‘পোশাক শিল্পের মতো চামড়া শিল্পেও অপপ্রচার চলছে’
শনিবার সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে ‘চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য তৈরি পোশাকের পরবর্তী সম্ভাবনাময় শিল্প’ বিষয়ে দিনব্যাপী আলোচনা অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, হাজারীবাগের ট্যানারি থেকে বায়ুদূষণ, নদীদূষণ এবং পরিবেশ দূষণ হচ্ছে। ফলে এই শিল্প বিশ^বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। আর এটা নিয়ে অপপ্রচারও চলছে।
নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ট্যানারি স্থানান্তরের আহ্বান জানিয়ে ট্যানারি মালিকদের প্রতি শিল্পমন্ত্রী বলেন, নির্দিষ্ট সময় সীমার পরে হাজারীবাগে একটিও ট্যানারি রাখা হবে না। তাই আপনারা দ্রুত স্থানান্তরের ব্যবস্থা করেন। যত তাড়াতাড়ি এটা স্থানান্তর করবেন, ততই তাড়াতাড়ি আপনারা বিশ^বাজারে প্রবেশ করতে পারবেন। আর বিশ^বাজারে স্থান করে নিতে পারলে কোনোভাবেই এটা গার্মেন্টস থেকে পিছিয়ে থাকবে না।
শিল্পমন্ত্রী আরো বলেন, চামড়া শিল্প কাঁচামাল নির্ভর এক’শ ভাগ রপ্তানিমুখী একটি শিল্পখাত। এ শিল্পের সঙ্গে ২২০টিরও বেশি ট্যানারি, ৩ হাজার ৫০০ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প এবং ১১০টি বৃহৎ আকারের শিল্প জড়িত রয়েছে। এ সকল কারখানায় বছরে ২৫ কোটি বর্গফুটেরও বেশি চামড়া উৎপাদিত হয়। এটি একটি শ্রমঘন শিল্প। এখানে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ৭০ লাখ দক্ষ ও অদক্ষ লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। এদের অধিকংশই নারী শ্রমিক। এ শিল্পে ৯০ ভাগ মূল্য সংযোজনের সুযোগ রয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে- শিল্পমন্ত্রী বলেন, বর্তমান বিশ্বে ২৩০বিলিয়ন মার্কিন ডলারের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের বাজার রয়েছে। বাংলাদেশ বিশ^ চাহিদার মাত্র ১ভাগেরও কম পূরণ করছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাপানের বাজারে চামড়াজাত পণ্যের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। এছাড়া আমাদের অভ্যন্তরীণ বাজারেও ১৫০কোটি টাকার চামড়াজাত পণ্যের চাহিদা রয়েছে।
ট্যানারি স্থানান্তরে ক্ষতিপূরণের বিষয়ে তিনি বলেন, ট্যানারি স্থানান্তরে ক্ষতিপূরণ বাবদ ২৫০কোটি টাকা প্রদানের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। যেসব ট্যানারি মালিক ক্ষতিপূরণের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়েছেন, তারা দুই একদিনের মধ্যেই ক্ষতিপূরণের টাকা পাবেন।
অনুষ্ঠানটির আয়োজন করেন বিনিয়োগ বোর্ড।
বিনিয়োগ বোর্ডের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ এ সামাদের সভাপতিত্বে আলোচনা অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন- খাদ্যমন্ত্রী এডভোকেট কামরুল ইসলাম, সংসদ সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন, চামড়া শিল্প উদ্যোক্তা ও ট্যানারি মালিক, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।