‘দেশে বিদ্যমান বিভিন্ন নীতি একে অন্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক’
নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে বিদ্যমান বিভিন্ন নীতি একে অন্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে অভিযোগ করেছেন এফবিসিসিআই’র শিল্প ও শিল্পনীতি বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যরা। এ কারণেই নানা ক্ষেত্রে নীতি সুবিধা বঞ্চিত হতে হচ্ছে উদ্যোক্তাদের। ফলে স্থানীয় ও বিদেশী বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি ব্যাহত হচ্ছে শিল্পায়ন।
সোমবার (১৭ জানুয়ারি) এফবিসিসিআই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত কমিটির প্রথম সভায় এসব কথা বলেন তারা।
বৈঠকে এফবিসিসিআই’র সিনিয়র সহ-সভাপতি ও শিল্প ও শিল্পনীতি বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির ডিরেক্টর-ইন-চার্জ মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বলেন, শিল্পনীতি বাস্তবায়নে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমন্বয় থাকা জরুরি। এছাড়াও অর্থ, বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রণালয়কে বিশেষায়িত করা প্রয়োজন। তিনি অভিযোগ করেন, বিসিক শিল্পনগরীতে কোন সেবা না পেলেও সার্ভিস চার্জ গুনতে হয় উদ্যোক্তাদের। সংশ্লিষ্ট শিল্পমালিকদের সঙ্গে আলোচনা না করেই কখনো কখনো এ চার্জ ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ বাড়ানো হচ্ছে। বিসিকের বিভিন্ন শিল্পনগরীতে জমির উচ্চমূল্যের কারণে শিল্পায়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
বিভিন্ন দেশ তাদের শিল্পের সুরক্ষা দিতে বিদেশী পণ্যে অ্যান্টি ডাম্পিং শুল্কসহ নানা রকম বিধি নিষেধ আরোপ করে। বাংলাদেশকেও স্থানীয় শিল্প সুরক্ষায় এসব পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান এফবিসিসিআই’র সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু।
বৈঠকে স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদক ও রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি শামীম আহমেদ বলেন, অর্থনীতিতে ৫০ শতাংশের বেশি অবদান রাখে সেবাখাত। কিন্তু শিল্পনীতির খসড়া এ খাতকে যথাযথভাবে মূল্যায়ন করা হয়নি। অর্থনীতির বিকাশে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও শিল্পনীতিতে তার উল্লেখ নেই। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ক কর্তৃপক্ষের নীতি ও শিল্পনীতির মধ্যে অনেক অসামঞ্জস্য থাকায় বিদেশী বিনিয়োগকারীরা নিরুৎসাহীত হচ্ছেন বলে জানান তিনি।
জাতীয় শিল্পনীতি ২০২১ এর খসড়ার ওপরে আলোচনায় স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যরা বলেন, বিভিন্ন নীতির মধ্যে সমন্বয়হীনতা রয়েছে। শিল্পনীতিকে সর্বোচ্চ নীতি হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। যাতে অন্য কোন নীতি সাংঘর্ষিক হলে শিল্পনীতির বিধান অনুযায়ী উদ্যোক্তারা সুবিধা গ্রহণ করতে পারেন। নতুন শিল্পনীতিতে এলডিসি পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা, রপ্তানি পণ্যের বৈচিত্রকরণ, দক্ষ জনশক্তি তৈরি, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার ও এসএমই খাতকে গুরুত্ব দেয়া উচিত বলে মনে করেন তারা।
অন্যান্যদের মধ্যে সভায় উপস্থিত ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারি সচিব (নীতি) মোঃ সেলিম উল্লাহ, স্ট্যান্ডিং কমিটির কো-চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুর রাজ্জাক ও আসিফ ইব্রাহিম এবং এফবিসিসিআই’র পরিচালক আবুল কাশেম খান, ড. নাদিয়া বিনতে আমিন, আব্দুল হক, এমসিসিআই’র সাবেক সভাপতি নিহাদ কবীর, এফবিসিসিআইর উপদেষ্টা মনজুর রহমান, বিল্ডের সিইও ফেরদৌস আরা বেগম।