পুন:অর্থায়নের দ্বিতীয় কিস্তির ৩০০ কোটি টাকা: আবেদনের সময় বাড়লো
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের পুন:অর্থায়নের দ্বিতীয় কিস্তির ৩০০ কোটি টাকা পাওয়ার জন্য ৩০ জুন ২০১৫ পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিল ইনভেষ্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ(আইসিবি)। কিন্তু এ সময়ের মধ্যে কাঙ্খিত আবেদন জমা পড়েনি। তাই আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ পর্যন্ত আবেদনের সময় বাড়ানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার ২৫ জুন অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও আইসিবির মধ্যকার বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র এবং পুন:অর্থায়ন তদারকি কমিটির আহবায়ক মো: সাইফুর রহমান শেয়ারবাজার নিউজ ডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, পুন:অর্থায়নের প্রথম কিস্তির ৩০০ কোটি টাকা সুষ্ঠুভাবে বণ্টন করা হয়েছে। প্রথম কিস্তির বণ্টন প্রক্রিয়া শেষে আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে দ্বিতীয় কিস্তির জন্য আবেদন করি। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক আইসিবিতে দ্বিতীয় কিস্তির ৩০০ কোটি টাকা জমা করে। এখন এই অর্থ ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের ছাড় করা হবে। আগ্রহীদের অর্থ বরাদ্দ পেতে ৩০ জুন ২০১৫ পর্যন্ত আবেদনের সময় বেঁধে দেয়া হয়। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কাঙ্খিত আবেদন জমা পড়েনি। তাই আবেদনের সময় আরো তিনমাস বাড়িয়ে দেয়ার জন্য আমরা তদারকি কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অতএব আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ পর্যন্ত বিনিয়োগকারীরা পুন:অর্থায়নের দ্বিতীয় কিস্তির ৩০০ কোটি টাকা পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট মার্চেন্ট বা সিকিউরিটিজ হাউজের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন।
জানা যায়, আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় নাম থাকা বিনিয়োগকারীদের সুদ মওকুফ ও মাত্র ৯ শতাংশ সুদে ঋণ রি-সিডিউলিংয়ের সুবিধা প্রাপ্তির আবেদন করতে হবে। তা না হলে সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের দ্বিতীয় কিস্তির ৩০০ কোটি টাকার সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন বিনিয়োগকারীরা।
প্রসঙ্গত,চলতি বছরের ১ জানুয়ারি তহবিল তদারক কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ ছাড়ের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেয় আইসিবি। গত ১৯ জানুয়ারি ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের সহায়তায় গঠিত বিশেষ তহবিলের ৯০০ কোটি টাকার দ্বিতীয় কিস্তির ৩০০ কোটি টাকা বাংলাদেশ ব্যাংক ছাড় করে। তহবিলের অর্থ ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাবে বিতরণ করবে।
উল্লেখ্য,অর্থায়ন তহবিলের প্রথম কিস্তির ৩০০ কোটি টাকার মধ্যে ৩০ জুন ২০১৪ পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট ১৫টি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাবে মোট ২৯৯ কোটি ৮৩ লাখ টাকার ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। ২০১৪ সালের ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত এর বিপরীতে আদায়কৃত সুদাসলের ৫২ কোটি ২৮ লাখ ৫৬ হাজার টাকা বাংলাদেশ ব্যাংককে ফেরত দিয়েছে আইসিবি। এ ছাড়া ব্যাংক স্থিতির ওপর সুদ বাবদ দেয়া হয়েছে আরও ১৬ কোটি ২৪ লাখ ৩৮ হাজার টাকা।
বর্তমানে এ তহবিল থেকে ঋণ সহায়তা পেতে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের পক্ষ থেকে ১৭২ কোটি টাকার আবেদন জমা রয়েছে। এখন পর্যন্ত পুনঃঅর্থায়ন সহায়তা তহবিলের সুফল ভোগ করছেন ১০ হাজার ৫৬৮ জন বিনিয়োগকারী। মাত্র ৯ শতাংশ সুদে বিভিন্ন মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউসের ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের অনুকূলে ২৯৯ কোটি ৮২ লাখ টাকার ঋণ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, যা আরও সিকিউরিটিজ কিনতে কাজে লাগিয়েছেন তারা। এতে বিনিয়োগকারীদের সামর্থ্য যেমন বেড়েছে, তেমনি বাজারে তারল্য ও চাহিদা বেড়েছে।
শেয়ারবাজারনিউজ/তু/সা