আজ: বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ইং, ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৭ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৩ জুলাই ২০১৫, বৃহস্পতিবার |

kidarkar

৩ বছর ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিতে পারবে না বেক্সিমকো গ্রুপ

beximcoশেয়ারবাজার রিপোর্ট: রাষ্ট্রায়ত্ত্ব জনতা ব্যাংকে খেলাপি হওয়া বেক্সিমকো গ্রুপের সাড়ে ১৮শ’ কোটি টাকা ঋণ পুনর্গঠনের অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ঋণ পরিশোধের জন্য আরও ১২ বছর সময় পেল গ্রুপটি। তবে আইন অনুযায়ী ঋণ পুনর্গঠনের সুবিধাপ্রাপ্ত কোম্পানি প্রথম তিন বছর বিনিয়োগকারীদের জন্য কোনো ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করতে পারবে না।

এছাড়া গ্রুপটির আরও প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা খেলাপি ঋণ পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া চলছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ম মাহফুজুর রহমান শেয়ারবাজারনিউজ ডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, যথাযথ নিয়ম মেনেই এই ঋণ পুনর্গঠনের অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

জানা যায়, এই পুনর্গঠিত ঋণের সুদহার কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হবে।

এর আগে বড় ঋণ খেলাপিদের ঋণ পরিশোধে বিশেষ সুযোগ দিতে ঋণ পুনর্গঠন নীতিমালা প্রণয়ন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত ২৮ জানুয়ারিতে বাংলাদেশ ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদের সভায় এই নীতিমালা অনুমোদন দেয়া হয়। এর মূল উদ্দেশ্য হলো ঋণ খেলাপিদেরকে ঋণ পরিশোধে দীর্ঘমেয়াদি সময় দেয়া। ঋণ পুনর্গঠনের আবেদন যাচাই-বাছাইয়ে করতে সাত সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নীতিমালা অনুমোদনের এক সপ্তাহ পর এবিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরপর থেকে ঋণ খেলাপি শিল্পগ্রুপগুলো তদের ঋণদাতা ব্যাংকগুলোতে ঋণ পুনর্গঠন করতে আবেদন করে। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে শিল্পগ্রুপগুলোর পক্ষে ঋণ পুনর্গঠন সম্মতির জন্য উপস্থাপন করে।গত ৩০ জুন ছিল বাংলাদেশ ব্যাংকে ঋণ পুনর্গঠন আবেদন জমা দেয়ার শেষ সময়। তবে এরপরও কয়েকদিন আবেদন নেয়া হয়। এ সময়ের মধ্যে শেষ পর্যন্ত ১৬টি শিল্প গ্রুপের পক্ষে সাড়ে ১৫ হাজার কোটি টাকার উপরে ঋণ পুনর্গঠনের আবেদন বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেয় বিভিন্ন ব্যাংক। এর মধ্যে বেক্সিমকো গ্রুপের পক্ষে জনতা ব্যাংকের করা ১ হাজার ৮৪৯ কোটির আবেদনটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বাকিগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, বেক্সিমকো গ্রুপটির কাছ থেকে ১ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট নিয়ে এই খেলাপি ঋণ ১২ বছরের জন্য পুনর্গঠনের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

নীতিমালা অনুযায়ী যেসমস্ত শিল্পগ্রুপের ৫০০ কোটি টাকার উপরে খেলাপি ঋণ রয়েছে তারা এসব ঋণ পরিশোধে মেয়াদি ঋণের ক্ষেত্রে ১২ বছর আর তলবী ও চলমান ঋণের মেয়াদ ধরা হয়েছে ৬ বছর সময় পাবেন। একই সঙ্গে এসব ঋণের সুদ হার কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হবে। ঋণ মঞ্জুরের সময় এর হার ছিল ১৫ থেকে ২০ শতাংশ করে। দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা, অবকাঠামো সমস্যা ও আন্তর্জাতিক বাজার প্রেক্ষাপটে যেসব প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে সময়মতো ঋণ পরিশোধ করতে পারছে না তাদের সুবিধার আওতায় আনা হবে বলে নীতিমালয় বলা হয়। এই নীতিমালার আওতায় সুবিধা পেতে চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত আবেদন করা যাবে।তবে ঋণ পুনর্গঠনের সুবিধাপ্রাপ্ত কোম্পানি প্রথম তিন বছর কোনো নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করতে পারবে না। এছাড়া প্রতারণা বা জালিয়াতির সাথে জড়িত কোন ঋণগ্রহীতা ঋণ পুনর্গঠনের সুযোগ পাবে না। যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে মামলা রয়েছে অথবা অন্য কোন আইনে অন্য কোন সংস্থায় মামলা তারাও এই পুনর্গঠন সুবিধা পাবে না। নীতিমালার আওতায় সুবিধা পেতে হলে একক বা গ্রুপভুক্ত ঋণগ্রহীতার বকেয়া ঋণের পরিমাণ কমপক্ষে ৫০০ কোটি টাকা হতে হবে। তবে একটি গ্রুপের একাধিক প্রতিষ্ঠান মিলে ৫০০ কোটি টাকা হলে সুবিধা পাবে।

উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৩ সালের রাজনৈতিক অস্থিরতায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যাংকের গ্রহীতাদের খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিলের ক্ষেত্রে নীতি সহায়তা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। সে সময় খেলাপি ঋণগ্রহীতাদের ডাউন পেমেন্টে (এককালীন জমা) ছাড় দেয়া হয়। গত বছরের জুনে এই সুবিধা শেষ হয়েছে। সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী, খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল করতে ঋণের মান অনুযায়ী ১০ থেকে ৩০ শতাংশ এককালীন জমা দিতে হয়। ওই বিশেষ ব্যবস্থায় ব্যবসায়ীরা মাত্র ৫ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল করেছে। এই বিশেষ সুবিধায় দেশের ব্যাংকিং খাতে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল করা হয়।

 

শেয়ারবাজারনিউজ/আ.ও/মু

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.