আজ: শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ইং, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৬ এপ্রিল ২০২১, মঙ্গলবার |

kidarkar

ফরিদপুরে জনতা-পুলিশ সংঘর্ষ: নিহত ১, চলছে মামলার প্রস্তুতি 

জাতীয় ডেস্ক: ফরিদপুরের সালথায় ভ্রাম‌্যমাণ আদালতের অভিযানকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জুবায়ের হোসেন (১৯) নামে একজন নিহতের ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে। সংঘর্ষ ও নিহতের ঘটনার পর থেকে সালথার ফুকরাবাজার এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করেছে। আজ মঙ্গলবার ফরিদপুরের সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশিকুজ্জামান এই তথ‌্য নিশ্চিত করেন।

পুলিশ জানায়, গতকাল সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে সালথা উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) সঙ্গে থাকা সরকারি কর্মচারীর লাঠিপেটায় এক ব্যক্তির গুরুতর আহত হওয়াকে কেন্দ্র সংঘর্ষ শুর হয়। পরে রাত ১০টার দিকে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে ফরিদপুরের সালথা উপজেলা।

এ সময় ভাঙচুর চালানো হয় সালথা উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন কক্ষে। আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় কমপক্ষে তিনটি কক্ষ। আগুনে পুড়ে গেছে ইউএনও এবং এসিল্যান্ডের দুটি জিপ গাড়ি। এছাড়া, উপজেলা চত্বরে থাকা পাঁচটি মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়া হয়। হামলাকারীরা উপজেলা চত্বরে অবস্থিত উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা চেয়ারম্যানের বাসভবনেও হামলা করে নির্বিচারে ভাঙচুর চালায়। হামলাকারীরা উপজেলা চত্বরের বিভিন্ন অফিস ভাঙচুরের পাশাপাশি উপজেলা চত্বরের পাশে থানায়ও হামলা করে। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা অফিস, উপজেলা ভূমি অফিস ভাঙচুর করে। এসময় দফায় দফায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় বিক্ষুব্ধ কয়েক হাজার মানুষ।

ওসি বলেন, ‘এই ঘটনায় উপজেলার রামকান্তপুর গ্রামের জুবায়ের হোসেন (১৯ ) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ থেকে অতিরিক্ত পুলিশ, র‌্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। এ সময় তারা উত্তেজিত জনতাকে সরিয়ে দিতে শটগানের ৬০০ রাউন্ড বুলেট, ৩২ রাউন্ড কাদানে গ্যাস, ৭০ রাউন্ড রাইফেলের গুলি ও ২২টি সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। পাঁচ ঘণ্টাব্যাপী এই সংঘর্ষের সময় র‌্যাব-পুলিশের ৭ সদস্যসহ শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন।’

ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান বলেন, ‘লকডাউনের প্রথম দিনে সরকারি নির্দেশনা পালন করতে গিয়ে স্থানীয় জনতার সঙ্গে কর্মকর্তাদের ভুল-বোঝাবুঝি হয়। কথা-কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়ে স্থানীয়রা। তারা উপজেলা পরিষদ, থানা, উপজেলা চেয়ারম্যানের বাসভবনসহ বিভিন্ন অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষার্থে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’

এ ব্যাপারে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মারুফা সুলতানা হীরামনি বলেন, ‘লকডাউন কার্যকর হচ্ছে কি না, তা দেখার জন্য ফুকরা বাজারে যাই। এ সময় স্থানীয়রা আমার গাড়ি ধাওয়া করলে বিষয়টি পুলিশকে জানাই। এরপর স্থানীয়রা থানা ঘেরাও করে তাণ্ডব চালায়। তবে আমরা কোনো সহকর্মী কাউকে আঘাত করেননি।’ তিনি আরও বলেন, ‘স্থানীয় একজন হুজুরকে মেরে ফেলা হয়েছে এই গুজব ছড়িয়ে গ্রামবাসীকে একত্রিত করে এই হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করা হয়।’

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, ‘এটি পুলিশের সঙ্গে হামলাকারীদের সংঘর্ষ।’ এখানে সরকারি কর্মকর্তারা জড়িত নন বলেও তিনি জানান।

 

 

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.