ইবনে সিনার শেয়ারদর নিয়ে খোদ কোম্পানিরই বিস্ময়!
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: কোনো ধরনের মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই ঔষধ ও রসায়ন খাতের ইবনে সিনার শেয়ার বাড়া নিয়ে খোদ কোম্পানি কর্তৃপক্ষই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। বিগত দু বছরে কোম্পানির শেয়ারদর সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। এমনকি বিগত দু মাসে কোম্পানির শেয়ারদর ক্রমাগত বাড়ছে।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা সূত্রে জানা যায়, কোম্পানির অভ্যন্তরীণ কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীও কোম্পানির শেয়ার দর বাড়ার পেছনে ইন্ধন দিচ্ছে। যদিও কোম্পানির পক্ষ থেকে এ তথ্য স্বীকার করা হয়নি।
বিগত দুইমাসে কোম্পানির শেয়ার দর ৮৭.৩০ টাকা থেকে বেড়ে সর্বশেষ কার্যদিবসে ১৬৬.৫০ টাকা দরে লেনদেন হয়। অর্থাৎ মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ার দর ৮৯ শতাংশ বেড়েছে। বিগত দু বছরে এর আগে কোম্পানির শেয়ার দর গত বছরের অক্টোবরে ১৪০ টাকা ছিল।
উল্লেখ্য, গত এক বছরে কোম্পানির চারজন উদ্যোক্তা ১৮ হাজার ৯৭৬ শেয়ার বিক্রি করেছে। আর ১১ হাজার শেয়ার কিনেছেন একজন উদ্যোক্তা।
অথচ কোম্পানির পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের মূল্য সংবেদনশীল তথ্য জানা যায়নি। কোম্পানি কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে জানা যায়, কোম্পানির মূল্য সংবেদনশীল কোনো ধরনের তথ্য নেই। কমপ্লায়েন্স জনিত কারনে একটি প্রকল্প চলছে যা শেষ হলে কোম্পানির আয়ে খুব একটা প্রভাব পড়বে না। প্রতি বছরের আর্থিক প্রতিবেদনে এ সংক্রান্ত তথ্য হালনাগাদও করা হচ্ছে।
কোম্পানির প্রান্তিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, সর্বশেষ প্রকাশিত দ্বিতীয় প্রান্তিকের (এপ্রিল’১৫-জুন’১৫) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ি, কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১.৩১ টাকা যা আগের বছরের একই সময়ে ১.০০ টাকা ছিল। অন্যদিকে ছয়মাসের হিসেবে কোম্পানির ইপিএস হয়েছে ২.৪১ টাকা যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১.৬৮ টাকা।
কোম্পানির আয়ের হিসেবে দেখা যায়, গত অর্থ বছরে যেখানে কোম্পানির কর পরিশোধের পর মুনাফা হয়েছিল ১২ কোটি ৭২ লাখ ৮০ হাজার টাকা। সেখানে এ বছরের ছয়মাসে ৫ কোটি ৪০ লাখ ৬ হাজার টাকা। আনুপাতিক হারে বিবেচনা করলে কোম্পানির মুনাফার পরিমান বাড়ার কোনো সম্ভবনা নেই। তারপরও কোম্পানির শেয়ারদরে এ উল্লম্ফনকে সন্দেহের চোখ দেখছে খোদ কোম্পানি কর্তৃপক্ষই।
কোম্পানির শেয়ার দরের এমন বৃদ্ধির কারন জানতে চাইলে প্রধান হিসাবরক্ষন কর্মকর্তা মো: জাসিম উদ্দিন শেয়ারবাজারনিউজ ডট কমকে বলেন, ‘ইবনে সিনার অপ্রকাশিত কোনো ধরনের মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই। কোম্পানির মুনাফায় খুব বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে এমন কথাও বলা যাচ্ছে না।’ তারপরও কোম্পানির শেয়ার দরের এমন বাড়ার কারন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ইবনে সিনার বেশিরভাগ শেয়ারই ইবনে সিনা ট্রাস্টের মালিকানায় রয়েছে। বাজারে মাত্র ১০ কোটি মত শেয়ার লেনদেন হতে পারবে। ফলে আমার আশঙ্কা কোনো গোষ্ঠী কারসাজির মাধ্যেমে কোম্পানির শেয়ারদর বাড়াচ্ছে।’ কোম্পানির অভ্যন্তরীন কেউ এমন কার্যকলাপের সাথে জাড়িত কি না এ আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘কোম্পানির কেউই নিয়মানুযায়ি বেশি শেয়ার হাতে রাখতে পারেন না। এবং কোম্পানির কেউ শেয়ার লেনদেনের সাথে ওতপ্রতভাবে জাড়িত এ তথ্যও সম্ভবত ঠিক না।’
শেয়ারবাজারনিউজ/ওহসি