অদাবিকৃত আমানতের তালিকা পাঠানোর নির্দেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক: অদাবিকৃত আমানত গ্রাহককে বুঝিয়ে দেয়ার জন্য নির্দেশনা থাকলেও তাতে গড়িমসি করছে ব্যাংকগুলো। আবার অনেক ব্যাংক এগুলোকে নিজস্ব সম্পদ হিসেবে ব্যবহার করছে। হাতেগোনা কয়েকটি ব্যাংক অদাবিকৃত আমানত ও মূল্যবান সামগ্রী কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা দিলেও সুদহার বুঝিয়ে দিতে করছে গড়িমসি। এ পরিপ্রেক্ষিতে অদাবিকৃত আমানত ও মূল্যবান সামগ্রীর তালিকা বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠাতে নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বুধবার (১৭ নভেম্বর) জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে প্রদর্শনের জন্য ব্যাংকগুলো অদাবিকৃত সম্পত্তির তালিকা নিয়মিত পাঠাতে হবে।
ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১-এর ৩৫ নম্বর ধারা অনুযায়ী, বিভিন্ন ব্যাংকের অদাবিকৃত আমানত ও মূল্যবান সামগ্রী বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে জমা দেয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু নীতিমালা না থাকায় দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো সেগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দিত না। বরং দাবির মেয়াদ পেরিয়ে যাওয়ার পর তামাদি সম্পত্তিকে নিজেদের আয়ের খাতায় যুক্ত করত তারা। কিন্তু ২০১৮ সালে জারি করা এক বিধানের পর থেকে ব্যাংকগুলো এসব সম্পত্তি বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হয়। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের পক্ষ থেকে গতকাল আরও একটি নীতিমালা প্রকাশ করা হয়েছে।
গতকাল জারি করা ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের জারি করা নীতিমালা অপরিবর্তিত থাকবে। এখন থেকে ইমেইল, সফটকপি, সিডি কিংবা ইউএসবি ডিভাইসের মাধ্যমে না পাঠিয়ে ব্যাংকগুলোর নিজস্ব ওয়েবসাইটে যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে তার লিংক ইনফরমেশন সিস্টেমস ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সাপোর্ট ডিপার্টমেন্টে পাঠাতে হবে। আর এই তালিকার হার্ডকপি পাঠাতে হবে ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগে।
২০১৮ সালে প্রকাশ করা ওই নীতিমালায় বলা হয়েছিল, গ্রাহক ১০ বছর পর্যন্ত লেনদেন বা যোগাযোগ না করলে ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১-এর ৩৫(১) ধারা অনুযায়ী তাদের পরিশোধযোগ্য অর্থ, পরিশোধযোগ্য চেক, ড্রাফট বা বিনিময় দলিল এবং ব্যাংকের জিম্মায় রক্ষিত মূল্যবান সামগ্রী অদাবিকৃত অর্থ ও মূল্যবান সামগ্রী হিসেবে বিবেচিত হবে। তবে সরকার, নাবালক বা আদালতের অর্থ এ নিয়মের আওতায় পড়বে না।
গণনাকৃত অর্থ ও চেক, ড্রাফট বা বিনিময় দলিলের পাওনাদারদের পক্ষে কোনো ব্যক্তি এবং মূল্যবান সামগ্রীর আমানতকারীকে তার দেয়া ঠিকানায় রেজিস্ট্রিকৃত ডাকযোগে তিন মাসের লিখিত নোটিশ পাঠাতে হবে। ড্রাফট বা বিনিময় দলিলে পাওনাদারের ঠিকানা পাওয়া না গেলে আবেদনকারীর ঠিকানায় অনুরূপ নোটিশ পাঠাতে হবে। এক্ষেত্রে আইনের ৩৫(৩) ধারা অনুসরণ করতে হবে।