আজ: বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২১ সেপ্টেম্বর ২০১৫, সোমবার |

kidarkar

৫ বছরেও বীমা আইনের ইংরেজি অনুবাদ হয়নি

insuranceশেয়ারবাজার রিপোর্ট: বীমা আইন ২০১০ এর ইংরেজি অনুবাদ দীর্ঘ ৫ বছরেও সরকার করতে পারেনি। এ কারণে রি-ইন্স্যুরেন্স (পুন:বীমা) বাবদ বিদেশি কোম্পানিগুলোর সাথে বীমা বিষয়ক চুক্তি কিংবা অন্য কোন কাজের ক্ষেত্রে দেশীয় বীমা কোম্পানিগুলোকে চরম বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে  বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

আজ ২১ সেপ্টেম্বর বীমা কোম্পানিগুলোর মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশনের (বিআইএ) সাথে ইন্স্যুরেন্স রিপোটার্স ফোরামের (আইআরএফ) মত বিনিময় সভায় বক্তারা এমন সঙ্কটের কথা সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন।

এ বিষয়ে প্রাইম ইসলামি লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা কে এম মোর্তুজা আলী বলেন, বীমা আইনে ২ বছরের মধ্যে ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশের বাধ্যবাধকতা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনো আইনটির ইংরেজি অনুবাদ হয়নি।

তিনি আরো বলেন, পুন:বীমাসহ অন্যান্য বিষয়ে বিদেশি বীমা কোম্পানিগুলোর সাথে আমাদের কাজ করতে হয়। সেক্ষেত্রে যেহেতু বিদেশিরা বাংলা বোঝেন না তাই তারা আমাদের বীমা বিধির ইংরেজি অনুবাদ দেখতে চান। কিন্তু বীমা আইনের ইংরেজি অনুবাদ না থাকায় তাদের সাথে কোন চুক্তি কিংবা ব্যবসায়িক আলোচনার ক্ষেত্রে আমাদেরকে চরম বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। তাছাড়া আমরা চাইলেও এ আইনের ইংরেজি অনুবাদ করতে পারিনা। তাই চলমান জটিলতা এড়াতে সরকারকে শিগগিরই এ বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

প্রসঙ্গত, বীমা আইন ২০১০ এর ১৫৯ ধারার ১ উপ-ধারায় বলা হয়েছে, এই আইন কার্যকর হওয়ার পর সরকার, অনধিক ২ বছরের মধ্যে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের বাংলা পাঠের ইংরেজি অনূদীত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ প্রকাশ করবে।

এদিকে বাংলাদেশে একটি বিদেশি জীবন বীমা কোম্পানি বীমা ব্যবসা পরিচালনা করছে। আরোও কিছু বিদেশি বীমা কোম্পানি এদেশে বীমা ব্যবসার অনুমোদন পেয়েছে। তাছাড়া পুন:বীমা বিষয়ে বিদেশি বীমা কোম্পানিগুলোর সাথে দেশিয় বীমা কোম্পানিগুলোর গুরুতর সম্পর্ক রয়েছে।

এদিকে মত বিনিময় সভায় কর্ণফুলি ইন্স্যুরেন্সের ভাইস চেয়ারম্যান নাসির উদ্দীন আহমেদ বলেন, আমাদের দেশে বীমা ব্যবসার ইতিহাস দীর্ঘ দিনের হলেও এ খাতে এখনো স্বচ্ছ জনমত তৈরি হয়নি। তাই বীমার প্রতি জনগণের আগ্রহ বাড়াতে আমাদেরকে তথ্য নির্ভর বিভিন্ন সভা সেমিনারের আয়োজন বাড়াতে হবে। আর এ বিষয়ে গণমাধ্যম কর্মীরাই বীমা খাতের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে। তাই তথ্যে অবাধ সরবরাহের জন্য আমরা বিআএ এর পক্ষ থেকে মিডিয়া উইং গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করবো।

অপরদিকে রূপালী ইন্স্যুরেন্সের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা পি কে রয় বলেন, উন্নত বিশ্বের অর্থনীতিতে বীমা খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। অথচ আমাদের দেশের জিডিপিতে বীমার অবদান খুবই নগন্য। জিডিপি-তে জীবন বীমার অবদান মাত্র ০.৭০ শতাংশ এবং নন-লাইফে মাত্র ০.২০ শতাংশ। তাছাড়া বীমার প্রতি জনসাধারণের নেতিবাচক ধারণা রয়েছে। অথচ বীমার মাধ্যমে জনসাধারণের জীবন ও সম্পদের ঝুঁকি নিরাময় করা সম্ভব। তাই বীমা খাতের উন্নয়নে ও জিডিপি-তে বীমার অবদান বাড়াতে সরকারকেই কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

মত বিনিময় সভায় বিআইএ এর চেয়ারম্যান শেখ কবির হোসেন বলেন, আমাদের দেশে বীমার উপযোগীতা নিয়ে এখনো জনসচেতনতা গড়ে উঠেনি। এমনকি সরকারও নিজের সম্পদের ঝুঁকি নিরসনে বীমার সহায়তা নিচ্ছে না। অথচ বাংলাদেশে সম্পদের বীমা করার জন্য আইন রয়েছে। কিন্তু আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগ নেই। আর এসব ক্ষেত্রে আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগ থাকলে এ দেশে অবকাঠামো খাতে বড় বড় দুর্ঘটনাগুলো ঘটতো না। তাই সরকারকে আইন করে সম্পদের বীমা করার বাধ্যবাধকতা রাখতে হবে এবং আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।

 

শেয়ারবাজারনিউজ/অ/মু

 

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.