বিএসইসির নিষ্ক্রিয়তা: হাক্কানী পাল্পে ফের কারসাজি!
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নিষ্ক্রিয়তার সুযোগ নিয়ে আবার কারসাজি শুরু হয়েছে হাক্কানী পাল্পের শেয়ারে। টানা চার কার্যদিবস ধরে কোম্পানির শেয়ার দর কোনো কারন ছাড়াই বাড়ছে। এর মধ্যেই কোম্পানির শেয়ার দর ১৫.৮১ শতাংশ বেড়ে সর্বশেষ ৫১.২০ টাকায় লেনদেন হয়।
নির্ধারিত সময়ে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ না হওয়ায় এবং আগের বার কারসাজির সাথে জড়িত ব্যাক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিতে পারায় এমনটা ঘটছে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে চলতি বছরের জুনে কোম্পানির বিরুদ্ধে তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
কারখানায় সামান্য উৎপাদন বৃদ্ধির খবরে মাত্র ১৪ কার্যদিবসে কোম্পানির শেয়ারদর তিন গুণ হয়ে যায়। এর নেপথ্যে কোনো কারসাজি আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখতে গত ৩০ জুন কমিশনের উপ-পরিচালক গোলাম কবীর ও মো. শামসুর রহমানের সমন্বয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। পরবর্তী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে এ-সংক্রান্ত তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশনা ছিল।
সর্বশেষ ৮ আগস্ট নিয়ন্ত্রক সংস্থা কমিটির প্রতিবেদন জমা দেয়ার মেয়াদ বাড়িয়ে ১১ আগস্ট পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়। এর পর থেকে নিয়ন্ত্রক সংস্থা এ ব্যাপারে আর কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় কারসাজি চক্র থেকে যায় পর্দার অন্তরালে। আর এ কারনেই আবারও মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই কোম্পানির শেয়ার দর কারসাজি করে বাড়ানোর অভিযোগ উঠছে।
নিয়ন্ত্রক সংস্থার তদন্তের খবরের পর থেকেই আবার কোনো ধরনের মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই দর কমতে শুরু করে কোম্পানির শেয়ারের। এর মধ্যেই সাধারন বিনিয়োগকারীরা এ শেয়ারে বিনিয়োগ করে লোকসান গুনেছেন। তাই বিএসইসি’র নিষ্ক্রিয়তাকেই দোষারোপ করছেন তারা। নির্ধারিত সময়ে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ হলে এবং কারসাজির সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিলে আবার কারসাজির আশঙ্কা দেখা যেত না।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের জন্য ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয় হাক্কানি পাল্প। এ সময় কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয় ০.৪০ টাকা, শেয়ার প্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) ৩০.০৭ টাকা ও কর-পরবর্তী মুনাফা ৭৬ লাখ ৩০ হাজার টাকা। ২০১৩ সালেও ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয় কোম্পানিটি। ওই সময় ইপিএস ছিল ০.৫১ টাকা, এনএভিপিএস ৩১.০১ টাকা ও কর-পরবর্তী মুনাফা ৯৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা।
এদিকে প্রথমার্ধে এ কোম্পানির মুনাফা হয়েছে ৪০ লাখ ১০ হাজার টাকা, এক বছর আগে যা ছিল ২৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা।
২০০১ সালে তালিকাভুক্ত হাক্কানি পাল্পের অনুমোদিত মূলধন ৫০ কোটি টাকা ও পরিশোধিত মূলধন ১৯ কোটি টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ ৩৮ কোটি ১৪ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ১ কোটি ৯০ লাখ। এর মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালক ৫৭.০৩ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ৮.৫১ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে ৩৪.১৯ শতাংশ শেয়ার।
সর্বশেষ নিরীক্ষিত মুনাফা ও বাজারদরের ভিত্তিতে এ শেয়ারের মূল্য আয় (পিই) অনুপাত ১২৬.০৫।
শেয়ারবাজারনিউজ/রু