আজ: শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ইং, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৭ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৬ মে ২০২১, বুধবার |

kidarkar

স্মলক্যাপ কোম্পানি বাজারমুখি করতে তৎপর বিএসইসি

শেয়ারবাজার রিপোর্ট: এসএমই বা স্মলক্যাপ কোম্পানিগুলোকে দেশের শেয়ারবাজারমুখি করতে চায় নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এ জন্য বাজারে কতোজন কোটিপতি বিনিয়োগকারী রয়েছেন সম্প্রতি তার একটি তালিকা করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

জানা গেছে, দেশের শেয়ারবাজার থেকে বড় কোম্পানিগুলো অর্থ সংগ্রহের মাধ্যমে ব্যবসার পরিধি বাড়ানোর সুযোগ পেলেও সব সময় ‘অবহেলিত’ ছিলো ছোট কোম্পানি বা স্মলক্যাপ কোম্পানিগুলো। এসব কোম্পানি ব্যবসার পরিধি বাড়াতে চাইলেও বাজার থেকে টাকা সংগ্রহের কোনো সুযোগ পেত না। ফলে ব্যাংক বা ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দারস্ত হতে হতো। এতে বিপুল অংকের টাকা চলে যেত ঋণের সুদ হিসেবে। তাই ছোট কোম্পানিগুলো বাজার থেকে টাকা সংগ্রহ করে যেন ব্যবসার পরিধি বাড়াতে পারে এ জন্য ২০১৬ সালের অক্টোবরে কোয়ালিফাইড ইনভেস্টরস অফার বা কিউআইও পদ্ধতি চালু করে বিএসইসি। এই পদ্ধতির মাধ্যমে ছোট কোম্পানিগুলো (যাদের পরিশোধিত মূলধন ৩০ কোটির কম) বাজার থেকে অর্থ উত্তোলন করতে পারবে। তবে সব বিনিয়োগকারী কিউআইওতে  অংশ নিতে পারবে না। কিউআইওতে অংশ নিতে হলে শেয়ারবাজারে অন্তত এককোটি টাকা বিনিয়োগ থাকতে হবে।

শেয়ারবাজারে কতোজন কোটিপতি বিনিয়োগকারী রয়েছেন তার সঠিক পরিসংখ্যান  থাকলেও তা আলোচনায় ছিলো না। ফলে স্মলক্যাপ কোম্পানি বাজারে এসে বিনিয়োগ পাবে কিনা তা নিয়ে কিছুটা দোটানায় ভোগেন অনেক উদ্যোক্তা। আর উদ্যোক্তাদের এই দ্বিধা দূর করতে কোটিপতি বিনিয়োগকারীর তালিকা করেছে বিএসইসি। সংশ্লিষ্ট সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

সূত্র মতে, দেশের শেয়ারবাজারে বর্তমানে বিনিয়োগকারী রয়েছেন মোট ২৬ লাখ ৫৯ হাজার ৮০৩ জন। এর মধ্যে কোটিপতি বিনিয়োগকারী রয়েছে ২৩ হাজার ২১০ জন। সম্প্রতি বেনিফিসিয়ারি ওনার (বিও) তথ্য পর্যালোচনা করে বিএসইসি এই সংখ্যা বের করেছে।

তালিকা অনুযায়ী, এক কোটি টাকা থেকে দুই কোটি টাকা বিনিয়োগ রয়েছে এমন বিও হিসাব রয়েছে ৮ হাজার ৮০০টি। দুই থেকে তিন কোটি টাকা বিনিয়োগ রয়েছে ৪ হাজার ৮০০ জনের।
তিন থেকে চার কোটি টাকা বিনিয়োগ আছে তিন হাজার ৪১০ জনের। চার থেকে পাঁচ কোটি টাকা বিনিয়োগ রয়েছে দুই হাজার ৭০০ জনের। পাঁচ কোটি থেকে ১০ কোটি টাকা বিনিয়োগ আছে দুই হাজার ২৫০ জনের দশ কোটি থেকে উপরে বিনিয়োগ রয়েছে এমন বিনিয়োগকারী রয়েছেন এক হাজার ২৫০ জন।

জানা গেছে, ২০১৬ সালে কিউআইও পদ্ধতি চালু হলেও গত সাড়ে চার বছরে মাত্র একটি  কোম্পানি বাজারে আসার অনুমোদন পেয়েছে।  সেটাও চলতি বছরের এপ্রিলে। বিএসইসির ৭৭০তম কমিশনে প্রথম স্বল্প মূলধনি কোম্পানি হিসেবে অনুমোদন পায় চট্টগ্রাম ভিত্তিক কোম্পানি নিয়্যালকো এলোয়েস লিমিটেড। চলতি মাসের ১৬ থেকে ২০ তারিখ পর্যন্ত কোম্পানিটি যোগ্য বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে আবেদনগ্রহণ করে। এতে আবেদন করেছে ৩০৯ জন।

এক কোটি টাকার বিনিয়োগকারী ছাড়াও যোগ্য বিনিয়োগকারী বা কিউআইওতে কারা বিনিয়োগ করতে পারবে তার গাইডলাইন দিয়েছে বিএসইসি। সে অনুযায়ী ব্যাংক,আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বীমা, মার্চেন্ট ব্যাংকার, পোর্টফোলিও ম্যানেজার, অ্যাসেট ম্যানেজার ও তাদের পরিচালিত মিউচ্যুয়াল ফান্ড, স্টক ডিলার, অলটারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড ও ফান্ডের ম্যানেজার, অনুমোদিত পেনশন ও প্রভিডেন্ট ফান্ড, ইতিমধ্যে বিনিয়োগ করা বৈদেশিক বিনিয়োগকারী এবং কমিশন অনুমোদিত বিনিয়োগকারীরা যোগ্য বিনিয়োগকারী বলে বিবেচিত হবে।

কোটিপতি বিনিয়োগকারীদের বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম গণমাধ্যমে বলেন, স্মলক্যাপ প্লাটফর্মকে গতিশীল করতে চায় বিএসইসি। এর মাধ্যমে ছোট উদ্যোক্তারা শেয়ারবাজার থেকে টাকা সংগ্রহ করতে পারবে। কোটিপতি বিনিয়োগকারীরা যোগ্য বিনিয়োগকারীদের সাথে স্মলক্যাপ প্লাটফর্মে অংশ নিতে পারবে। তবে ইলেকট্রনিক সাবসক্রিপশনস সিস্টেমে (ইএসএস) নিবন্ধন থাকতে হবে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ বা ডিএসইর একটি সূত্র জানিয়েছে, ইএসএস নিবন্ধন করেছে প্রায় এক হাজার চারশত যোগ্য বিনিয়োগকারী।

উল্লেখ্য, কোয়ালিফাইড ইনভেস্টরস অফার বা কিউআইও হলো- স্বল্প মূলধনি কোম্পানির (যার পরিশোধিত মূলধন ৩০ কোটি টাকার কম) প্রাথমিক শেয়ার বিক্রির প্রক্রিয়া।

৩০ কোটি টাকার বেশি মূলধনি কোম্পানির প্রাথমিক শেয়ার বিক্রির প্রক্রিয়ার নাম ইনিশিয়াল পাবলিক অফার বা আইপিও।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.