উত্তরা ফাইন্যান্সের অনিয়মে বিশেষ নিরীক্ষক করবে বিএসইসি
আতাউর রহমান: শেয়ারবাজারে তালিকাভূক্ত কোম্পানি উত্তরা ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের অনিয়মে আর্থিক হিসাব নিরীক্ষায় বিশেষ নিরীক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। কোম্পানিটির সাম্প্রতিক ঋণ প্রদানে অনিয়মের তথ্য প্রকাশের পর বিএসইসি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সোমবার (১৮ জানুয়ারি) বিএসইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ পরিদর্শনে কোম্পানিটির বড় ধরনের আর্থিক অনিয়ম তথ্য বেরিয়ে এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকেরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া শত শত কোটি টাকার ঋণ নিয়েছেন। আবার ব্যবস্থাপনা পরিচালকও (এমডি) গাড়ি-বাড়ি কিনতে অনুমোদন ছাড়া ঋণ নিয়েছেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে শেয়ারবাজারে তালিকাভূক্ত কোম্পানি হিসেবে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে সত্য উম্মোচনের জন্য বিশেষ নিরীক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি।
এ বিষয়ে বিএসইসির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, উত্তরা ফাইন্যান্সের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম খতিয়ে দেখতে বিশেষ নিরীক্ষক নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এজন্য করপোরেট ফাইন্যান্স বিভাগকে (সিএফডি) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করলেও হঠাৎ ঋণ অনিয়মে জড়িয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে উত্তরা ফাইন্যান্সের বিরুদ্ধে। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, তারা বেশ কিছু লেনদেনের নথিপত্র খুঁজে পায়নি, তাই সেসব লেনদেন নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছে।
উত্তরা ফাইন্যান্সের ২০১৯ সালের আর্থিক প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে, মার্চেন্ট ব্যাংকিং ও শেয়ারবাজারের মার্জিন ঋণের পরিমাণ ছিল ৫৯৭ কোটি টাকা। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, ওই টাকার মধ্যে ৩৫০ কোটি টাকা জমা হয়েছে উত্তরা ফাইন্যান্সের বিভিন্ন পরিচালকের ব্যাংক হিসাবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোনো ধরনের আবেদন, প্রস্তাব বা অনুমোদন ছাড়া পরিচালকদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সরাসরি টাকা ছাড় করা হয়েছে। এর মাধ্যমে আমানতকারীসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হয়েছে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন পরিচালকের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাবে জমা হয় ১ হাজার ২০১ কোটি টাকা। তবে আর্থিক প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে ৩১১ কোটি টাকা।