বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির বৈঠকে ব্যাংক- আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশ সীমা বৃদ্ধি সহ ৭ সিদ্ধান্ত
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) বৈঠকে ব্যাংক- আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশ সীমা বৃদ্ধি সহ ৭টি বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বিএসইসি সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।
আজ সোমবার আগারগাঁওয়ে সিকিউরিটিজ কমিশন ভবনে প্রতিষ্ঠান দুটির মধ্যে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে শেয়ারবাজারের উন্নয়নে বিএসইসি ও বাংলাদেশ ব্যাংক একসাথে কাজ করার অংশ হিসাবে এ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়।
তথ্য মতে, সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক জারীকৃত ব্যাংকের লভ্যাংশ প্রদানের সর্বোচ্চ সীমা (উতক্ত সা্কুলারের ১ (ক) এ বর্ণিত সিলিং) ৫% বাড়িয়ে ৩০% থেকে ৩৫% করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়ােজনীয় নির্দেশনা জারী করবে। এবং সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক জারীকৃত ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নগদ লভ্যাংশ প্রদানের সর্বোচ্চ সীমার (১৫%) অতিরিক্ত বােনাস শেয়ার সামর্থ্য অনুসারে ইস্যুর ঘােষণা করতে পারবে। বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংক স্পষ্টিকরণ করবে মর্মে সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
আরো আলোচনা হয়েছে যে, তফসিলি ব্যাংকগুলোর ২০০ (দুইশত) কোটি টাকার বিশেষ তহবিল পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ উৎসাহিত করার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন উভয়ই প্রয়ােজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করবে। বিশেষ মিউচ্যুয়াল ফান্ড (এসপিএফ) এ তফসিলি ব্যাংকগুলাের ২০০ (দুইশত) কোটি টাকা বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে ২০১৫ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের জারীকৃত সাকুর্লার এ কিছুটা পরিবর্তন এনে এবং সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (সম্পদ ভিত্তিক বিধিমালা), ২০০৪ এর যুগােপযােগীর মাধ্যমে এসপিডি এর তহবিল সম্পদ ভিত্তিক সিকিউরিটিজ এ বিনিয়ােগের পাশাপাশি অন্যানা ফিক্সড ইনকাম সিকিউরিটিজ যেমন: সুকুক, কর্পোরেট বন্ড, গ্রীণ বন্ড ইত্যাদিতে বিনিয়ােগের সুযােগ সৃষ্টির বিষয়ে নীতিগতভাবে একমত পােষণ করা হয়েছে।
সরকারি ট্রেজারী বিল ও বন্ড স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেনের সুযোগ সুষ্টির মাধ্যমে পুঁজিবাজারের সকল স্তরের বিনিয়ােগকারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসি যৌথভাবে কাজ করবে মর্মে সিন্ধান্ত গৃহীত হয়। পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানসমূহের লভ্যাংশে প্রদানের ক্ষেত্রে কর প্রদান সংক্রান্ত জাতীয় রাজস্ব বাের্ড কর্তৃক জারীকৃত সার্কুলারের কার্যকারিতা বাতিলের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসি এনবিআরকে অনুরােধ জানানাে বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ বিষয়ে উভয় প্রতিষ্ঠান প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
এবং কমিশন কর্তৃক অনুমােদিত Tier-1 Additional Capital হিসেবে ব্যাংকের মাধ্যমে ইস্যুকৃত Perpetual Bond স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্তির মাধ্যমে দ্রুত লেনদেনের প্রয়ােজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এছাড়াও মিউচ্যুয়াল ফান্ডে উদ্যোক্তা হিসেবে ব্যাংকের বিনিয়োগ সংক্রান্ত এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্যাপিটাল মার্কেট এক্সপােজার গণনার ক্ষেত্রে বিনিয়োগকৃত সিকিউটিজের বাজার মূল্যের পরিবর্তে ক্রয় মুল্যের ভিত্তিতে গণনা করার বিষয়ে প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে প্রতিনিধিবৃন্দ কমিশনকে আশ্বস্ত করেছে।
দ্বিপাক্ষিক এ বৈঠকে বিএসইসির পক্ষে চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম, কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ, নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিমসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে একজন নির্বাহী পরিচালকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে শেয়ারবাজারের উন্নয়নে বিএসইসি ও বাংলাদেশ ব্যাংক সমন্বিতভাবে একসঙ্গে কাজ করাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।