আজ: বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২২ জুলাই ২০১৫, বুধবার |

kidarkar

আইপিও ও রাইটে ট্যাক্স ক্লিয়ারেন্স যাচাই করছে না বিএসইসি

BSECশেয়ারবাজার রিপোর্ট: পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ করার জন্য কোম্পানিগুলোকে প্রসপেক্টাস জমা দিয়ে বিএসইসি’র কাছে আবেদন করতে হয়। এ প্রসপেক্টাসে কোম্পানিগুলোকে ভ্যাট, শূল্ক ও রাজস্ব পরিশোধের সার্টিফাইড তথ্যসহ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট জমা দেয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। পাশাপাশি যথাসময়ে রাজস্ব জমা সম্ভব না হলে প্রসপেক্টাসে এর সুনির্দিষ্ট কারণ উপস্থাপনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু কোম্পানিগুলো আইন অনুযায়ী ভ্যাট, শুল্ক ও ট্যাক্স পরিশোধের বিষয়ে তথ্য উপস্থাপন করলেও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে রাজস্ব ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট দাখিল করছে না। এ বিষয়ে বিএসইসি কোম্পানিগুলোর জমা দেয়া রাজস্ব বিষয়ক তথ্য যাচাই করছে না। বরঞ্চ বিএসইসি রাজস্ব বোর্ডেও ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট ছাড়াই কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজার থেকে প্রাথমিক গণ প্রস্তাব (আইপিও), রাইট ইস্যু’র মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করার অনুমোদন করছে বলে জানা যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বিএসইসি’র নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সাইফুর রহমান শেয়ারবাজারনিউজ ডটকমকে বলেন, ‘আইপিও’র আবেদনের ক্ষেত্রে কোম্পানির জমা দেয়া প্রসপেক্টাসের সাথে রাজস্ব ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট ও এ বিষয়ক বিস্তারিত তথ্য জমা দেয়ার বাধ্যবাধকতা নেই। বিএসইসি শুধু বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে কোম্পানির ক্রেডিট ইনফর্মেশন রিপোর্ট যাচাই করে। কিন্তু রাজস্ব বিষয়ে কোন কিছু যাচাই করা হয় না’। আর এসব বিষয়ে যাচাই করার মতো বিএসইসি’র পর্যাপ্ত জনবল নেই বলে তিনি জানান।
কিন্তু আইপিও নীতিমালার ১০ নম্বর অনুচ্ছেদে কোম্পানিকে সর্বশেষ রাজস্ব প্রদানের বিস্তারিত সার্টিফাইড তথ্য জমা দেয়ার নির্দেশনা রয়েছে। এছাড়া সময়মতো রাজস্ব না দেয়ার বিষয়ে উপযুক্ত কারণ দেখিয়ে কোম্পানির মতামত উপস্থাপন করারও নির্দেশনা রয়েছে।
অপরদিকে আইপিও নীতিমালার ১৫ নম্বর অনুচ্ছেদে কোম্পানিকে আইপিও আবেদনের সাথে রাজস্ব ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট জমা দেয়ারও নির্দেশনা রয়েছে।
এ ক্ষেত্রে কোম্পানিগুলো প্রসপেক্টাসে রাজস্ব প্রদান বিষয়ক তথ্য উপস্থাপন করলেও রাজস্ব ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকে জমা দিচ্ছে না। কিন্তু বিএসইসি কোম্পানির জমা দেয়া রাজস্ব বিষয়ক তথ্য যাচাই না করে রাজস্ব ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট ছাড়াই পুঁজিবাজার থেকে কোম্পানিগুলোকে অর্থ সংগ্রহ করার অনুমোদন দিচ্ছে।
উল্লেখ্য, বীমা খাতের কোম্পানি রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স ২০০৯ সালে পুঁজিবাজারে আইপিও’র মাধ্যমে তালিকাভুক্ত হয়েছে। অথচ কোম্পানিটির ২০০৬ সাল থেকে ২০১০ পর্যন্ত রাজস্ব ফাঁকি ছিল ৬ লাখ ৪৩ হাজার ২০০৮ টাকা। পরবর্তীতে কোম্পানি এ টাকা পরিশোধ করে। কিন্তু এ বিষয়ে প্রসপেক্টাসে কোন তথ্যই উপস্থাপন করেনি কোম্পানিটি। আর এসব তথ্য ছাড়াই কোম্পানিটিকে আইপিও’র অনুমোদন দিয়েছে বিএসইসি।
এদিকে বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, প্রসপেক্টাসে জমা দেয়া রাজস্ব বিষয়ক তথ্য যাচাই না করায় বিএসইসি’র পাশাপাশি কোম্পানিগুলোর স্বচ্ছতা সম্পর্কে প্রশ্ন থেকে যায়। আর যাচাই না করার কারণে কোম্পানিগুলোর জবাবদীহিতাও নিশ্চিত হচ্ছে না। আর এ জবাবদিহিতার অভাবের সুযোগ নিয়ে কোম্পানিগুলো অনিয়ম, দুর্নীতি করে পার পেলেও এসব কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর কর রেয়াত নিয়ে রাজস্ব বোর্ডের সাথে বিএসইসি’র সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু এ দুই সংস্থার সমন্বয়হীনতার কারণে বিনিয়োগকারীর স্বার্থে কোম্পানিগুলোর রাজস্ব বিষয়ক জবাবদিহিতা নিশ্চিত হচ্ছে না।

 

শেয়ারবাজারনিউজ/আ.ও/মু

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.