আজ: বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৭ জুন ২০১৫, শনিবার |

kidarkar

আইপিওতে ক্ষতিগ্রস্তদের কোটার মেয়াদ বাড়ছে

BSECশেয়ারবাজার রিপোর্ট: পুঁজিবাজার ধ্বসে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়া ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) ২০ শতাংশ কোটার মেয়াদ বাড়ছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্দেশনা অনুযায়ি ৩০ জুন ২০১৫ পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্তদের কোটার মেয়াদ রয়েছে। অর্থাৎ চলতি মাসেই এই মেয়াদ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীরা এখনো আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। তাই ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের আইপিওতে ২০ শতাংশ কোটার মেয়াদ যেন আরো এক বছর বাড়িয়ে দেয়া হয় সেজন্য অর্থমন্ত্রনালয়ে আবেদন করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। সম্প্রতি অর্থমন্ত্রনালয়ে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে শেয়ারবাজার নিউজ ডটকমকে জানিয়েছেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো: সাইফুর রহমান।

তিনি জানান, আইপিওতে ক্ষতিগ্রস্তদের কোটার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে এখনো বিনিয়োগকারীরা ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারেনি। তাই পুঁজিবাজার তথা বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে আইপিওতে ক্ষতিগ্রস্তদের কোটার মেয়াদ আরো এক বছর বাড়ানোর জন্য আমরা অর্থমন্ত্রনালয়কে চিঠি দিয়েছি।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়,  ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের আইপিওতে ২০ শতাংশ কোটা বরাদ্দ ২০১২ সাল থেকে দেয়া হয়। এরপর ২০১৪ সালের জুনে এ কোটার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে সাধারণ ও প্রাতিষ্ঠানিক উভয় বিনিয়োগকারীদের দাবির মুখে কোটার মেয়াদ এক বছর বাড়িয়ে ২০১৫ পর্যন্ত আনা হয়। অর্থাৎ বিএসইসির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মেয়াদ ৩০ জুন ২০১৬ পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয়া হলে তিন দফায় আইপিওতে ২০ শতাংশের কোটা বরাদ্দের সময় বাড়ানো হবে।

জানা যায়, পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সরকার ২০১১ সালের ২৩ নভেম্বর প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করে। প্রণোদনা প্যাকেজে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে বিশেষ স্কিম দেয়ার জন্য ঐ বছরের ২৭ নভেম্বর ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফায়েকুজ্জামানের নেতৃত্বে ৬ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। গঠিত কমিটি ২০১২ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি বিনিয়োগকারীদের ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে বিভিন্ন সুপারিশসহ অর্থ মন্ত্রণালয়ে একটি প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদনে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের ২০ শতাংশ কোটা বরাদ্দের কথা বলা হয়।

এরপর ঐ বছরের ৫ মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে ২০ শতাংশ কোটায় আবেদন করার জন্য ১৮ মাস সময় বেঁধে দেয় (১ জুলাই ২০১২ থেকে ডিসেম্বর ২০১৩)। ৩০ এপ্রিল বিশেষ স্কিম কমিটি ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রণয়ন করে বিএসইসির কাছে জমা দেয়। এর মধ্যে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সদস্যভুক্ত ২০৪টি ব্রোকারেজ হাউসের ৭ লাখ ৩৯ হাজার ৮৮৩ জন, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সদস্যভুক্ত ১০৩টি ব্রোকারেজ হাউসের ১ লাখ ৫৪ হাজার ২৭৭ জন এবং ২৫ টি মার্চেন্ট ব্যাংকের ৩৯ হাজার ১২০ জন বিনিয়োগকারী রয়েছেন। এতে করে সর্বমোট ৯ লাখ ৩৩ হাজার ২৮০ জন ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী কোটা সুবিধার আওতায় আসেন।

২০১২ সালের ২৬ জুন মার্জিন ঋণের ৫০ শতাংশ সুদ মওকুফ এবং আইপিওতে বিনিয়োগকারীদের ২০ শতাংশ কোটাসহ বিশেষ কমিটির সুপারিশ অনুমোদন করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। পরবর্তীতে ৩ জুলাই ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের লোকসান সমন্বয়ের কথা চিন্তা করে কোটা বরাদ্দের সময়সীমা আরো ৬ মাস সময় বৃদ্ধি করা হয়। অর্থাৎ বিনিয়োগকারীরা ২০১৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে ২০ শতাংশ কোটা পাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন বলে জানানো হয়। সে পরিপ্রেক্ষিতে বিএসইসি আইপিওতে কোটা বরাদ্দ শুরু করে।

পরবর্তীতে পুঁজিবাজারের বৃহত্তর স্বার্থে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের বিশেষ স্কীমের আওতায় সকল পাবলিক ইস্যুতে ২০ শতাংশ কোটা সংরক্ষণের মেয়াদ ১ জুলাই,২০১৪ তারিখ থেকে ৩০ জুন,২০১৫ পর্যন্ত অর্থাৎ আরো এক বছর বাড়ানোর জন্য মন্ত্রনালয়ের কাছে সুপারিশ করার জন্য কমিশনের ৫১৬তম সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

বিএসইসির সুপারিশের ভিত্তিতে অর্থমন্ত্রনালয় আইপিওতে কোটার মেয়াদ এক বছর বাড়িয়ে দেয়। সেই প্রেক্ষিতে চলতি মাসেই এর মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তাই কোটার মেয়াদ যেন আরো এক বছর বাড়ানো হয় সেজন্য অর্থমন্ত্রনালয়ে আবেদন করেছে বিএসইসি।

 

 

শেয়ারবাজারনিউজ/সা

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.