বিদ্যুতের খুচরা মূল্য ৩.০৯ শতাংশ বাড়ানোর সুপারিশ
শেয়ারবাজার রিপোর্ট : বিদ্যুতের বিদ্যমান পাইকারি মূল্য ধরে খুচরা মূল্য ৩ দশমিক শূন্য নয় শতাংশ বাড়ানোর সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি।
তবে যদি মূল্যায়ন কমিটির সুপারিশ করা পাইকারি বিদ্যুতের দাম ৫ দশমিক ১৫ শতাংশ ও সঞ্চালন (হুইলিং চার্জ) ১ দশমিক ৫৩ শতাংশ হারে বাড়ে তাহলে বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডকে (বিপিডিবি) ব্রেক ইভেনে যেতে খুচরা মূল্য ৭ দশমিক ৮৩ শতাংশ হারে বাড়াতে হবে বলে সুপারিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
রাজধানীর কাওরানবাজারে টিসিবি ভবনের অডিটরিয়ামে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত বিপিডিবির খুচরা বিদ্যুতের মূল্য বাড়ানোর প্রস্তাবের ওপর বিইআরসিতে গণশুনানী অনুষ্ঠিত হয়। বিপিডিবির বিদ্যুতের খুচরা মূল্যহার ২২ দশমিক ৪৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধির প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে বিইআরসির ৫ সদস্যের কারিগরি মূল্যায়ন কমিটির আহ্বায়ক মোস্তাক আহমেদ তাদের সুপারিশ পেশ করেন।
বিইআরসির চেয়ারম্যান এ আর খানের সভাপতিত্বে কমিশনের ৪ সদস্য ড. সেলিম মাহমুদ, প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন, মো. মাকসুদুল হক ও রহমান মুরশেদ গণশুনানীতে উপস্থিত ছিলেন।
গণশুনানীর শুরুতেই বিপিডিবির অতিরিক্ত পরিচালক (কমার্শিয়াল অপারেশনস) তসলিম হোসেন পাইকারি মূল্য ও হুইংলিং চার্জ বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিত তুলে ধরে ২২ দশমিক ৪৫ শতাংশ হারে বিদ্যুতের খুচরা মূল্য ইউনিট প্রতি গড়ে প্রায় দেড় টাকা (১.৩৭ টাকা) বাড়ানোর প্রস্তাব রাখেন। বর্তমানে গ্রাহককে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ ৬ টাকা ১০ পয়সায় কিনতে হচ্ছে। প্রস্তাবিত হারে বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি হলে তা কিনতে হবে ৭ টাকা ৪৭ পয়সায়।
চট্টগ্রাম, সিলেট, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ, রাজশাহী ও রংপুরের শহরাঞ্চলে বিপিডিবি গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। সংস্থাটির মোট গ্রাহক সংখ্যা ২৮ লাখ ৮০ হাজার। বিতরণ লাইন ৩৮ হাজার ৯৩৪ কিলোমিটার। প্রিপেইড মিটার রয়েছে ৫২ হাজার।
বিপিডিবির বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাব অনুযায়ী আবাসিক খাতে ৭৫ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীকে বর্তমানের ৩ দশমিক ৫৩ টাকার বিদ্যুৎ কিনতে হবে ৪ দশমিক ২০ টাকায়। আর ৬শ’ ইউনিটের বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীকে বর্তমান ৯ দশমিক ৯৩ টাকার পরিবর্তে ১১ দশমিক ৮৫ টাকা দিতে হবে। একইভাবে কৃষি সেচ পাম্পে ব্যবহৃত বিদ্যুৎ ২ দশমিক ৫১ টাকার পরিবর্তে ৩ টাকা দিতে হবে।
বিপিডিবির প্রস্তাবে বলা হয়, যদি তাদের প্রস্তাবিত হারে বিদ্যুতের খুচরা মূল্য বৃদ্ধি করা না হয় তাহলে চলতি অর্থবছরে সংস্থাটির এক হাজার ১৫৮ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হবে।
গণশুনানীতে বিপিডিবির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আজিজুল হক, পরিচালক (গণসংযোগ) সাইফুল হাসান চৌধুরী ও জেনারেল ম্যানেজার (কমার্শিয়াল) আব্দুর রউফসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে গণশুনানীতে কনজ্যুমারস এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শামসুল আলমসহ বিভিন্ন সংস্থা, কোম্পানি, ব্যবসায়ী সংগঠন ও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা বিদ্যুতের খুচরা মূল্য বাড়ানোর বিরোধিতা করে বক্তব্য রাখেন।
বিপিডিবির খুচরা মূল্য হার বৃদ্ধির প্রস্তাবের ওপর গণশুনানী শেষে দুপুর ২টার পর ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ডিপিডিসি) খুচরা মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাবের ওপর গণশুনানী অনুষ্ঠিত হবে।
আগামী রবিবার সকাল ১০টায় বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) ও দুপুর ২টায় ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিডেটের (ডেসকো) খুচরা মূল্য বাড়ানোর প্রস্তাবের ওপর গণশুনানী অনুষ্ঠিত হবে।