তিনমাসে মাইডাস ফাইন্যান্সিংয়ে খেলাপি ঋণ ২০৭ কোটি
রাসেল মাহমুদ
শেয়ারবাজারের তালিকাভুক্ত ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান মাইডাস ফাইন্যান্সিংয়ে গত তিন মাসেঅস্বাভাবিভাবে বেড়েছে খেলাপি ঋণ। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২০৭ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র বলছে, গত মার্চ শেষে কোম্পানিটির মোট খেলাপি ঋণ ৩০২ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। কিন্তু মাত্র তিন মাস আগেও (ডিসেম্বর-২০২০) তাদের খেলাপি ছিল মাত্র ৯৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২০৭ কোটি টাকা বা ২১ শতাংশ। কারণ ডিসেম্বর শেষে মাইডাস ফাইন্যান্সিংয়ের খেলাপির হার ছিল বিতরণকৃত মোট ঋণের ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ। কিন্তু মার্চে এসে ৩১ দশমিক ২২ শতাংশে পৌঁছেছে।
জানা গেছে, করোনার কারণে গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত কিস্তি পরিশোধ না করেও ঋণখেলাপি থেকে অব্যাহতি পেয়েছিলেন গ্রাহকরা। তবে জানুয়ারি থেকে নতুন শর্ত আরোপ করা হয়। মোট কিস্তির ৫০ শতাংশ শোধ করলেই নিয়মিত গ্রাহক হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, চলতি বছরের জুন মাসের ঋণের কিস্তির ন্যূনতম ৫০ শতাংশ ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে আগামী ৩১ আগস্টের মধ্যে পরিশোধ করলে ওই সময়ে ঋণ বিরূপ মানে শ্রেণিকরণ করা যাবে না। এর ফলে ঋণ পরিশোধে গ্রাহকরা তিন মাস সময় পাচ্ছেন। জুন মাসের কিস্তির বকেয়া টাকা সর্বশেষ কিস্তির সঙ্গে দিতে হবে। একই সঙ্গে জুনের অবশিষ্ট কিস্তি পরিশোধ করতে হবে পরবর্তী কিস্তির সঙ্গে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নিয়মের কারণেই খেলাপি বেড়েছে বলে দাবি করেছেন মাইডাস ফাইন্যান্সিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মুস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিশেষ সুবিধা প্রত্যাহার করার কারণেই খেলাপি ঋণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এটা সাময়িক সময়ের জন্য। অল্প সময়ের মধ্যে খেলাপি কমে আসবে বলে আশা করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির আরও একটা কারণ আছে। গত বছর বাংলাদেশ ব্যাংক ডেফারেল সুবিধার কয়েকটি আবেদন বাতিল করেছে। এ কারণেই খেলাপি অনেক বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।
২০০২ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত মাইডাস ফাইন্যান্সিং বর্তমানে বি ক্যাটাগরিতে লেনদেন করছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী কোম্পানিটির ৪১ দশমিক ৩৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে উদ্যোক্তা/পরিচালকদের হাতে রয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে ৩০ দশমিক ৬৬ শতাংশ। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে শূন্য দশমিক ৯৯ শতাংশ আর সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে ২৭ দশমিক ০২ শতাংশ শেয়ার।
১৯ আগস্ট থেকে কোম্পানিটির শেয়ারদর নিয়মিত বাড়লেও ২৬ আগস্ট থেকে ধারাবাহিক পতন হচ্ছে। ১৯ আগস্ট কোম্পানিটির শেয়ারবাজারে ২০ টাকায় লেনদেন হয়। ২২ আগস্ট লেনদেন হয় ২২ টাকা ৩০ পয়সায়। এরপর প্রতিদিনই কমেছে কোম্পানিটির শেয়ারদর। সর্বশেষ গতকাল মঙ্গলবার লেনদেন হয়েছে ২০ টাকা ৯০ পয়সায়।