আজ: মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১০ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১২ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৮ জুন ২০১৫, রবিবার |

kidarkar

চূড়ান্ত হচ্ছে বিএসইসির নিরীক্ষা প্যানেল: আর্থিক প্রতিবেদনে স্বচ্ছতা আসছে

BSECশেয়ারবাজার রিপোর্ট: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লাভ-লোকসান ও সম্পদের হিসাবের ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থাহীনতা দূর করার জন্য নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠানদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে নিরীক্ষা প্যানেল গঠন করবে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এর জন্য আগামিকাল অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া কমিশনের সভায় বিএসইসি চূড়ান্ত নিরীক্ষা প্যানেল ঘোষণা করতে পারে।

এই বিষয়ে বিএসইসি’র নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো: সাইফুর রহমান শেয়ারবাজারনিউজ ডটকমকে বলেন, আগামিকাল (সোমবার,২৯ জুন) কমিশন সভায় নিরীক্ষা প্যানেল চূড়ান্তের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে। আর এ প্যানেল চূড়ান্ত হলে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো নিরীক্ষা প্যানেলে নির্বাচিত নিরীক্ষকদের বাইরে অন্য কোথাও কোম্পানির হিসাব নিরীক্ষা করাতে পারবে না। এতে কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে স্বচ্ছতা নিশ্চিতের পাশাপাশি নিরীক্ষকদেরও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।

কোম্পানির লাভ-লোকসান ও সম্পদের হিসাব নিরীক্ষা করে নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে সঠিক ও স্বচ্ছভাবে (ট্রু অ্যান্ড ফেয়ার) আর্থিক প্রতিবেদন প্রস্তুত না করার অভিযোগ রয়েছে। কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে নিরীক্ষকের স্বাধীন মত দেয়ার সুযোগ থাকলেও অনেক ক্ষেত্রেই তা দেয়া হচ্ছে না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে কোম্পানির পরিচালকদের ফরমায়েসে আর্থিক প্রতিবেদন প্রস্তুত করছেন নিরীক্ষকরা। এসব কারণে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের আর্থিক প্রতিবেদনের ওপর শেয়ারহোল্ডার বা বিনিয়োগকারীরা আস্থা রাখতে পারছেন না। যদিও আর্থিক প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই কোম্পানির প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) অনুমোদন দিচ্ছে কমিশন। এতে প্রায়ই বিতর্ক সৃষ্টি হচ্ছে। এসব কারণে আর্থিক প্রতিবেদনে স্বচ্ছতা আনতে বিভিন্ন শর্তসাপেক্ষে নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানকে তালিকাভুক্তির উদ্যোগ নিয়েছে কমিশন। বিএসইসিতে নিবন্ধিত নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন নিরীক্ষা করতে পারবে না।

বিএসইসি সূত্রে জানা যায়, নিরীক্ষা প্যানেলে অংশ গ্রহণের জন্য গতবছর নিরীক্ষকদের আবেদন করার আহবান জানানো হয়। পরবর্তীতে একদফা আবেদনের মেয়াদ বাড়ানো হয়। আর এই নিরীক্ষা প্যানেলে অংশ নেয়ার জন্য ৫৬টি নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান আবেদন করে। এর মধ্য থেকে বিএসইসি ৩২টি প্রতিষ্ঠানকে চূড়ান্ত অনুমোদন দিতে পারে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা যায়।

জানা গেছে, তাদের বাংলাদেশ চার্টার্ড অ্যাকাউট্যান্টস অর্ডার, ১৯৭৩ অনুযায়ী, দুজন অংশীদার থাকলে আগ্রহী নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবশ্যই বিদেশী নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা থাকতে হবে, নয়তো কমপক্ষে সাত বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। অন্যদিকে বিদেশী নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা না থাকলে আগ্রহী নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানে অন্তত চারজন অংশীদার থাকতে হবে। এছাড়া প্রতি অংশীদারের অধীনে যথাযথ যোগ্যতাসম্পন্ন অন্তত আটজন নিরীক্ষাকর্মী থাকতে হবে। এছাড়া ইনসাইডার ট্রেডিং রোধেও অনেক বিধিনিষেধ রয়েছে সে আইনে।

কোনো সিকিউরিটিজ অথবা স্টক এক্সচেঞ্জ সংক্রান্ত কোনো অপরাধের দায়ে আদালত কর্তৃক দণ্ডিত হলে সংশ্লিষ্ট নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান বিএসইসিতে নিবন্ধের অযোগ্য হবে। এ ছাড়া সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ রুলস, ১৯৮৭-এর ১২ বিধির ৩(বি) উপ-বিধি অনুযায়ী অযোগ্য ঘোষিত হলে, যেকোনো নিয়ন্ত্রক সংস্থা বা কোনো আইন দ্বারা স্থগিত থাকলেও কোনো নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান নিবন্ধের অযোগ্য হবে। কোনো উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক জরিমানা এবং জরিমানা পরিশোধ না করা পর্যন্ত বিএসইসিতে তালিকাভুক্তির যোগ্য হবে না সংশ্লিষ্ট নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান। কোনো কোম্পানির নিরীক্ষাকালীন নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির কোনো সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারবে না। এমনকি নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তি, তাদের পোষ্য বা তাদের আত্মীয়রা নিরীক্ষাকালীন সংশ্লিষ্ট কোম্পানির শেয়ার ধারণ করতে পারবেন না।

বর্তমানে ব্যাংক ও ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিরীক্ষার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের যোগ্য নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা রয়েছে। ওই তালিকায় মোট ১১৪টি নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে ‘এ’ ক্যাটাগরির ৬২টি ও ‘বি’ ক্যাটাগরির ৫২টি অডিট ফার্ম রয়েছে। মূলত এসব প্রতিষ্ঠানই শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন তৈরির কাজ করে।

শেয়ারবাজারনিউজ/তু/সা

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.