পিপলস লিজিংয়ের পর্ষদকে পরিকল্পনা তৈরি ও বিশেষ নিরীক্ষার নির্দেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইনান্সিয়াল সার্ভিসেসের পুনর্গঠিত পরিচালনা পর্ষদকে ব্যবসায়িক কৌশলগত পরিকল্পনা তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। একইসঙ্গে ইতিপূর্বে কোম্পানিটিতে সংঘটিত সকল আর্থিক অপরাধ খতিয়ে দেখতে বিশেষ নিরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২২ নভেম্বর) বিকেলে সিকিউরিটিজ কমিশন ভবনে বিএসইসি’র সঙ্গে পিপলস লিজিংয়ের পুনর্গঠিত পরিচালনা পর্ষদেরেএক বৈঠকে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়। ঋণ জালিয়াতি ও নানা অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে ডুবতে বসা কোম্পানিটিকে পুনরুজ্জীবিত করতে পুনর্গঠিত পর্ষদকে এমন নির্দেশনা দিয়েছে বিএসইসি।
বৈঠকে বিএসইসি’র পক্ষে চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম, কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে বৈঠকে পিপলস লিজিংয়ের পুনর্গঠিত পরিচালনা পর্ষদসহ সিনিয়র স্টাফরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইনান্সিয়াল সার্ভিসেসকে পুনরুজ্জীবিত করতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে বিএসইসিকে জানিয়েছে পুনর্গঠিত পরিচালনা পর্ষদ। সে জন্য বিএসইসি কোম্পানিতে দ্রুত কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ দিতে বলেছে। এছাড়া বিগত চার বছরে কোম্পানিটির কোনো বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হয়নি। সেজন্য কোম্পানিটিকে স্ট্যাটুটরি অডিট করতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে পুনর্গঠিত পরিচালনা পর্ষদকে কোম্পানিটির ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একটি বিজনেস স্ট্রাটেজিক প্ল্যান তৈরি করতে বলা হয়েছে। আর কোম্পানিটিতে যেসব আর্থিক অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে একটি বিশেষ নিরীক্ষা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসি’র কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘উচ্চ আদালতের নির্দেশনা আছে যে, তারা আমাদের কাছে রেগুলার বেসিসে গাইডেন্স সংগ্রহ করবে। আমাদের সাহায্য সহযোগীতা নিয়ে যেন কোম্পানিটি পুনরায় চালু করা যায়, তারা সেটাই করবে। আমরাও নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে চাই, সকল কোম্পানি যেন চালু থাকে। সে জন্য আমরা তাদেরকে একটি বিজনেস স্ট্রাটেজিক প্ল্যান তৈরি করতে বলেছি। একইসঙ্গে কোম্পানিটির গত চার বছরে কোনো এজিএম হয়নি। তাই তাদেরকে স্ট্যাটুটরি অডিট করার জন্য বলেছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘কোম্পানিটিতে আগে যেসব ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম হয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে একটি বিশেষ অডিট করা হবে বলে জানিয়েছি। এছাড়া তাদেরকে কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারী দ্রুত নিয়োগ দিতে বলেছি। কারণ কোম্পানিটির কার্যক্রম পরিচালনা করা জন্য মানব সম্পদের প্রয়োজন রয়েছে। আজকের বৈঠকে আমারা যা যা বলেছি কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ সেসব বিষয়ে সম্মতি জানিয়েছে। কারণ বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ চায় কোম্পানিটি যেন পুনরায় ঘুরে দাঁড়ায়।’
এদিকে চলতি বছরের ১৩ জুলাই বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এক আদেশে ঋণ জালিয়াতি, অনিয়ম-দুর্নীতিতে ডুবতে বসা পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইনান্সিয়াল সার্ভিসেসকে অবসায়নের পরিবর্তে পুনরুজ্জীবিত করতে ১০ সদস্যের পরিচালনা পর্ষদ গঠন করে দেন।
কোম্পানিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কামাল-উল আলমকে। আর ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পান আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন। এছাড়া কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের অন্যান্য সদস্যরা হলেন- সাবেক সচিব আনোয়ারুল ইসলাম সিকদার, সাবেক সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ হাসান শাহীদ ফেরদৌস, পুবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল হালিম চৌধুরী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) কাজী তৌফিকুল ইসলাম, নুর-এ-খোদা আব্দুল মবিন (এফসিএ), মওলা মোহাম্মদ (এফসিএ), সঞ্চয়কারীদের প্রতিনিধি ড. নাশিদ কামাল ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের চেয়ারম্যান ড. নুরুল কবির।
বর্তমান চেয়ারম্যান মহদোয় এর অনেক চেষ্টা করে। পিপলস লিজিং কোম্পানি চালু করতে বিএসইসি চেয়ারম্যান মহোদয় যে উদ্যোগ নিয়েছে তাহা একটি মাইলফলক হিসেবে থাকবেই হাজার হাজার ক্ষতিগ্রস্ত বিগো কারীদের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।