চীনের শেয়ারবাজারে ৮ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পতন
শেয়ারবাজার ডেস্ক: চীনের শেয়ারবাজারে আট বছরের মধ্যে সূচকের সর্বোচ্চ পতন হয়েছে। শিল্পখাতে মুনাফা অর্জনের পরিমাণ আগের বছরের জুনের তুলনায় ০.৩ শতাংশ কমে যাওয়ার খবরে শেয়ারবাজারে বড় ধরনের দরপতনের ঘটনা ঘটে।
সোমবার দিন শেষে দেশটির প্রধান শেয়ারবাজার সাংহাই কম্পোজিটে সূচকের পতন ঘটে ৮.৫ শতাংশ। ফলে এটি ৩৫২৫.৫৬ পয়েন্টে নেমে আসে। ২০০৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের পর এটিই এক দিনে সূচকের সর্বোচ্চ পতন। সূত্র : বিবিসি, ব্লুমবার্গ।
সোমবার লেনদেন শেষে দেশটির সাংহাই ও সেনজেন শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ১৫০০ কোম্পানির শেয়ারের দর ১০ শতাংশ কমেছে।
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতির দেশটির শেয়ারবাজারে গত জুন মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে ধস নামতে শুরু করে। তিন সপ্তাহের মধ্যে দেশটির শেয়ারবাজারের সূচক ৩০ শতাংশে নেমে আসে। ফলে ৩ ট্রিলিয়ন ডলার হারায় কোম্পানিগুলো। ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৯ কোটি ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী। সরকার ও বাজার সংশ্লিষ্টদের নানা উদ্যোগের ফলে সে ধস থেকে বাজারের উত্তরণ ঘটে। ১৪০০ কোম্পানির লেনদেন স্থগিতের অনুমতি, সুদের হার কমান, বড় বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ, নতুন আইপিও অনুমোদন বন্ধ, শেয়ারক্রয়ে মার্জিন লোন সুবিধার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৪৮০ বিলিয়ন ডলার অর্থায়নসহ নানা উদ্যোগের কারণে ধস থেকে বের হতে সক্ষম হয় দেশটির শেয়ারবাজার।
জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে নেওয়া এ সব উদ্যোগের ফলে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে বাজার। হারান সূচকের ১৬ শতাংশের পুনরুদ্ধার ঘটে। বাজারে এক ধরনের স্থিতিশীলতা ফিরে আসে।
তবে সোমবার দেশটির পরিসংখ্যান ব্যুরো শিল্পখাতে মুনাফা কমে যাওয়ার বিষয়টি প্রকাশ করে। আর এমন খবরে দেশটির শেয়ারবাজারে বড় ধরনের আঘাত পরিলক্ষিত হয়।
এদিকে বাজার ধস ঠেকাতে সরকারের উদ্যোগের সমালোচনা করেছে আন্তজার্তিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। আইএমএফের এক শীর্ষ কর্তাব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বাজারকে তার নিজস্ব গতিতে চলতে দেওয়া উচিৎ। কোম্পানির শেয়ারের দর কি হবে বাজার-ই তা নির্ধারণ করবে। আইএমএফ কর্মকর্তার এমন বক্তব্যে শেয়ারবাজারের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে সরকারের পক্ষ থেকে যে সব সুবিধা দেওয়া হয়েছে সেগুলো প্রত্যাহার করা হতে পারে— এমন আশংকা দেখা দিয়েছে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে।
ডেল্টা এশিয়া সিকিউরিটিজের পরামর্শক চাই ইয়াং বলেন, যদি ওই সুযোগ প্রত্যাহার করা হয় তাহলে বাজারের পক্ষে কোনো ধরনের সাপোর্ট দেওয়া সম্ভব হবে না।
চীন সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, শেয়ারবাজারে সরকারের পদক্ষেপ সাময়িক। একদিকে শিল্পখাতে মুনাফা কমে যাওয়া অন্যদিকে সরকারের সহায়তা প্রত্যাহারের আশংকায় দেশটির শেয়ারবাজারে বড় ধরনের ধস নেমে এসেছে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতংক দেখা দিয়েছে। আর এ আতংকের কারণে তারা শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন।
শেয়ারবাজারনিউজ/অ/মু