আজ: শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ইং, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৭ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৫ জানুয়ারী ২০২১, সোমবার |

kidarkar

ডিএসই ও সিএসই’র কাছে ট্রেক বিক্রির পরিকল্পনা চেয়েছে বিএসইসি

আতাউর রহমান: শেয়ারবাজারে মধ্যস্থতাকারী এবং শেয়ার ও ইউনিট কেনা-বেচার জন্য ব্রোকারেজ হাউজ বিক্রি বা ট্রেডিং রাইট এনটাইটেলমেন্ট সার্টিফিকেট (ট্রেক) ইস্যুর বিষয়ে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই-সিএসই) কাছে পরিকল্পনা চেয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এ সংক্রান্ত পরিকল্পনা কমিশনে দাখিল করতে ডিএসই ও সিএসইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রে জানা গেছে। গত বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) বিএসইসির উপ-পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি চিঠি ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে পাঠানো হয়েছে।

বিএসইসির চিঠিতে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জকে ট্রেক ইস্যুর প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে চলতি অর্থবছরে বাকি সময়ের মধ্যে ট্রেক ইস্যু নিয়ে পরিকল্পনাসহ প্রস্তুত করে ১৫ দিনের মধ্যে বিএসইসিতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (ট্রেডিং রাইট এনটাইটেলমেন্ট সার্টিফিকেট) বিধিমালা ২০২০ অনুযায়ী, এক্সচেঞ্জ অর্থবছরের প্রথম মাসের মধ্যে ট্রেক ইস্যুর জন্য বার্ষিক পরিকল্পনা কমিশনে দাখিল করার বিধান রয়েছে। সে অনুযায়ী ডিএসই ও সিএসই কাছে বার্ষিক পরিকল্পনা চেয়েছে বিএসইসি।

তবে এর আগে ট্রেক ইস্যুর জন্য বার্ষিক পরিকল্পনা কমিশনে দাখিল করবে কি-না তা জানতে চেয়েছিল ডিএসই ও সিএসই।

এ বিষয়ে বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ডিএসই ও সিএসইর কাছে নতুন ট্রেক অনুমোদন দেওয়ার বিষয়ে পরিকল্পনা চাওয়া হয়েছে। ট্রেডিং রাইট এনটাইটেলমেন্ট সার্টিফিকেট বিধিমালা অনুযায়ী, উভয় স্টক এক্সচেঞ্জকে প্রতি অর্থবছর শুরুর প্রথম মাসের মধ্যে এ সংক্রান্ত একটি সুনির্দষ্ট পরিকল্পনা বিএসইসে দাখিলের বিধান রয়েছে। তবে বিধিমালাটি যেহেতু গত বছরের নভম্বরে চুড়ান্ত করা হয়েছে, সেহেতু ভাঙা বছরের জন্য পরিকল্পনা চাওয়া হয়েছে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জের কাছে ।’

এদিকে চিঠি পাওয়ার পরপরই ডিএসই ও সিএসই ট্রেক ইস্যুর বিষয়ে পরিকল্পনা তৈরির কাজ শুরু করেছে। পরিকল্পনাটি তৈরি করে পরিচালনা পর্ষদের সম্মতি নিয়ে, তা বিএসইসিতে জমা দেবে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষ। আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যেই ট্রেক ইস্যু বিষয়ক পরিকল্পনা বিএসইসিতে জমা দেওয়া কথা ভাবছে ডিএসই ও সিএসই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসই’র ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) আব্দুল মতিন পাটোয়ারী বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার বিএসইসির চিঠি হাতে পেয়েছি। নতুন ট্রেক অনুমোদন দেওয়ার বিষয়ে আমরা গাইডলাইন তৈরি করছি। ডিএসই ম্যানেজমেন্টের সম্মতি সাপেক্ষে যথা সময়ে তা বিএসইসিতে জমা দেওয়া হবে।’

এদিকে সিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মামুন-উর-রশিদের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিএসইর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘বিএসইসির নির্দেশনা অনুযায়ী নতুন ট্রেক ইস্যুর বিষয়ে আমরা এটি পরিকল্পনা তৈরি করছি। সিএসইর পর্ষদের সম্মতি পেলেই ৩১ জানুয়ারির মধ্যে পরিকল্পনাটি বিএসইসিতে দাখিল করব।’

জানা গেছে, ডিএসইর আপত্তির আলোকে আগের কমিশন ট্রেক বিধিমালা প্রণয়ন সম্পন্ন না করে, পরবর্তী কমিশনের কাছে দিয়ে যায়। এরপর অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিশন ট্রেক বিধিমালা চূড়ান্ত করে গত বছরের ১২ নভেম্বর গেজেট প্রকাশ করে।

ট্রেডিং রাইট এনটাইটেলমেন্ট সার্টিফিকেট বিধিমালায় উল্লেখ রয়েছে, যে কোনো কোম্পানি, সংবিধিবদ্ধ সংস্থা বা কমিশনের অনুমোদিত কোনো প্রতিষ্ঠান স্টক এক্সচেঞ্জের ট্রেক কিনতে পারবেন। এই ট্রেক পাওয়ার জন্য ১ লাখ টাকা ফিসহ এক্সচেঞ্জে আবেদন করতে হবে। আর ১ কোটি টাকা দিতে হবে নিবন্ধন ফি হিসেবে।

বিধিমালায় ট্রেক নেওয়ার জন্য কমপক্ষে ৫ কোটি টাকার পরিশোধিত মূলধন থাকতে হবে। এছাড়া স্টক এক্সচেঞ্জে ৩ কোটি টাকা জামানত দিতে হবে। তবে বিদেশিদের সঙ্গে যৌথভাবে ট্রেক নেওয়ার ক্ষেত্রে পরিশোধিত মূলধন ৮ কোটি টাকা এবং শুধু বিদেশিদের ক্ষেত্রে ১০ কোটি টাকার কথা বলা হয়েছে। আর জামানতের ক্ষেত্রে বিদেশিদের সঙ্গে যৌথভাবে ট্রেক নেওয়ার জন্য ৪ কোটি টাকা এবং শুধু বিদেশিদের জন্য ৫ কোটি টাকার কথা বলা হয়েছে। আর ট্রেকের বার্ষিক ফি হিসেবে ১ লাখ টাকার কথা বলা হয়েছে।

এছাড়া এক্সচেঞ্জ ট্রেক সনদ ইস্যুর লক্ষ্যে ২টি দৈনিক (ইংরেজি ও বাংলা) সংবাদপত্রে ও এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে নতুন ট্রেক ইস্যুর জন্য দরখাস্ত করার বিজ্ঞপ্তি প্রদান করতে হবে। এক্সচেঞ্জ ফরমে উল্লেখিত তথ্যাদির সমর্থনে প্রয়োজনে অতিরিক্ত তথ্যাদি এবং কাগজপত্র দাখিল করতে হবে। এরপরে এক্সচেঞ্জ ট্রেক প্রাপ্তির যোগ্যতা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই-বাছাই করে সন্তুষ্ট হলে ট্রেক ইস্যু করবে। অন্যথায় তা নামঞ্জুর করে জানিয়ে দেবে। এছাড়া কোন ট্রেক যোগ্যতা হারালে বা এই বিধিমালার কোন শর্ত ভঙ্গ করলে, এক্সচেঞ্জ তাহার সনদ বাতিল করতে পারবে।

আবার নিবন্ধন পাওয়ার এক বছরের মধ্যে সিকিউরিটিজ ও এক্সচেঞ্জ কমিশন (স্টক ডিলার, স্টক ব্রোকার ও অনুমোদিত প্রতিনিধি) বিধিমালা ২০০০ অনুযায়ী স্টক-ডিলার বা স্টক-ব্রোকার’র সনদ নিতে হবে। এই সনদ নেয়ার ৬ মাসের মধ্যে ব্যবসা শুরু করতে না পারলে ট্রেক বাতিল হয়ে যাবে।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.