আজ: শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ইং, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০১ জুন ২০২১, মঙ্গলবার |

kidarkar

বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল ক্যাপাসিটির ভবিষ্যৎ চাহিদা পূরণে বিএসসিসিএলের আরো ১৬০০ জিবিপিএস ক্যাপাসিটি লাইট আপকরণ, দেশের তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপন সংক্রান্ত কার্যক্রমের অগ্রগতি, বিএসসিসিএলের সার্বিক ব্যান্ডউইডথ ক্যাপাসিটি বৃদ্ধি সংক্রান্ত কর্ম পরিকল্পনা ও সৌদি টেলিকম কোম্পানিসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের নিকট বিএসসিসিএল-এর উদ্বৃত্ত ক্যাপাসিটি ট্রান্সফার সংক্রান্ত তথ্য অবহিতকরণ প্রসঙ্গে

শেয়ারবাজার ডেস্ক: সম্প্রতি দেশের কিছু প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় নিকট ভবিষ্যতে SMW-6 সাবমেরিন ক্যাবল চালু হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত বাংলাদেশে সাবমেরিন ক্যাবল ব্যান্ডউইডথ ক্যাপাসিটির ঘাটতি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে মর্মে উল্লেখকরতঃ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে, যা বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল)-এর দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে এতদ্বারা সংশ্লিষ্ট সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, সরকারি মালিকানাধীন দায়িত্বশীল কোম্পানি হিসেবে বাংলাদেশের সাবমেরিন ক্যাবল ক্যাপাসিটির চাহিদা পূরণে বিএসসিসিএল সদা সচেষ্ট রয়েছে এবং চলমান প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে দেশের সম্ভাব্য ভবিষ্যত ক্যাপাসিটির চাহিদা প্রক্ষেপণপূর্বক তা পূরণের নিমিত্ত নিয়মিতভাবে যথাযথ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করছে।

২০২২খ্রি. নাগাদ আরো ১,৬০০ জিবিপিএস সাবমেরিন ক্যাবল ব্যান্ডউইডথ ক্যাপাসিটি লাইট আপকরণ সংক্রান্তঃ

উল্লিখিত কর্মপরিকল্পনার অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে বিএসসিসিএল কুয়াকাটাস্থ SEA-ME-WE-5 (SMW-5) সাবমেরিন ক্যাবল সিস্টেমের Light Up#3 (LU#3) প্রোগ্রামের আওতায় সিঙ্গাপুর-কুয়াকাটা রুটে আরো ৯০০ জিবিপিএস ক্যাপাসিটি লাইট আপকরণের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, যা আগামী জানুয়ারি, ২০২২খ্রি. নাগাদ চালু হবে মর্মে আশা করা যাচ্ছে। যার ফলে জানুয়ারি, ২০২২খ্রি. নাগাদ SMW-5 সাবমেরিন ক্যাবল সিস্টেমের সিঙ্গাপুর-কুয়াকাটা রুটে বর্তমান লাইট আপকৃত ক্যাপাসিটি ১,২০০ জিবিপিএস হতে বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয়ে ২,১০০ জিবিপিএস-এ উন্নীত হবে এবং কুয়াকাটা-মার্সেই (ফ্রান্স) রুটে ইতোমধ্যে লাইট আপকৃত ১০০ জিবিপিএস ক্যাপাসিটিসহ উক্ত সময়ে SMW-5 সাবমেরিন ক্যাবল সিস্টেমে বিএসসিসিএল-এর মোট লাইট আপকৃত ক্যাপাসিটির পরিমাণ দাঁড়াবে ২,২০০ জিবিপিএস।

একই সাথে দেশের ক্রমবর্ধমান সাবমেরিন ক্যাবল ক্যাপাসিটির চাহিদা পূরণার্থে কক্সবাজারে স্থাপিত দেশের অপর সাবমেরিন ক্যাবল SMW-4 এর পরবর্তী আপগ্রেড (Upgrade#6) প্রোগ্রামের আওতায় বিএসসিসিএল আরো ৭০০ জিবিপিএস ক্যাপাসিটি বৃদ্ধির প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য SMW-4 কনসোর্টিয়ামকে অনুরোধ জানিয়েছে। এ বিষয়ে SMW-4 কনসোর্টিয়াম কাজ শুরু করেছে এবং আশা করা যাচ্ছে যে, ২০২২খ্রি. এর মাঝামাঝি নাগাদ এই ক্যাপাসিটি চালু করা সম্ভব হবে। উক্ত আপগ্রেড প্রক্রিয়া সমাপ্ত হলে SMW-4 সাবমেরিন ক্যাবলে বিএসসিসিএল-এর বর্তমান মোট ক্যাপাসিটি ৬০০ জিবিপিএস হতে বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয়ে ১,৩০০ জিবিপিএস-এ উন্নীত হবে। উপরোক্ত বিবেচনায় ২০২২ সাল নাগাদ SMW-4 ও SMW-5 ক্যাবলদ্বয়ে আরো ১,৬০০ জিবিপিএস ক্যাপাসিটি লাইট আপ সম্পন্ন হওয়ার পর দেশের মোট লাইট আপকৃত সাবমেরিন ক্যাবল ক্যাপাসিটি প্রায় ৩,৫০০ জিবিপিএস-এ উন্নীত হবে।

বিএসসিসিএলের সার্বিক ব্যান্ডউইডথ ক্যাপাসিটি বৃদ্ধি সংক্রান্ত কর্ম পরিকল্পনাঃ

এছাড়াও SMW-5 সাবমেরিন ক্যাবলে ভবিষ্যতে আরো ক্যাপাসিটি আপগ্রেডেশন করার সুযোগ রয়েছে এবং প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় এই ক্যাবলের মাধ্যমে ভবিষ্যতে আরো বেশী ক্যাপাসিটি চালু করা সম্ভব হবে। প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ্য যে, SMW-5 সাবমেরিন ক্যাবলের পশ্চিম প্রান্তে (ইউরোপের দিকে) এবং বাংলাদেশ-শ্রীলংকা-সিঙ্গাপুর রুটেও যথেষ্ট পরিমাণ ক্যাপাসিটি লাইট আপ করার সুযোগ রয়েছে। ২০২২ সালে দেশের সিঙ্গাপুর অভিমুখী ব্যান্ডউইডথের চাহিদা ও চাহিদা বৃদ্ধির প্রবণতা পর্যালোচনা করে প্রয়োজন অনুভূত হলে অত্যন্ত কম সময়ের মধ্যেই বিএসসিসিএল SMW-5 সাবমেরিন ক্যাবলে বাংলাদেশ-শ্রীলংকা-সিঙ্গাপুর রুটে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ক্যাপাসিটি লাইট আপ করতে সক্ষম হবে।

দেশের তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল SMW-6 কনসোর্টিয়াম-এর অগ্রগতি সংক্রান্তঃ

সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার ২০১৮ এর আলোকে দেশের তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপনের জন্য ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অনুমোদনক্রমে নতুন একটি সাবমেরিন ক্যাবল কনসোর্টিয়াম South East Asia-Middle East-Western Europe-6 (SEA-ME-WE-6)-এ যোগদানের নিমিত্ত গত ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯খ্রি. তারিখে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা হয়। পরবর্তীতে এ বিষয়ক একটি প্রকল্প গত ০১/১২/২০২০খ্রি. তারিখে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় অনুমোদিত হয়েছে। প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল জানুয়ারি ২০২১খ্রি. হতে জুন ২০২৪খ্রি. পর্যন্ত। SEA-ME-WE-6 কনসোর্টিয়াম কর্তৃক সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপনের জন্য সরবরাহকারী নির্ধারণের কাজ কনসোর্টিয়ামের আওতায় করা হচ্ছে এবং ইতোমধ্যে দরপত্র প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কনসোর্টিয়াম কর্তৃক Preferred Supplier নির্ধারণ করা হয়েছে। Preferred Supplier-এর সাথে কারিগরী ও আর্থিক বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনাপূর্বক চুক্তি চূড়ান্তকরণের কাজ চলমান রয়েছে। আশা করা যাচ্ছে যে, জুলাই ২০২১খ্রি. মাসের মধ্যে SMW-6 সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপনের জন্য SMW-6 কনসোর্টিয়ামের সকল সদস্যগণের মধ্যে Construction & Maintenance Agreement (C&MA) চুক্তিসহ Supplier-এর সাথে চুক্তি স্বাক্ষরকরণ ও উল্লিখিত সাবমেরিন ক্যাবলটি স্থাপনের কাজ শুরু করা সম্ভব হবে। আশা করা যাচ্ছে যে, ২০২৪ সালের মাঝামাঝি নাগাদ দেশ তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবলে সংযুক্ত হতে পারবে। এই ক্যাবলের মাধ্যমে পূর্ব ও পশ্চিম উভয় প্রান্তে আলাদা আলাদাভাবে কমপক্ষে আরো ৬,০০০ জিবিপিএস সাবমেরিন ক্যাবল ক্যাপাসিটি বিএসসিসিএলের মোট ক্যাপাসিটির সাথে যুক্ত হবে।

সৌদি টেলিকম কোম্পানিসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের নিকট বিএসসিসিএল-এর উদ্বৃত্ত ক্যাপাসিটি ট্রান্সফার সংক্রান্তঃ

বর্তমানে দেশের অভ্যন্তরে বিএসসিসিএল-এর মোট ব্যান্ডউইডথ ব্যবহার প্রায় ১,৫৬৪ জিবিপিএস, যার প্রায় ৯৫% পূর্ব দিক তথা সিঙ্গাপুর অভিমুখী। এ প্রেক্ষিতে পশ্চিম প্রান্তে অর্থাৎ ইউরোপ অংশের অব্যবহৃত বিপুল পরিমাণ ব্যান্ডউইডথ ক্যাপাসিটি হতে ভবিষ্যতে বাংলাদেশে ব্যবহারের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ সংরক্ষিত রেখে উদ্বৃত্ত ক্যাপাসিটি আন্তর্জাতিক বাজারে আগ্রহী রাষ্ট্র/প্রতিষ্ঠানের নিকট দীর্ঘমেয়াদী লীজ প্রদান/ট্রান্সফারের মাধ্যমে বৈদেশিক মূদ্রা আয়ের লক্ষ্যে বিএসসিসিএল সচেষ্ট রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় বিএসসিসিএল সম্প্রতি SMW-5 সিস্টেমের কোর ক্যাবলের পশ্চিম অংশে বিএসসিসিএল-এর জন্য বরাদ্দকৃত মোট ক্যাপাসিটি (বর্তমানে ২৩.৭×১০০ জিবিপিএস) হতে সৌদি আরবের Yanbu থেকে ফ্রান্সের Marseille PoP পর্যন্ত ২৫.৩১% ক্যাপাসিটি (বর্তমান ৬×১০০ জিবিপিএস, যা ডিজাইন ক্যাপাসিটি পরিবর্তনের সাথে পরিবর্তনশীল) এককালীন ৩.৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্য এবং ট্রান্সফার পরবর্তী সময়ে উল্লিখিত ক্যাপাসিটির জন্য প্রযোজ্য চালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় গ্রাহক কর্তৃক বহনের শর্তে সৌদি টেলিকম কোম্পানি (STC)-এর নিকট ট্রান্সফারের নিমিত্ত চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। তাছাড়াও পশ্চিম প্রান্তে অর্থাৎ ইউরোপ অংশে বিএসসিসিএল-এর অব্যবহৃত ক্যাপাসিটি হতে দীর্ঘমেয়াদী ক্যাপাসিটি লীজ গ্রহণ/ট্রান্সফারের জন্য বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান আগ্রহ প্রকাশ করেছে, যা বর্তমানে বিএসসিসিএলের সক্রিয় বিবেচনায় রয়েছে। দেশের অভ্যন্তরে চাহিদা না থাকায় উপরোক্ত ইউরোপ অংশের অব্যবহৃত ব্যান্ডউইডথ ক্যাপাসিটি লীজ/ট্রান্সফার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হলে একদিকে যেমন দেশের ভবিষ্যৎ ব্যান্ডউইডথ ক্যাপাসিটির চাহিদা পূরণে কোন অসুবিধা হবে না অন্যদিকে বিএসসিসিএল কর্তৃক উল্লেখযোগ্য পরিমাণ এককালীন বৈদেশিক মূদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে। এছাড়াও এক্ষেত্রে লীজ/ট্রান্সফারকৃত ক্যাপাসিটির পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় গ্রাহক কর্তৃক বহন করায় এ বাবদ বিএসসিসিএল তথা দেশের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বৈদেশিক মূদ্রা সাশ্রয় করা সম্ভব হবে এবং এর ফলে বিএসসিসিএল-এর রাজস্ব ও মুনাফা নিকট ভবিষ্যতে আরো বৃদ্ধি পাবে মর্মে আশা করা যায়।

সার্বিক বিবেচনায় বিএসসিসিএল প্রত্যাশা করে যে, SMW-6 সাবমেরিন ক্যাবল চালু হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত দেশে যে সাবমেরিন ক্যাবল ক্যাপাসিটির চাহিদা থাকবে তা বর্তমান দুইটি সাবমেরিন ক্যাবলের (SMW-4 ও SMW-5) বিভিন্ন আপগ্রেডেশন হতে প্রাপ্ত ক্যাপাসিটির মাধ্যমে পূরণ করা সম্ভব হবে এবং ভবিষ্যতে দেশে সাবমেরিন ক্যাবল ক্যাপাসিটির চাহিদা পূরণে কোনো সংকট সৃষ্টি হবে না। একই সাথে বিএসসিসিএল আরো আশা করে যে, উপরোক্ত তথ্যের ভিত্তিতে নিকট ভবিষ্যতে SMW-6 সাবমেরিন ক্যাবল চালু হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত দেশে সাবমেরিন ক্যাবল ব্যান্ডউইডথ ক্যাপাসিটির ঘাটতি হওয়ার সম্ভবনার বিষয়ে কয়েকটি মিডিয়ায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে বিভিন্ন মহলে সৃষ্ট উদ্বেগ দূরীভূত হবে।

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

 

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.