩০ টাকায়। লিবরা ইনফিউশনের পিই রেশিও ১২০.৮৫ পয়েন্টে এবং সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ৩৪১.৬০ টাকায়।
মার্কেন্টাইল ব্যাংকের পিই রেশিও ৬৩.১৩ এবং সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ১০.১০ টাকায়। মডার্ণ ডাইংয়ের পিই রেশিও ৮২.১১ এবং এর সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ৬২ টাকায়। মুন্নু সিরামিকসের পিই রেশিও ১৪১.৮৮ এবং সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ২৩.১০ টাকায়।
মুন্নু জুটের পিই রেশিও ২২৩.৮০ পয়েন্টে এবং সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ২৪৬.৯০ টাকায়। নর্দার্ণ জুটের পিই রেশিও ১১০.৫০ এবং এর সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ২০০ টাকায়। রেনউইক যঞ্জেশরের পিই রেশিও ৬৫.৩০ এবং সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ২৫২ টাকায়। আরএন স্পিনিংয়ের পিই রেশিও ৪৪.৭৭ এবং সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ১৯.৮০ টাকায়। সামিট এলায়েন্স পোর্টের পিই রেশিও ৫৫.৭০ এবং এর সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ৫৫.৫০ টাকায়।
সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজের পিই রেশিও ৪০.৩১ এবং এর সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ২১.৬০ টাকায়। সোনালী আঁশের পিই রেশিও ১১৭.৪৪ এবং সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ৯১.৩০ টাকায়। শাইনপুকুর সিরামিকসের পিই রেশিও ৭৮.৩৩ এবং এর সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ৯.৩০ টাকায়। স্টান্ডার্ড সিরামিকসের পিই রেশিও ৭০.৯৫ পয়েন্টে এবং সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ৩৫.৬০ টাকায়। ওয়েস্টার্ন মেরিনের পিই রেশিও রেশিও ৪৮.৪৮ এবং এর সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ৪৪.৬০ টাকায়।
এ বিষয়ে পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আবু আহমেদ শেয়ারবাজারনিউজ ডটকমকে বলেন, সেকেন্ডারি মার্কেটে বিনিয়োগ করতে হলে কোম্পানির পিই রেশিও দেখে বিনিয়োগ করা উচিত। এতে বিনিয়োগে ঝুঁকি কমবে। তাছাড়া এ বাজারে এমন অনেক কোম্পানি আছে যাদের আয়ের সাথে শেয়ার দরের সামঞ্জস্যতা নেই। অর্থাৎ মুনাফা কম কিন্তু শেয়ার দর বেশি। এসব কোম্পানি বাজারে বিশৃঙ্খলা তৈরি করে। তাই বিএসইসিকে এ বিষয়ে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।
শেয়ারবাজারনিউজ/অ/সা