ফু-ওয়াং ফুডসের মালিকানা মিনোরির কাছে হস্তান্তরের অনুমোদন বিএসইসির
নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে খাদ্য ও আনুসঙ্গিক খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ফু-ওয়াং ফুডসের মালিকানা কিনে নিচ্ছে মিনোরি বাংলাদেশ। এরই প্রেক্ষিতে ফু-ওয়াং ফুডসের মালিকানা মিনোরি বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তরের বিষয়টি অনুমোদন দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
মিনোরি বাংলাদেশ ইতোমধ্যে এমারেল্ড অয়েলের মালিকানা কিনে নিয়েছে। পাশাপাশি দীর্ঘ চার বছর ধরে বন্ধ থাকা কোম্পানিটিকে উৎপাদনে ফিরিয়ে এনেছে। ফলে সার্বিক দিক বিবেচনা করে ফু-ওয়াং ফুডসের মালিকানায় আসতে মিনোরি বাংলাদেশকে সম্মতি দিয়েছে বিএসইসি।
বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) বিএসইসি’র ৮০৮তম নিয়মিত কমিশন সভায় এ বিষয়টি অনুমোদন দেওয়া হয় বলে সূত্রে জানা গেছে।এদিকে বৃহস্পতিবার ফু-ওয়াং ফুডসের তিন পরিচালকের শেয়ার হস্তান্তরের বিষয়ে মিনোরি বাংলাদেশসহ সংশ্লিষ্ট বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দিয়েছে বিএসইসি।
চিঠিতে বিএসইসি জানিয়েছে, ফু-ওয়াং ফুডসের ৮৪ লাখ ৪২ হাজার ৭২৬টি শেয়ার মিনোরি বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তরের প্রস্তাব কমিশন অনুমোদন দিয়েছে। ফু-ওয়াং ফুডসের শেয়ার বিক্রি করেছেন আরিফ আহমেদ চৌধুরী, আফসানা তারান্নুম ও লুবাবা তাবাসসুম। ডিপোজিটার (ব্যবহারিক) প্রবিধান ২০০৩, এর বিধি ৪২ এবং সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) উপ-বিধি ১১.৬ (মিলিত লেনদেন) এর অধীনে শেয়ার ক্রয় চুক্তি (এসপিএ) অনুসারে প্রতিটি শেয়ার ১০ টাকা মূল্যে হস্তান্তর হয়েছে। এক্সচেঞ্জের ট্রেডিং সিস্টেমের বাইরে এই শেয়ার হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
তবে চিঠিতে এই শেয়ার হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় ৫টি শর্ত দিয়েছে বিএসইসি। শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে- বিক্রেতা (শেয়ারহোল্ডার পরিচালক) এবং ক্রেতা এই বিষয়ে প্রযোজ্য উৎস কর জমা দেওয়ার জন্য স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকা প্রবিধানের রেগুলেশন ৩৪(১) অনুযায়ী উপযুক্ত ঘোষণা দেবেন। মাইনরি বাংলাদেশের নামে প্রস্তাবিত শেয়ার হস্তান্তরের কার্য সম্পাদনের পর, পরিচালকদের দ্বারা শেয়ারের নিরবচ্ছিন্ন হোল্ডিং বজায় রাখতে ক্রেতা ফু-ওয়াং ফুডসের পরিচালনা পর্ষদে স্থানান্তরিত ৭.৬১ শতাংশ শেয়ারের বিপরীতে এক বা তার বেশি ব্যক্তিকে মনোনীত বা প্রতিনিধি পরিচালক হিসাবে মনোনীত করবেন। ক্রেতা মাইনোরি বাংলাদেশ ফু-ওয়াং ফুডসের দায়বদ্ধতা নিয়মিতকরণ এবং কোম্পানিটির সুষ্ঠু পরিচালনা ও পরিচালনার জন্য কমপক্ষে ২০ কোটি টাকা শেয়ার মানি ডিপোজিট বা ঋণ প্রদান করবে। আর শেয়ার মানি ডিপোজিটের অর্থ কোম্পানিটির নামে একটি পৃথক ব্যাংক হিসাবে রাখতে হবে এবং শুধুমাত্র ব্যাংকের দায়বদ্ধতা নিয়মিতকরণ, জমি অধিগ্রহণ, কার্যকরি মূলধন ও উৎপাদন সুবিধা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে এ অর্থ ব্যবহার করা যাবে। আর ফু-ওয়াং ফুডসের পরিচালনা পর্ষদের দ্বারা ৩০ শতাংশ শেয়ারধারণের শর্ত পূরণের জন্য শেয়ার মানি ডিপোজিটের শেয়ারের অর্থের বিপরীতে মূলধন বাড়ানোর জন্য কমিশনের সম্মতি নিতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসি’র কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ফু-ওয়াং ফুডসের মালিকানায় পরিবর্তনের বিষয়ে আমরা অনুমোদন দিয়েছি। মিনোরি বাংলাদেশের সঙ্গে তারা একটি চুক্তি করছে। সেখানে ফু-ওয়াং ফুডস তাদের সাড়ে ৮ কোটি টাকা পরিমাণের শেয়ার বিক্রি করে দেবে মিনোরি বাংলাদেশের কাছে। তবে মিনোরি ফু-ওয়াং ফুডসে ২০ কোটি টাকা নূন্যতম শেয়ার মানি ডিপোজিট হিসেবে দিবে। পরবর্তীতে ফু-ওয়াং ফুডস সেটা শেয়ারে রূপান্ত করে, সম্মিলিতভাবে পরিশোধিত মূলধনের ৩০ শতাংশ শেয়ারধারণের শর্ত পূরণ করবে। আর মিনোরি বাংলাদেশ এমারেল্ড অয়েলকে উৎপাদনে ফিরিয়ে এনেছে। ফলে তাদের কার্যক্রমের প্রতি আমাদের আস্থা রয়েছে।
এ বিষয়ে ফু-ওয়াং ফুডসের কোম্পানি সচিব শরিফ আল মাহমুদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।