আজ: শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ইং, ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২১ এপ্রিল ২০২১, বুধবার |

kidarkar

কোভ্যাক্স-এর মাধ্যমে টিকা পাচ্ছে বাংলাদেশ

শেয়ারবাজার ডেস্ক: মহামারি করোনাভাইরাসের টিকা পাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জন্য আরও একটি সুখবর পাওয়া গেছে। টিকা সরবরাহের বৈশ্বিক জোট কোভ্যাক্স-এর মাধ্যমে চাহিদা অনুযায়ী টিকা পাবে বাংলাদেশ। গত রবিবার (১৮ এপ্রিল) সংস্থাটির পক্ষ থেকে চিঠি দিয়ে বাংলাদেশের কী পরিমাণ টিকা প্রয়োজন, তা জানতে চাওয়া হয়।

আগামী শনিবারের মধ্যে টিকার চাহিদার তথ্য সংস্থাটিকে জানাতে বলা হয়েছে। চিঠি পাওয়ার পর থেকে কাজ শুরু করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। কোভ্যাক্স থেকে কোন প্রক্রিয়ায় টিকা পাওয়া যাবে এবং কতো দিনের মধ্যে টিকা আসবে, তা নিয়েও পর্যালোচনা শুরু হয়েছে।

কোভ্যাক্স-এর টিকা দেওয়ার বিষয়টি ইতিবাচক হিসাবে দেখছে স্বাস্থ্য বিভাগ। শুধু ভারতের সেরাম কিংবা কোভ্যাক্স-এর ওপর নির্ভরশীল না থেকে বিকল্প উৎস থেকেও টিকা সংগ্রহের জন্য চেষ্টা শুরু করেছে সরকার। ইতোমধ্যে তিন দেশের পাঁচটি টিকার বিষয়ে পর্যালোচনাও হচ্ছে। এর মধ্যে এক-দুইটি টিকা বিকল্প উৎস হিসেবে হাতে রাখতে আগ্রহী সরকার।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনস অ্যান্ড ইমিউনাইজেশনস-গ্যাভির সমন্বয়ে গড়ে উঠে কভিড-১৯ ভ্যাকসিনস গ্লোবাল অ্যাকসেস ফ্যাসিলিটি (কোভ্যাক্স)। এর আগে কোভ্যাক্স থেকে দেশের মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশকে টিকা দেওয়ার কথা বলা হয়। সেই হিসাবে ছয় কোটি ৮০ লাখ ডোজ পাওয়ার কথা রয়েছে। এর মধ্যে মে মাসের মধ্যে এক কোটি ৯ লাখ ডোজ পাওয়ার কথা ছিলো, কিন্তু এখনও কোনো টিকা পাওয়া যায়নি। এরই মধ্যে কোভ্যাক্স থেকে আবারও চিঠি দিয়ে টিকার চাহিদার কথা জানতে চাওয়া হলো।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেছেন, কোভ্যাক্স আগে বলেছিলো, দেশের মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশ টিকা আমাদের দেবে। প্রথমে বলা হয়েছিলো, ওই টিকার দাম পড়বে দুই ডলারের নিচে। পরে জানানো হয়, ওই ২০ শতাংশ টিকা বিনামূল্যে পাওয়া যাবে। কিন্তু ২০ শতাংশের বাইরে কোনো টিকার প্রয়োজন হলে এবং তা কোভ্যাক্স থেকে নেওয়া হলে সেগুলোর প্রতি ডোজের দাম পড়বে সাত ডলার করে।
মহাপরিচালক আরও বলেন, কোভ্যাক্স থেকে চিঠি পাওয়ার পর মন্ত্রণালয়সহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বিষয়টি পর্যালোচনা করার জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আমাদের কী পরিমাণ টিকা লাগবে, তা নিরূপণ করে তিনি কোভ্যাক্স-এর চিঠি জবাব দেবেন।

অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, দেশে মোট সাড়ে ১৩ কোটি মানুষকে টিকার আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ভারতের সেরাম থেকে তিন কোটি ডোজ কেনার চুক্তি হয়েছে। এই টিকা দেড় কোটি মানুষকে দেওয়া সম্ভব হবে। কোভ্যাক্স থেকে মোট জনগোষ্ঠীর ২০ শতাংশ অর্থাৎ ছয় কোটি ৮০ লাখ ডোজ টিকা পাওয়া যাবে। এতে করে তিন কোটি ৪০ লাখ মানুষ টিকার আওতায় আসবে। এর মাধ্যমে মোট চার কোটি ৮০ লাখ মানুষের টিকা নিশ্চিত হলো। এছাড়া বিকল্প উৎস থেকেও টিকা সংগ্রহের চেষ্টা চলছে।

টিকার বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, কোভ্যাক্স থেকে ছয় কোটি ৮০ লাখ ডোজ টিকা আসার কথা রয়েছে। আগামী মে মাসের মধ্যে এক কোটি ৯ লাখ ডোজ টিকা পাওয়ার কথা ছিলো। সেরাম ইনস্টিটিউট কোভ্যাক্স-এ টিকা দেওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু ভারত সরকারের রফতানি নিষেধাজ্ঞার কারণে কোভ্যাক্স টিকা পায়নি। এই কারণে বাংলাদেশেও প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী টিকা দিতে পারেনি কোভ্যাক্স। আবার বাংলাদেশও চুক্তি অনুযায়ী সেরাম থেকে টিকা পায়নি। একটি মাত্র উৎসের ওপর নির্ভরশীল না থেকে বিকল্প উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে একটি অথবা দুটি উৎস থেকে টিকা পাওয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন মন্ত্রী।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.