আজ: বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৩ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১০ ফেব্রুয়ারী ২০২১, বুধবার |

kidarkar

দেশে ৭৫ শতাংশ মানুষ টিকা নিতে আগ্রহী, বাড়ানো হচ্ছে টিকা কেন্দ্র

শেয়ারবাাজর ডেস্ক: গণটিকাদানের তৃতীয় দিনে  সারা দেশব্যাপী মানুষের টিকা গ্রহণের আগ্রহ বেড়েছে। এতে টিকা-কেন্দ্রে গ্রহীতাদের উপস্থিতি বেড়েছে। মানুষের আগ্রহ বাড়ায় জনবল বৃদ্ধির পাশাপাশি টিকাদানের বুথও বাড়ানো হয়েছে। চাপ সামলাতে বিভিন্ন বুথে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার সারা দেশে টিকা নিয়েছেন ১ লাখ ১ হাজার ৮২ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ৭৪ হাজার ৫৮৬ জন এবং নারী ২৬ হাজার ৪৯৬ জন। ঢাকা বিভাগে ২৫ হাজার ২২০ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৪ হাজার ৮৫৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২৩ হাজার ৫৪৪ জন, রাজশাহী বিভাগে ১৩ হাজার ১১৪ জন, রংপুর বিভাগে ১০ হাজার ২৩৭ জন, খুলনা বিভাগে ১১ হাজার ৩৭২ জন, বরিশাল বিভাগে ৪ হাজার ১৮১ জন ও সিলেট বিভাগে ৮ হাজার ৫৫৯ জন রয়েছেন। এখন পর্যন্ত মোট টিকা নিয়েছেন ১ লাখ ৭৯ হাজার ৩১৮ জন।

ঢাকার খিলগাঁওয়ের বাসিন্দা নিলুফার আলম টিকা নিতে এসেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে। ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন ষাটোর্ধ্ব এই নারী। কোভিড-১৯ টিকা নেওয়ার পর বিশ্রামাগারে যখন বসেছিলেন, তখন তার সঙ্গে কথা হয়। নিলুফার বলেন, ‘করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার চেয়ে টিকা নেওয়া ভালো। আগে কিছুটা গুজব ছিল, এ কারণে ভয় পাচ্ছিলাম কিছুটা। তবে সবাই টিকা নিচ্ছে দেখে ভয় কেটে গেছে।’ গণটিকাদানের শুরুর দিন থেকেই বিএসএমএমইউর টিকাদান কেন্দ্রে কোভিড-১৯ টিকা দেওয়া চলছে। তবে মঙ্গলবার ছয়টি বুথে ভিড় ছিল প্রথম দুই দিনের চেয়ে বেশি। ঢাকার অন্য টিকাদান কেন্দ্রগুলোতেও ভিড় আগের চেয়ে বেশি দেখা গেছে। তাদের মধ্যে বয়স্ক নাগরিকেরাও রয়েছেন।

স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান বলেন, করোনা ভাইরাসের টিকা নিয়ে প্রথম দিকে কারো কারো মধ্যে ভয় থাকলেও সরকারের দায়িত্ববানেরা টিকা নেওয়ায় ভীতি এখন একেবারেই কেটে গেছে। এখন একটা উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের টিকা কেন্দ্র ঘুরে দেখার পর সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যে ৬ লাখের বেশি মানুষ টিকার জন্য নিবন্ধন করেছে। আমরা চাই মানুষ নিরাপদে এবং আনন্দের সঙ্গে টিকা নেবে।’ সবাইকে নিবন্ধন করে টিকা নিতে আসার আহ্বান জানিয়ে আবদুল মান্নান বলেন, ‘পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন আছে। আরো ভ্যাকসিন আমরা পাচ্ছি বিভিন্ন সোর্স থেকে। যত দিন জনগণ টিকা নিতে চাইবে, টিকার মূল্য যা-ই হোক, প্রধানমন্ত্রী সবাইকে সুরক্ষা দিতে মানসিক ও আর্থিকভাবে প্রস্তুতি নিয়েছেন।’

যে টিকা বাংলাদেশে দেওয়া হচ্ছে, তার প্রতিটি ভায়ালে থাকে ১০টি ডোজ। অর্থাত্, প্রতিটি ভায়াল খোলার পর ১০ জনকে টিকা দেওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে কোনো অপচয় হওয়ার সুযোগ থাকছে কি না, সেই প্রশ্নে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, “যে কোনো ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ ‘ওয়েস্টেজ’ ধরেই হিসাবে করা হয়। তার পরও আমরা বলেছি দশের গুণিতক লোক না আসা পর্যন্ত ভায়াল না খুলতে। তবে আমরা হিসাব করে দেখেছি, অপচয় ১০ শতাংশ এখনো হয়নি।’

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক জানান, এই কেন্দ্রে সোমবার ৫০০ জনকে প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছিল। মঙ্গলবার দুপুরের আগেই সেই সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে।

গতকাল রামপুরা এলাকা থেকে স্ত্রীসহ টিকা নিতে এসেছিলেন অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা আজগর আলী। তিনি বলেন, করোনা ভাইরাস সংক্রমণের চিকিৎসা হিসেবেই টিকা এসেছে। তাই নেওয়া উচিত।

টিকা নিয়েছেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। মঙ্গলবার সকালে হুইলচেয়ারে করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে টিকা নিতে আসেন তিনি। টিকা নেওয়ার পর ৮৬ বছর বয়সি মুহিত বলেন, ‘কিছু তো টেরই পাইলাম না।’ এ সময় তিনি করোনা ভাইরাস থেকে সুরক্ষা পেতে সবাইকে টিকা নেওয়ার আহ্বান জানান।

শেয়ারবাজার নিউজ/মি

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.