আজ: বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ইং, ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৬ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৪ জুলাই ২০২১, রবিবার |

kidarkar

মেসি-জাদুতে কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনা

স্পোর্টস ডেস্ক: ম্যাচের শুরুটা মোটেও মনমতো হয়নি লিওনেল মেসির। তবে শেষটা যেভাবে করেছেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক, তাতে মোটেও খেদ থাকার কথা নয় মনে। দুটো গোলের যোগান দিলেন, শেষে করলেন ফ্রি কিক থেকে চমৎকার এক গোল। তাতে আর্জেন্টিনা ইকুয়েডরকে হারিয়েছে ৩-০ গোলে। পৌঁছে গেছে কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালেও।

চলতি কোপা আমেরিকায় মেসি আর ডি পল একে অপরকে পাস দিয়েছেন ৫৩টা, এত বেশি পাস আদান-প্রদান হয়নি আর আর্জেন্টাইন আর কারো মাঝেই। তবে কোথায় একটা কমতি ছিল যেন, দুজনের কেউই কারো গোলে যোগান দেননি এতদিন। সে অপূর্ণতাটা ঘুচেছে আজ। ৪০ মিনিটে মেসির পাস থেকেই গোলটা করেন ডি পল। তাতেই এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা।

এর আগে প্রথমার্ধে একগাদা গোলের সুযোগ নষ্ট করেছে আর্জেন্টিনা। সবচেয়ে সহজটা নষ্ট করেছিলেন মেসি। ২২ মিনিটে ইকুয়েডরের একটা ব্যাকপাস পেয়ে গিয়েছিলেন ফাঁকাতেই। সামনে ছিলেন শুধু গোলরক্ষক। তাকে পরাস্তও করেছিলেন। কিন্তু আর্জেন্টাইন অধিনায়কের শট গিয়ে প্রতিহত হয় গোলপোস্টে।

এর আগে লাওতারো মার্টিনেজ পেয়েছেন দুটো সুযোগ। একটায় শট করেছিলেন গোলরক্ষক বরাবর, অন্যটা ঠিকঠাক আয়ত্বেই আনতে পারেননি তিনি। বিরতির আগে আরও একটা সুযোগ পেয়েছিল আর্জেন্টিনা। কিন্তু মেসির করা ফ্রি কিক থেকে প্রথমে দারুণ এক হেড দিয়েছিলেন নিকোলাস গঞ্জালেস, প্রথম দফায় তা রুখে দেন ইকুয়েডর গোলরক্ষক। ফিরতি সুযোগে তার শটও রুখে দেন ইকুয়েডর গোলরক্ষক। ফলে এক গোলের সন্তুষ্টি নিয়ে বিরতিতে যেতে হয় আলবিসেলেস্তেদের।

বিরতির পর শুরুতে বেশ চাপেই ছিল কোচ লিওনেল স্ক্যালোনির দল। মুহুর্মুহু আক্রমণে ইকুয়েডর সমতা ফেরানোর চোখরাঙানি দিচ্ছিল চলতি আসরের না হওয়া স্বাগতিকদের। পরিস্থিতি ভোজবাজির মতো বদলে গেল ৭১ মিনিটে, কোচের এক সিদ্ধান্তে। নিকো গঞ্জালেসের জায়গায় এলেন নিকলাস টালিয়াফিকো, আর পারেদেসের বদলে এলেন গিদো রদ্রিগেজ, ডি মারিয়া এলেন জিওভানি লো চেলসোর জায়গায়।

এক গোলের লিড ধরে রাখতে কিছুটা রক্ষণাত্মক কৌশলে চলে গিয়েছিল আর্জেন্টিনা, সুযোগ এলে উঠছিল দ্রুত প্রতি আক্রমণে। তিনটে সতেজ পা তাতে আর্জেন্টিনার আক্রমণে প্রাণ সঞ্চার করেছে, সঙ্গে মজবুত হয়েছে দলের প্রেসিংও। ৮০ মিনিটে দ্বিতীয় গোলের সাক্ষাৎও এল সেই প্রেসিং থেকেই। রক্ষণ থেকে গুছিয়ে আক্রমণের লক্ষ্যে গোলরক্ষকের কাছে বল ফেরত পাঠিয়েছিল ইকুয়েডর। কিন্তু মেসি আর ডি মারিয়ার দারুণ প্রেসিংয়ের কাছে বিপদজনক জায়গায় বল হারায় দলটি। মেসির পা থেকে এরপর বলটা যায় লাওতারো মার্টিনেজের কাছে, জোরালো শটে গোল করে আর্জেন্টিনাকে স্বস্তি এনে দেন ইন্টার মিলান স্ট্রাইকার।

ম্যাচজুড়ে দারুণ দুটো গোলের যোগান দিয়েছিলেন, কিন্তু গোলটা না পেলে কোথায় যেন অপূর্ণতা থেকে যেত মেসির পারফর্ম্যান্সে। সেই প্রাপ্য গোলটাও এল ৯০ মিনিটে। প্রতি আক্রমণে বল নিয়ে উঠে ফাউলের শিকার হয়েছিলেন ডি মারিয়া। বক্সের কাছাকাছি হওয়ায় রেফারি প্রথমে পেনাল্টিই দিয়ে বসেছিলেন। পরে ভিএআর দেখে এসে পরিবর্তন করেন সে সিদ্ধান্ত। তবে তাতে মেসির গোল আটকে থাকেনি। বক্সের একটু সামনে থেকে তার আগুনে ফ্রি কিকের কোনো জবাবই ছিল না ইকুয়েডর গোলরক্ষকের কাছে। তার এ গোলেই ৩-০ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে আলবিসেলেস্তেরা। জোড়া অ্যাসিস্ট, আর এক গোল, ম্যাচসেরা না হওয়ার কোনো কারণই ছিল না মেসির।

এই ম্যাচের পারফর্ম্যান্সের ফলে কোপা আমেরিকার সর্বোচ্চ গোলদাতা তো বটেই, সর্বোচ্চ যোগানদাতার তালিকাতেও শীর্ষে উঠে এসেছেন মেসি। এ ম্যাচ শেষে গোল আর অ্যাসিস্ট, দুই খাতাতেই ৪টি করে গোল জমা হয়েছে ছয়বারের ব্যালন ডি’অর জয়ীর।

সেমিফাইনালে এবার মেসিদের প্রতিপক্ষ কলম্বিয়া, যারা দিনের শুরুর ম্যাচে পেনাল্টি শুটআউটে উরুগুয়েকে বিদায় করে এসেছে শেষ চারে। আগামী বুধবার সকাল সাতটায় যে ম্যাচে মুখোমুখি হবে দুই দল।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.