পিএসজিকে হারিয়ে ৫১ বছর পর ফাইনালে সিটি
স্পোর্টস ডেস্ক: নেইমার – মারিয়াদের বিপক্ষে ক্লিনশিট রেখে ২-০ ব্যবধানে জিতেই মাঠ ছাড়ল ফোডেন-মাহরেজরা। দুই লেগ মিলিয়ে ৪-১ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে ইউরোপের কোনো ক্লাব টুর্নামেন্টের ফাইনালে চলে গেল সিটি।
প্যারিসেই অর্ধেক কাজটা সেরে এসেছিল ম্যানচেস্টার সিটি। অ্যাওয়ে ম্যাচে প্যারিস সেন্ট জার্মেইনকে (পিএসজি) ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে ইউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালের জন্য এক পা দিয়ে রেখেছিল পেপ গার্দিওলার শিষ্যরা। ঘরের মাঠ ইতিহাদে তাই হিসেবটা সহজ ছিল। এমবাপেহীন পিএসজিকে আটকে দেয়া।
শুধু আটকেই দিল না ম্যানচেস্টার সিটি, নেইমার-মারিয়াদের বিপক্ষে ক্লিনশিট রেখে ২-০ ব্যবধানে জিতেই মাঠ ছাড়ল ফোডেন-মাহরেজরা। দুই লেগ মিলিয়ে ৪-১ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে ইউরোপের সর্বোচ্চ ক্লাব টুর্নামেন্টের ফাইনালে চলে গেল সিটি।
এ জয়ে ফাইনাল ৫১ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটল ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের দলটির। প্রায় অর্ধশতাব্দীর বিরতির পর ইউরোপীয়ান ক্লাব টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠল দলটি। আর চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসে প্রথমবার।
একই সঙ্গে ১০ বছর পর এই টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠেছেন পেপ গার্দিওলা।
গতবারের ফাইনালিস্টদের দায়িত্ব নিয়ে পিএসজিকে কোয়ার্টার ফাইনাল পর্বে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন বায়ার্ন মিউনিখকে হারিয়ে সেমিতে তোলে মাউরিসিও পচেত্তিনো। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের টাইটেল প্রত্যাশীদের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে প্রথম লেগে হারার পর দ্বিতীয় লেগে বড় পরীক্ষা নিয়ে মাঠে নামে ফ্রান্সের চ্যাম্পিয়নরা। জয়ের কোনো বিকল্প নেই।
প্রথম থেকেই তাই পচেত্তিনোর কৌশল অনুযায়ী আক্রমণে আর বল দখলে এগিয়ে ছিল পিএসজি। তবে এমবাপে ছাড়া সেই কৌশল যেন বারবার হোঁচট খেয়েছে সিটির ডিফেন্সে। পিএসজির এমন অল আউট ফুটবলের ফায়দা নিতে এতোটুকু ভুল করেনি সিটি।
দুটি গোলই এসেছে পাল্টা আক্রমণে। প্রথমটি ১২ মিনিটে। ডি-বক্সের ভেতর থেকে নেয়া ডি ব্রুইনের শট পিএসজির ডিফেন্সে লেগে চলে যায় ডান প্রান্তে ফাঁকায় থাকা রিয়াদ করিম মেহরাজ। গোলকিপার কাইলর নাভাসের পায়ের তল দিয়ে বুলেট শটে দুর্দান্ত গোল করেন এই আলজেরিয়ান ফরোয়ার্ড। প্রথম লেগেও একটি গোল করেছিলেন মেহরাজ।
প্রথমার্ধে এক গোলের লিড নিয়ে বিরতিতে যায় সিটি।
বিরতিতে ফিরে একই চিত্র। বল দখলে এগিয়ে নেইমার-ভারেত্তিরা। কমতি যে ছিল, সেই এমবাপে ইনজুরিতে বেঞ্চ গরম করছেন। এবারও পাল্টা আক্রমণের দারুণ ছক কার্যকর করে ব্যবধান দ্বিগুণ করে সিটি।
ম্যাচের ৬৩ মিনিটে একেবারে নিজেদের বক্ত থেকে পাল্টা আক্রমণটা সাঁজায় সিটি। ওয়ান টু ওয়ানে দারুণ ফুটবল উপহার দেয় ফোডেন-ডি-ব্রুইন জুটি। ডি-বক্সের ঠিক আগে ব্রুইনের বুদ্ধিদীপ্ত পাসটা একেবারে মেহরাজের সামনে তুলে দেন ফোডেন। সিক্স ইয়ার্ডের ভেতরে আনমার্ক থাকা মেহরাজ শুধু আলতো টোকায় জালে জড়ান। ফেইক ডাইভ দেয়া ছাড়া কোনো জবাবও ছিল না নাভাসের।
পিএসজির ফেরার যা সুযোগ ছিল সেটাও প্রায় শেষ হয়ে যায় ম্যাচের ৬৯ মিনিটে। লাল কার্ড দেখে ডি মারিয়া মাঠ ছাড়লে ১০ জনে পরিণত হয় পচেত্তিনোর শিষ্যরা।
এরপরে আর ফেরা হয়নি পিএসজির। উল্টো ৭৭ মিনিটে ফিল ফোডেনের শট পোস্টে লেগে ফিরে না আসলে ব্যবধান আরও বড় করত সিটি। শেষ পর্যন্ত জয় নিয়ে ফাইনালের টিকিট কেটে মাঠ ছাড়ে সিটি। আর আরেকবার হতাশা নিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে বিদায় নেয় নেইমাররা।
ফাইনালে তুরস্কের পথ নিশ্চিত করেছে সিটিবাসিরা। ২৯ মে ফাইনালে তাদের সঙ্গী হতে পারে চেলসি বা রিয়াল মাদ্রিদ। আগামীকাল বুধবার চ্যাম্পিয়নস লিগের দ্বিতীয় সেমিতে দুই লেগ মিলিয়ে জয়ীরাই সঙ্গী হবে সিটির।
প্রথম লেগে ঘরের মাঠে চেলসির সঙ্গে ১-১ ব্যবধানে ড্র করেছিল জিনেদিন জিদানের রিয়াল মাদ্রিদ।