আজ: শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ইং, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৭ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৫ জুন ২০২১, শনিবার |

kidarkar

বাজেট: শেয়ারবাজারের জন্য কী আছে, কী চাই

শেয়ারবাজার রিপোর্ট: ২০২১-২০২২ অর্থবছরের জন্য অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেছেন। এই বাজেটকে ব্যবসাবান্ধব বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট অনেকেই। অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ সেক্টর শেয়ারবাজার নিয়ে বাজেটে সরাসরি কিছু বলা না হলেও করপোরেট কর আড়াই শতাংশ কমানো হয়েছে। তবে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও মার্চেন্ট ব্যাংক এই সুবিধা পাবে না। কারণ, তাদের করের বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে কর দিতে হয় ৪০ শতাংশ পর্যন্ত।

শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা বাজেটকে ইতিবাচক বললেও মার্চেন্ট ব্যাংকের করপোরেট করের কোনো পরিবর্তন না করায় হতাশাও প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, চলতি অর্থবছরের মতো সাড়ে ৩৭ শতাংশ কর বহাল না রেখে তা কমানো দরকার ছিলো।

বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি ছায়েদুর রহমান বলেন, মার্চেন্ট ব্যাংকের গতিশীলতার জন্য প্রণোদনা প্রয়োজন। করোনার সময় শেয়ারবাজার ভালো ছিল না। ফলে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোকেও তখন লোকসান গুনতে হয়েছে। বাজেটে মার্চেন্ট ব্যাংকের করপোরেট করের কোনো পরিবর্তন করা হয়নি। চলতি অর্থবছরের মতো সাড়ে ৩৭ শতাংশ বহাল রাখা হয়েছে। এটা কমানো হলে শেয়ারবাজার আরও গতি পেতো।

তবে ২০২১-২২ সালে প্রস্তাবিত বাজেটে করপোরেট কর পরিবর্তন করা না হলেও, চূড়ান্ত বাজেটে কমবে বলে আশা প্রকাশ করেন ছায়েদুর রহমান। তিনি বলেন, এটি পুনর্বিবেচনা করা উচিত।

উল্লেখ্য, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী হিসেবে শেয়ারবাজারে কার্যক্রম পরিচালনা করে মার্চেন্ট ব্যাংক। বর্তমানে শেয়ারবাজারে ৬৩টি মার্চেন্ট ব্যাংক কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

এদিকে ৫ শতাংশ কর দিয়ে শর্তবিহীনভাবে পুঁজিবাজারে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের দাবিও করেছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

বিষয়টি নিয়ে এএফসি ক্যাপিটাল লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুব এইচ মজুমদার বলেন, বর্তমানে যে প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে মহামারি করোনার কথা বিবেচনা করে এর থেকে আর ভালো বাজেট হতে পারে না। আমরা এখনো আশা করছি ৩০ জুন যখন বাজেট ফাইনাল হবে তখন যেন এটা খেয়াল রাখা হয়। অপরদিকে আনডিসক্লোজ মানি বা যেটাকে সবাই অপ্রদর্শিত টাকা বলে, আমি বুঝিনা কেন এটাকে অপ্রদর্শিত টাকা বলে। দেশের সম্পদ কখনো কালো হতে পারে না। যারা অর্জন করে তারা কালো হতে পারে, পথটা কালো হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, সেই আনডিসক্লোজ মানি যেন ক্যাপিটাল মার্কেটে কোনো শর্ত ছাড়া ৫ শতাংশ হারে বিনিয়োগ করার সুযোগ দেওয়া হয়। যেহেতু বাজেটটা এখনো প্রস্তাবিত সেহেতু আমরা আশা করবও মাননীয় অর্থমন্ত্রী ব্যাপারটা বুঝবেন। দেশের প্রবৃদ্ধির খাতিরে এবং দেশের প্রবৃদ্ধির অর্থনীতিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য অবশ্যই যে আনডিসক্লোস মানি সেটাকে ৫ শতাংশ হারে ক্যাপিটাল মার্কেটে বিনিয়োগ করার সুযোগ দিতে হবে।

তিনি বলেন, বর্তমান সিচুয়েশনে অর্গানাইজেশনগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। অর্গানাইজেশন যদি বাঁচে তবেই কর্মসংস্থান তৈরি হবে, বিনিয়োগ হবে। অর্গানাইজেশন থাকলেই উৎপাদন হবে, উৎপাদন বাড়বে এবং দেশে প্রবৃদ্ধি হবে। কাজেই করপোরেট ট্যাক্স যেগুলো কমানো হয়েছে একদম যথোপযুক্ত হয়েছে।

মাহবুব এইচ মজুমদার বলেন, ক্যাপিটাল মার্কেটে লিস্টেড কোম্পানিগুলো আর নন লিস্টেড এর সাথে ট্যাক্সের যে ডিফারেনশিয়ার ট্রেড সেটা কমপক্ষে ১৫ শতাংশ হওয়া উচিত। যদি তা না হয় কেউ নতুন করে কোম্পানি লিস্টেড হতে চাইবে না।

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, লিস্টেড কোম্পানির ট্যাক্স দেওয়ার হার নন লিস্টেড থেকে অনেকগুণ বেশি। দুই একটা কেস স্টাডি করে দেখা যেতে পারে। কারণ, লিস্টেড কোম্পানির অ্যাকাউন্টস আর যে সিস্টেম সবগুলো ১০০% ট্রান্সপারেন্ট বা শতভাগ স্বচ্ছ। অপরদিরকে নন লিস্টেড কোম্পানি ইচ্ছা করলেই কিন্তু তার অ্যাকাউন্টস বা তার ট্যাক্স ১০০% অস্বচ্ছ করতে পারে। সেইজন্য আমরা ট্যাক্স এবং ভ্যাটের যে ডিফারেন্সিয়াল রেটটা চাচ্ছিলাম সেটা আমরা বলছিলাম কমপক্ষে ১৫ শতাংশ ডিফারেন্ট হয়। সেটা কিন্তু এখনো হয় নাই।

১ টি মতামত “বাজেট: শেয়ারবাজারের জন্য কী আছে, কী চাই”

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.