মহামারি থেকে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের প্রস্তাব নেই বাজেটে: সিপিডি
বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জাতীয় সংসদে ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপনের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ভার্চুয়ালি এই অভিমত তুলে ধরেন প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।
আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ২০ শতাংশ ধরা বাস্তবোচিত হয়নি বলে অভিমত দিয়েছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি।
২০২০-২১ অর্থবছরের প্রবৃদ্ধির দেখানো হয়েছে ৬ দশমিক ১০ শতাংশ। আর এবছর বলা হচ্ছে, জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ২০ শতাংশ। সিপিডি বলছে- অর্থনীতির অন্যান্য যেসব সূচক তুলনায় এটা একটু বেশি। এই প্রবৃদ্ধি বাস্তবায়নের সম্ভাবনা খুব কম। এটা আসলে বাস্তবোচিত না এবং পূরণ হবে না।’
ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘বাজেট প্রস্তাবে রাজস্ব আয়, ব্যয় এবং বিনিয়োগ ইত্যাদির যে কাঠামো দেয়া হয়েছে, তা বাস্তবসম্মত হয়নি। রাজস্ব কাঠামোতে বড় ধরনের তেমন পরিবর্তন নেই। প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ৩০ শতাংশ বাড়াতে হবে। এটাও অনেকটা বেশি।’
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘এই বাজেট প্রস্তাবে কর ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। আয়করের সীমা ওপরের দিকে বাড়ানো হয়নি। সীমা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে, একইভাবে নিচের দিকের। নিচের দিকে আয়করের সীমা আর একটু বাড়ালে ভোগ ব্যয় বাড়তো। তা বিনিয়োগে সহায়তা করতে পারতো। অর্থাৎ পুনরুদ্ধারে সহায়তা করতে পারতো।’
এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘ সরকারি ব্যয়ের এক-তৃতীয়াংশ জনপ্রশাসনে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। পাবলিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও একটা বর্ধিত বরাদ্দ দেখা যাচ্ছে। বরাদ্দকৃত খাতের মধ্যে স্বাস্থ্য খাতকে বেশি প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যখাতের মূল বিষয় এখন টিকাদান। করোনা থেকে মুক্তি না পেলে অর্থনীতিতে চাঞ্চল্য ফিরে আসবে না। তাই টিকাদান কর্মসূচি সবার জন্য, যারা যোগ্য সবাইকে টিকা দিতে হবে।’
ফাহমিদা বলেন, ‘টিকাদানের জন্য বাজেটে ১০ হাজার কোটি টাকা পর্যাপ্ত নয়। বাজেটে স্বাস্থ্যখাতের বরাদ্দ গত বছরের মতোই রাখা হয়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে স্বাস্থ্যখাতের বরাদ্দ জিডিপির দশমকি ৮৩ শতাংশ ছিল। এ বছরেও দশমিক ৮৩ শতাংশ রয়েছে।’
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘সামাজিক নিরাপত্তা খাতে সামান্য কিছু ভাতা ও বরাদ্দ বেড়েছে। কিন্তু সেখানে আগের মতোই সরকারি কর্মচারীদের পেনশন রয়েছে। এখানে পেনশন যতটা বেড়েছে, সামাজিক নিরাপত্তার আসল যে অংশ সেখানে নিট ততটা বাড়েনি। সুতরাং এখানে বরাদ্দ আরও বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।’
বাজেটের বিদেশি ঋণকে সমর্থন করে তিনি বলেন, ‘প্রস্তাবে বিদেশি ঋণের কথা বলা হয়েছে। এটা ভালো হয়েছে। রাজস্ব আহরণের ক্ষেত্রে যেসব নীতিমালা করা হয়েছে, সেখানে ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে নয় প্রতিষ্ঠানকে লক্ষ্য করে করা হয়েছে। এটাও ইতিবাচক। একইসঙ্গে এসএমইকে স্বল্পসুদে ঋণ দেয়া হবে, এটাকে আমরা সমর্থন করছি।’