আজ: শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ইং, ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৭ ডিসেম্বর ২০২০, রবিবার |

kidarkar

কৃষি পণ্যের দেশীয় চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানীর উদ্যোগ

শেয়ারবাজার ডেস্ক: বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ ও কয়েক দফায় বন্যায় বছরজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলো দেশের কৃষি খাত। মহামারি ও এর পরবর্তী সংকট মোকাবিলায় নানাবিধ উদ্যোগ নেয় সরকার। তারই অংশ হিসেবে ২০২০-২১ বাজেটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হয় কৃষি সেক্টরে। চার শতাংশ সুদে সাড়ে ১৯ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা স্কিম হাতে নেয়া হয়। সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপে খাদ্য ঘাটতি মোকাবিলায় কৃষি খাত অনবদ্য নিদর্শন রাখে। বর্তমান সরকারের নেয়া সব পদক্ষেপ সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হলে দেশের খাদ্য চাহিদা পূরণ করে বিদেশেও রপ্তানি করা সম্ভব বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, কোভিড-১৯ মোকাবিলায় সার, বীজ, বালাইনাশক, সেচ ও কৃষি যন্ত্রপাতিসহ কৃষি উপকরণ ও কৃষিপণ্য পরিবহন এবং বিপণন অব্যাহত রাখার উদ্যোগ নেয়া হয়। ২০১৯-২০ রবি মৌসুমে বোরো ফসল দ্রুততম সময়ে ঘরে তোলার জন্য ২ কোটি টাকার ১৭৫২টি কৃষি যন্ত্রপাতি ৫০-৭০ শতাংশ ভর্তুকি মূল্যে বিতরণ করা হয়। আউশের চাষের জন্য ১১ লাখ ৩৪ হাজার হেক্টর থেকে বাড়িয়ে ১৩ লাখ ১২ হাজার হেক্টর করা হয়। ফলে গত অর্থবছর থেকে ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রায় ৭ লাখ মেট্রিক টন আউশ ধান বেশি উৎপাদন হয়।

২০২০-২১ অর্থবছরে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য কমিউনিটিভিত্তিক ধানের চারা উৎপাদন, ভাসমান বেডে চারা উৎপাদন, গম, পেঁয়াজ, মরিচ, মসুর, মাষকালাই, শাকসবজি উৎপাদন কার্যক্রমে বিনামূল্যে চারা, বীজ ও কৃষি উপকরণ সরবরাহের জন্য প্রায় ২৬২ কোটি ৮ লাখ ৭১ টাকা প্রণোদনা দেয়া হয়। বোরো হাইব্রিড ধান উৎপাদন বাড়াতে বিনামূল্যে ৭৬ কোটি ৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা এবং পেঁয়াজ বীজ উৎপাদনের জন্য ২৫ কোটি ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকার প্রণোদনা দেয়া হয়।

স্বল্পসুদে ব্যাংক ঋণ : কোভিড-১৯ মোকাবিলায় বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে ফুল ও ফল চাষ, মৎস্য চাষ, ডেইরি ও পোল্ট্রি খাতে ৪ শতাংশ সুদে ৫ হাজার কোটি টাকার বিশেষ প্রণোদনার স্কিম গঠন করা হয়। এ ছাড়া ফসল খাতে ঋণ বিতরণের জন্য ৯ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ৪ শতাংশ সুদে প্রায় সাড়ে ১৪ হাজার কোটি টাকা কৃষিঋণ দিতে তহবিল গঠন করা হয়। ফলে কৃষি খাতে ৪ শতাংশ সুদে সর্বমোট প্রায় সাড়ে ১৯ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা দেয়া হয়।

পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপন : প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রতি ইঞ্চি জায়গা চাষের আওতায় আনতে ও পারিবারিক পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রায় ৩৭ কোটি ৩৬ লাখ টাকার সহায়তার মাধ্যমে প্রতি ইউনিয়নে (৪৩৯৭টি) ৩২টি করে, মোট ১ লাখ ৪০ হাজার ৩৮৭ টি পরিবারে পুষ্টি বাগান স্থাপন করা হয়।

কয়েক দফা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে প্রায় ১৭ কোটি ৫৪ লাখ টাকার সার, বীজসহ কৃষি উপকরণ পুনর্বাসন কর্মসূচি হিসেবে ২ লাখ ৩৯ হাজার ৬৩১ জন ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের মাঝে বিতরণ করা হয়। এ ছাড়া প্রায় ৭৫ কোটি টাকা ৯ লাখ ২৯ হাজার ১৯৪ জন ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেক কৃষককে গম, সরিষা, চিনাবাদাম, সূর্যমুখী, খেসারি, পেঁয়াজ, মরিচ, টমেটো ইত্যাদি ফসল আবাদের জন্য বিনামূল্যে কৃষি উপকরণ সরবরাহের কাজ চলছে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা : কোভিড-১৯ মোকাবিলায় আপৎকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলায় কৃষি উৎপাদন বাড়ানো চলমান রাখা, কৃষি বিপণন ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের কর্মপরিকল্পনা-২০২০ নেয়া হয়েছে। এ কর্মপরিকল্পনায় স্বল্প (১ বছর), মধ্য (২-৩ বছর) এবং দীর্ঘ (৪-৫ বছর) মেয়াদি মোট ৯৭টি পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। প্রয়োজনীয় কৃষি উপকরণ (বীজ, সার, সেচ) সরবরাহ আরো সহজলভ্য করা, আপৎকালীন পরিস্থিতিতে টেকসই ও লাভজনক কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ ও টমেটোসহ বিভিন্ন সবজি ও ফল উৎপাদন, সংরক্ষণ এবং বাজারজাতকরণে সহযোগিতা, ই-কৃষি (ডিজিটাল) বিপণন চালু করা, সমবায় বিপণনে উৎসাহিত করা, আগামী ৪ বছরের মধ্যে পেঁয়াজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা হওয়ার পরিকল্পনাগ্রহণ, ভর্তুকি মূল্যে কৃষি যন্ত্রাংশ কৃষকের কাছে পৌঁছানো।

 

শেয়ারবাজার নিউজ/মি

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.