আজ: মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১০ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১২ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৮ জুলাই ২০২১, বৃহস্পতিবার |

kidarkar

‘ডিজিটাল সাবমিশন অ্যান্ড ডেসিমিনেশন প্লাটফর্ম অব ডিএসই’ শীর্ষক সফটওয়্যার উদ্বোধন

শেয়ারবাজার ডেস্ক: ২০১৯ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত এসিআই লিমিটেডের লোকসানের পরিবর্তে মুনাফার তথ্য প্রকাশ করে বসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষ। যে ভুলে লোকসান গুণতে হয় বিনিয়োগকারীদেরকে। এর দায়ে বরখাস্তও করা হয় ডিএসইর সংশ্লিষ্ট মার্কেট অপারেশন্স ডিপার্টমেন্টের প্রধান সায়িদ মাহমুদ জুবায়েরকে। যে ভুল থেকে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় সব তথ্য অফিসে বসেই প্রকাশের গুরুত্বপূর্ণ সফটওয়্যার তৈরী করল ডিএসই কর্তৃপক্ষ।

বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) ‘ডিজিটাল সাবমিশন অ্যান্ড ডেসিমিনেশন প্লাটফর্ম অব ডিএসই’ শীর্ষক সফটওয়্যারটি উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ।

২০১৯ সালে এসিআইয়ের (জুলাই’১৯-সেপ্টেম্বর’১৯) প্রথম প্রান্তিকে শেয়ার প্রতি ৫.৯৯ টাকা লোকসান হলেও ডিএসইর ওয়েবসাইটে শেয়ার প্রতি মুনাফা হিসেবে ৫.১৯ টাকা মুনাফা দেখানো হয়। এই খবরে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়ে যায়। কিন্তু পরবর্তীতে প্রকৃত খবর প্রকাশের পরে শেয়ার দর কমে যায়। এতে লোকসান গুণতে হয় বিনিয়োগকারীদেরকে। এর দায়ে বরখাস্ত করা হয় ডিএসইর সংশ্লিষ্ট মার্কেট অপারেশন্স ডিপার্টমেন্টের প্রধান সায়িদ মাহমুদ জুবায়েরকে।

এই সমস্যা কাটিয়ে তুলতে সফটওয়্যার তৈরীর উদ্যোগ নেয় ডিএসই। এ বিষয়ে আজকে অনুষ্ঠানে ডিএসইর প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা (সিটিও) জিয়াউল করিম বলেন, এসিআইয়ের ভুলের দায়ে সায়িদ মাহমুদ জুবায়েরকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। ওই ভুলের পরে আজকের সফটওয়্যারটি তৈরীর উদ্যোগ নেওয়া হয়। আসলে কিছু ভুল থেকে অনেক সময় ভালো কিছুও হয়। যা আজকের সফটওয়্যার উদ্বোধনের মাধ্যমে প্রমাণিত। যেখানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন এসিআইয়ের ভুলে শাস্তি পাওয়া সায়িদ মাহমুদ জুবায়ের নিজেও।

ডিএসইর এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে তালিকাভুক্ত কোম্পানি কর্তৃপক্ষ অফিসে বসেই মূল্য সংবেদনশীল তথ্য (পিএসআই), আর্থিক হিসাব, উদ্যোক্তা/পরিচালকদের শেয়ারধারন, ফ্রি ফ্লোট শেয়ার, শেয়ার গিফটসহ প্রয়োজনীয় সব তথ্য ডিএসইর সফটওয়্যারের মাধ্যমে জমা দিতে পারবে। যা ডিএসইর যাচাই শেষে অনুমোদনের পরে সবার জন্য প্রকাশ করা হবে। এছাড়া সফটওয়্যারে কোম্পানিগুলোর সব তথ্য আর্কাইভ আকারে জমা থাকবে।

বর্তমানে কোম্পানিগুলো ডিএসইতে তথ্য প্রকাশের পরে তা লেখার পরে প্রকাশ করা হয়। এছাড়া কোম্পানির জমা দেওয়া বড় তথ্য ব্যবহার উপযোগী করে স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে ছোট আকারে প্রকাশ করতে হয়। এক্ষেত্রে জনবল লাগে এবং সময়ের দরকার পড়ে। কিন্তু ভবিষ্যতে কোম্পানির সংখ্যা যখন অনেক হয়ে যাবে, তখন এভাবে সঠিকসময়ে তথ্য প্রকাশ করা সম্ভব হবে না। এছাড়া বর্তমানে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যদি কোন কোম্পানি প্রয়োজনীয় তথ্য প্রকাশ না করে, তা বের করা কঠিন। কিন্তু আজকে উদ্বোধন করা সফটওয়্যারের মাধ্যমে তথ্য প্রকাশ না করা কোম্পানির বিষয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অ্যালার্ট চলে যাবে ডিএসই কর্তৃপক্ষের কাছে।

বর্তমানে ডিএসইর ওয়েবসাইটে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর উদ্যোক্তা/পরিচালকদের প্রতি মাসের শেষদিনের শেয়ার ধারনের তথ্য প্রকাশ করা হয়। যা প্রকাশ করতে ডিএসই কয়েকদিন সময় নিয়ে থাকে। তবে সফটওয়্যারটির মাধ্যমে রিয়েল টাইম শেয়ারধারন দেখা যাবে। এছাড়া প্লেসমেন্টহোল্ডারদের শেয়ারধারন, গিফটের শেয়ার ইত্যাদি বিষয়ে সফটওয়্যারে তথ্য প্রকাশ করা হবে।

এই সফটওয়্যারটিতে ৫০ টেমপ্লেট বা ক্যাটাগরি রয়েছে। এরমধ্যে শেয়ারধারনের তথ্য, পিএসআই, প্রান্তিক আর্থিক হিসাব, বাৎসরিক আর্থিক হিসাব, করপোরেট গভর্ণেন্স রিপোর্ট, ফ্রি ফ্লোট রিপোর্ট, ডিভিডেন্ড কমপ্লায়েন্স রিপোর্ট, ইয়ার ইন্ডিং, কোম্পানির ওয়েবসাইট, ট্রেডিং তারিখ, ট্রেডিং কোড, লিস্টিং ডেট, ডিভিডেন্ড ইত্যাদি বিষয়ে আলাদা আলাদাভাবে তথ্য প্রকাশ করা যাবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, আজকের ডিএসইর সফটওয়্যার উদ্বোধন একটি অনেক বড় কাজ। এটি সহজ নয় এবং লোক দেখানো না। এটি খুব কাজে আসবে।

তবে সফটওয়্যার উদ্বোধন করলেই হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আপডেট করতে হবে। একইসঙ্গে রক্ষণাবেক্ষন করতে হবে। এছাড়া কেউ যেনো মিথ্যাচার বা উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে কোন তথ্য প্রকাশ করতে না পারে, সেদিকে নজড় রাখতে হবে।

তিনি বলেন, বিভিন্ন কোম্পানি শেয়ারবাজারে আসতে চায় না। এরমধ্যে ১টি কারন হিসেবে রয়েছে বিএসইসি ও স্টক এক্সচেঞ্জে কোম্পানির লোকজনকে অনেকবার স্বশরীরে যাওয়া লাগে। তবে আজকের সফটওয়্যারের মাধ্যমে সেই সমস্যা কেটে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

ব্রোকারেজ হাউজে সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে (সিসিএ) অনেক সমস্যা হয় বলে জানান সামসুদ্দিন আহমেদ। তাই আজকের সফটওয়্যারের সঙ্গে সিসিএ অ্যাকাউন্টটি সন্নিবেশিত করা যায় কিনা, তা চিন্তা করার অনুরোধ করেছেন।

অনুষ্ঠানে ডিএসইর চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মতিন পাটোয়ারিসহ অন্যান্যরা অংশগ্রহণ করেন।

২ উত্তর “‘ডিজিটাল সাবমিশন অ্যান্ড ডেসিমিনেশন প্লাটফর্ম অব ডিএসই’ শীর্ষক সফটওয়্যার উদ্বোধন”

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.