আজ: বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১১ জুলাই ২০১৫, শনিবার |

kidarkar

বিশ্ব শেয়ারবাজারে ধস আমাদের জন্য সুফল

Pathok_2গ্রিস সংকট এর জন্য সারা বিশ্বের শেয়ার বাজারে ধ্বস নেমেছে। আপনাদের( ২০০৮-২০০৯) এ world recession এর কথা মনে আছে নিশ্চই । USA তে ব্যাংক গুলো collapse করে বসে। সব কিছুর পেছনে মুল কারন ছিল ব্যাংক এর অনিয়ন্ত্রিত Loan । যত্র তত্র loan দেয়া এবং পরবর্তীতে টা recovery না করতে পারা। সেই সময়েই আপনারা দেখেছেন সারা পৃথিবীতে recession (মন্দা) থাকলেও তার বিপরীত চিত্র ছিল আমাদের দেশে। বরং world recession এর সুযোগে আমাদের দেশ কিছুটা এগিয়ে যায়। বিদেশে অবস্থানরত অনেক বাঙালি সেই সময় থেকেই তাদের জমানো বিদেশি অর্থ দেশে পাঠাতে শুরু করে। দেশে foreign reserve বৃদ্ধির যা অন্যতম একটি কারন ছিল। শুধু তাই নয় শেয়ার বাজার এর খেত্রেও বিশ্ব শেয়ার থেকে আমাদের শেয়ার বাজার ভিন্ন রুপ প্রদর্শন করে। সেই সময় ২ বছরে আমাদের শেয়ার বাজার ২৩০০ ইনডেক্স থেকে ৯০০০ ইনডেক্স এ উঠে যায়।

বর্তমানে গ্রিস সংকট এর জন্য বিশ্ব শেয়ার বাজার এর টালমাটাল অবস্থা। গ্রিস সংকটরের কারন ও সেই একটি ——- Loan(ঋণ)। গ্রিসের বর্তমান অর্থনৈতিক সংকটের জন্য ইউরোজোনভুক্ত দেশগুলোর অভিন্ন মুদ্রা ইউরোই দায়ী। ১৯৯৯ সালের ১ জানুয়ারি চালু হয় এই মুদ্রা। ইউরোজোনভুক্ত হওয়ার আগে ঋণদাতারা গ্রিসকে মধ্য আয়ের দেশ হিসেবে দেখত। ফলে এখানে অতিরিক্ত অর্থলগ্নিকে তারা ঝুঁকিপূর্ণ মনে করত। কিন্তু ইউরোজোনভুক্ত হওয়ার পর ঋণদাতারা গ্রিসকে আর বিনিয়োগের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করেনি। তারা বিপুল পরিমাণ অর্থঋণ দিতে শুরু করে। সে সময় ঋণদাতারা দেশটিকে মধ্য আয়ের দরিদ্র দেশ হিসেবে বিবেচনা করেনি। ফলে তারা জার্মানিকে যে সুদে ঋণ দিয়েছে, সেই হারে গ্রিসকেও ঋণ দিতে থাকে। আর ঋণ পেতে হলে গ্রিসের সামনে ওই হার মেনে নেওয়া ছাড়া উপায়ও ছিল না। কারণ একটাই, তার মুদ্রাও তখন ইউরো। উচ্চ সুদে ঋণ নেওয়ায় ও ইউরোজোনভুক্ত হওয়ায় শ্রমবাজারে মজুরির পরিমাণ বাড়াতে হয়। ফলে খুব দ্রুতই বাণিজ্য ঘাটতি দেখা দেয়। ১৯৯৯ সালে বাণিজ্য ঘাটতি যেখানে দেশটির জিডিপির ৫ শতাংশেরও কম ছিল, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে এসে তা বেড়ে ১৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছিল। দেশটির অর্থনীতিতে অব্যবস্থাপনা ও সংশ্লিষ্টদের অসততা সরকারের ঋণের বোঝা আরো বাড়িয়ে দেয়।

আমদের দেশের প্রেক্ষাপট বিশ্ব বাজার থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। আমাদের দেশে বিদেশী ব্যাংক এর সংখ্যা কম এই দেশের বেশির ভাগ ব্যাংক local । আমাদের দেশের Loan(ঋণ) ব্যবস্থাতেও রয়েছে ভিন্নতা । এখানে Loan(ঋণ) ব্যবস্থা অনেকটা শক্তের ভক্ত নরমের জম। অর্থাৎ আপনি যদি সরকার দলীয় লোক হয়ে থাকেন তাহলে খুব সহজেই Loan(ঋণ) পাবেন। শুধু তাই নয় সেই Loan(ঋণ) কে bad loan এও রুপান্তর করতে পারবেন। কিন্তু এই ধরনের Loan(ঋণ) এর সংখ্যা খুব একটি বেশি নয়। পক্ষান্তরে আপনি যদি একজন সাধারণ নাগরিক হয়ে থাকেন তাহলে Loan(ঋণ) নিতে গিয়ে আপনার পায়ের জুতা খয় হয়ে যাবে। আইন-কানুন এর কথা শুনতে শুনতে আপনি bank এর lower হয়ে যেতে পারবে। কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে ২-১ দিন দেরি হলে আপনার মানসম্মান নিয়ে টানা টানি শুরু হয়ে যেতে পারে।

আমাদের দেশের মানুষ এখনও credit card কাকে বলে জানে না । মোট জনসংখ্যার .০৫% লোক credit card ব্যবহার করে কিনা সন্দেহ । তাছার আমাদের দেশের অনেকটাই কৃষি নির্ভর দেশ। এখন সম্পূর্ণ রুপে শিল্পে রুপান্তর হতে পারেনি। দেশের বর্তমানে যে অবস্থা তাতে প্রচুর অলস অর্থ পড়ে আছে ব্যাংক গুলোর কাছে। দেশের commercial bank গুলো অনেকটাই বাধ্য হয়ে FDR rate কমিয়ে আনছে । আপনি লক্ষ্য করলে দেখবেন ব্যাংক গুলো এখন আর door to door —– individual client এর কাছে আর যায় না তাদের deposit বাড়ানোর জন্য আপনারা শুনলে অবাক হবেন বর্তমান call money rate 0% । যে call money rate 200% হয়ে গিয়েছিল ২০১০ সালের শেয়ার মার্কেট ধ্বস এর সময়।

সার্বিক বিবেচনায় বর্তমানে আমাদের দেশের শেয়ার বাজার বিনিয়োগের জন্য একটি আদর্শের জায়গা। শুধু দেশিও বিনিয়োগকারী নয় বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্যও একটি আদর্শের জায়গা। বিশ্ব শেয়ার মার্কেটের ধ্বস বরং আমাদের শেয়ার বাজার এর জন্য সু-খবর বয়ে আনতে পারে। তৈরি করে দিতে পারে ওপার সম্ভাবনার। সেই দিন খুব একটি দূরে নয় । ভারতের প্রধান স্টক মার্কেট সেনেসেক্সের যে ভাবে ইনডেক্স এর record তৈরি করেছিল আমাদের দেশের শেয়ার বাজারও সেই record তৈরি করবে।

তানভীর আহমেদ
শেয়ার বিনিয়োগকারী
এবি ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড
উত্তরা,ঢাকা।

 

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.