আজ: বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ইং, ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৭ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০২ অগাস্ট ২০১৫, রবিবার |

kidarkar

মুদ্রানীতির সমালোচনায় ঢাকা চেম্বার

downloadশেয়ারবাজার রিপোর্ট: চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধের (জুলাই-ডিসেম্বর) জন্য যে সতর্কমূলক মুদ্রানীতি বাংলাদেশ ব্যাংক ঘোষণা করেছে তা বেসরকারিখাত বান্ধব হয়নি বলে মনে করছে ব্যবসায়ীদের সংগঠন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। রোববার মুদ্রানীতির বিষয়ে নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানাতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এ কথা জানানো হয়।

ডিসিসিআই বলছে, মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ২ শতাংশে নামিয়ে আনা এবং ৭ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে বাংলাদেশ ব্যাংক গত ৩০ জুলাই ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রথমার্ধের মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে। সার্বিকভাবে, অর্থবছরের প্রথমার্ধে ঘোষিত মুদ্রানীতি বেসরকারী খাতে ঋণ প্রবাহ এবং দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকে তেমন আকৃষ্ট করছে না; যেখানে দেশের বেসরকারি খাতে কমে যাওয়া বৈদেশিক বিনিয়োগ আরো উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ানো প্রয়োজন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বাংলাদেশের সরকারি ও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ঋণের সুদের হার আমাদের ক্ষুদ্র ও মাঝারী উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি অন্যান্য শিল্প উদ্যোক্তাদের জন্য সহায়ক নয়, যদিও বাংলাদেশ ব্যাংক বেসরকারি খাতে ১৫ শতাংশ ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। মুদ্রাস্ফীতির বিষয়টি অর্থনীতির অন্যান্য অনুষঙ্গের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকলেও ঋণের সুদের উচ্চ হার, ব্যবসা পরিচালন ব্যয় বৃদ্ধি এবং প্রস্তাবিত নতুন বেতন স্কেল বাস্তবায়নের কারণে মুদ্রাস্ফীতিকে আরো প্রভাবিত করার আশঙ্কা রয়েছে।

ডিসিসিআই মনে করছে, স্থানীয় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অব্যবস্থাপনা ও সক্ষমতার অভাবে বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা বৈদেশিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ঋণ নিতে আগ্রহী হচ্ছে, যা দেশীয় আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর দুর্বলতা ও সীমাবদ্ধতাকে চিহ্নিত করে।

ডিসিসিআই আর জানায়, সদ্যসমাপ্ত অর্থবছরে আমদানির হার ১২ শতাংশ বেড়েছে, যেখানে রপ্তানির প্রবৃদ্ধি বেড়েছে প্রায় ৩ দশমিক ৩ শতাংশ হারে। মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্যমানের ক্রমাগত ওঠানামার ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বাড়তে পারে। এক্ষত্রে আমদানি ব্যয় বৃদ্ধির বিষয়টি রপ্তানি আয় কমে যাওয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
প্রস্তাবিত মুদ্রানীতিতে ব্যাংকিং খাতের শ্রেণীভুক্ত ও খেলাপি ঋণ আদায় এবং তা সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনার লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট কোনো দিক-নির্দেশনা নেই।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, দেশের উৎপাদনশীল খাতগুলো কম সুদে ঋণ সুবিধা পাবে কিন্তু আর্থিক খাত ও অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গগুলো যতক্ষণ পর্যন্ত স্থিতিশীল না হবে, আগামী ছয়মাসে এ ব্যবস্থার তেমন সুফল পাওয়া যাবে না।

ঢাকা চেম্বার মনে করে, ২০৩০ সালের মধ্যে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ডাবল ডিজিটে উন্নীত করা এবং ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার জন্য ৮ শতাংশ হারে জিডিপি প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে শিল্পায়ন তরান্বিতকরণের পাশাপাশি আর্থিক ব্যবস্থায় আরো গতি সঞ্চার করতে হবে। এর পাশাপাশি সুদের হার কমানো এবং ব্যবসায় পরিচালন ব্যয় হ্রাসের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে হবে।

ঘোষিত মুদ্রানীতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক এ অর্থবছরে সরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ২৩ দশমিক ৭ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে। অর্থমন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ ইতোমধ্যে ব্যাংকিং খাত থেকে সরকারের মাত্রারিক্ত ঋণ নেয়ার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এ বছরের জুলাইয়ের ২২ তারিখ পর্যন্ত এ ঋণের পরিমাণ ছিল প্রায় ২৮ হাজার কোটি টাকা।

ঢাকা চেম্বার মনে করে, বিদ্যমান খেলাপি ঋণের বিষয়টি সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। ব্যাংক ঋণের সুদের হার কামানো হলে, দেশীয় ও বিদেশি বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে। তাছাড়া ক্রমবর্ধমান উন্নয়ন সম্ভাবনা, দীর্ঘমেয়াদী অভিক্ষেপ ও উৎপাদনশীল খাতে অধিক কর্মসংস্থান সৃষ্টির বিষয়গুলো প্রকৃত অর্থে মুদ্রানীতিতে প্রতিফলিত হয়নি।

 

শেয়ারবাজারনিউজ/অ/মু

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.