আজ: শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ইং, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৭ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৬ জুলাই ২০১৫, রবিবার |

kidarkar

কোন অবস্থাতেই আর্থিক খাতের অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না:গভর্নর

Atiur_rahman-1428577529শেয়ারবাজার রিপোর্ট: দেশের আর্থিক ব্যবস্থাকে স্থিতিশীল রাখতে কোন অবস্থাতেই আর্থিক খাতের অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না।

আজ রোববার ২০১৪ অর্থবছরের ফাইন্যান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি রিপোর্টের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর ড. আতিউর রহমান এমন মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ব্যাংকে সুশাসন এবং অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংক নজরদারি আরো বাড়িয়েছে। আর এর জন্য কেন্দ্রিয় ব্যাংক নতুন কয়েকটি পরিদর্শন বিভাগ স্থাপন করেছে। এ বিভাগগুলোকে বৈদেশিক উৎস থেকে নেয়া ঋণ, পুন:অর্থায়নসহ সকল ঋণ সত্যিকার ব্যবহার বা ‘এন্ড ইউজ’ নিশ্চিত করার জন্য প্রযুক্তির ব্যবহার, প্রধান নির্বাহীর অঙ্গীকারনামাসহ যা যা করা দরকার তা যেন করা হয় সেদিকে আমাদের নজর রাখতে হবে।

খেলাপি ঋণ বিষয়ে গভর্নর বলেন, ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ আমাদের জন্য এখনো উদ্বেগের বিষয়। আর সেজন্য আমাদেরকে নিরলস প্রয়াস চালাতে হবে যাতে খেলাপি ঋণের হার দ্রুত সহনীয় মাত্রায় নামিয়ে আনা যায়।

ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের প্রতি নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, প্রকল্প পর্যায়ে খেলাপি ঋণ আদায়ের জন্য পুন:অর্থায়ন অযৌক্তিক। বরং যেসব খাত থেকে নিয়মিত আদায় করা যায় সেইসব খাতেই ঋণ দেয়ার ব্যাপারে আগ্রহী থাকতে হবে। আর এ বিষয়ে কেন্দ্রিয় ব্যাংক সবসময় পলিসি সাপোর্ট দিবে।

ব্যাংকিং খাতের তারল্য পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, ব্যাংকিং খাতে ২০১৪ সালে পর্যাপ্ত তারল্য পরিস্থিতি ছিল। ব্যাংকগুলোর হাতে যথেষ্ট পরিমাণে ঝুঁকিহীন সরকারি সিকিউরিটিজ থাকায় ব্যাসেল-৩ অনুসারে আন্তর্জাতিক সর্বোত্তম মানদন্ডে তারল্য সংরক্ষণে ব্যাংকগুলো উল্লেখযোগ্য মাত্রায় সক্ষমতা প্রদর্শন করছে। বর্তমানে ব্যাংকগুলোকে নতুন বিনিয়োগ সৃষ্টিতে আরো মনোযোগ দিতে হবে। এর জন্য ব্যাংকগুলোকে এসএমই খাতে অর্থায়নে মনোযোগী হতে হবে।

নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চলমান দুর্নীতি ও মূলধনের অপর্যাপ্ততা বিষয়ে তিনি বলেন, এতোদিন এসব প্রতিষ্ঠানের মূলধনের ব্যপক ঘাটতি ছিল। তবে কেন্দ্রিয় ব্যাংকের উদ্যোগের কারণে এখন প্রতিষ্ঠানগুলো এ সমস্যা অনেকটাই কাটিয়ে উঠেছে। আর অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধে নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য আলাদা পরিদর্শন বিভাগ খোলা হয়েছে। এই বিভাগ এসব প্রতিষ্ঠানের সকল কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করবে।

আমানতের বীমা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ২০১৯ সালের মধ্যে আমানতে বীমা প্রিমিয়াম ১ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত করা হবে। বর্তমানে এ বীমা বাবদ যে অর্থ রয়েছে তাতে ২৭টি ব্যাংকের দায়ভার বহন করা সম্ভব। তবে বর্তমানে এই বীমার আওতায় এক লক্ষ্ টাকা আমানতকারীর দায় বহন করা যায়। কেন্দ্রিয় ব্যাংক এই সংখ্যাকে দুই লক্ষ টাকায় উন্নীত করতে চায়। এর জন্য অর্থমন্ত্রণালয়েও প্রস্তাব করা হয়েছে। আর এর জন্য প্রয়োজনে আমানতে বীমা আইন সংশোধন করা হবে।

আর্থিক স্থিতিশীলতা অর্জনে নিয়ন্ত্রক সংস্থাদের সমন্বয়ের প্রতি গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি আর্থিক খাতে অবদান রাখে এমন প্রতিষ্ঠানের ভূমিকাও অনস্বীকার্য। এসব প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হয়। আবার একই প্রতিষ্ঠান একাধিক নিয়ন্ত্রক সংস্থার অধীনে থাকে। এ দ্বৈততা হ্রাস বা পরিহার করার লক্ষ্যে ‘সমন্বিত নজরদারি’ কাঠামো প্রবর্তনের কাজ বর্তমানে পুরোদমে এগিয়ে চলছে।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরীসহ অন্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীরা উপস্থিত ছিলেন।

 

শেয়ারবাজারনিউজ/আ/ও/সা

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.