আজ: বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ইং, ৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৭ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫, বৃহস্পতিবার |

kidarkar

ঈদে কোলেস্টেরল থেকে বাঁচতে যা করবেন

Beef Fatশেয়ারবাজার ডেস্ক: রোজার ঈদের তুলনায় কোরবানির ঈদে তেল জাতীয় খাবারের আধিক্য একটু বেশিই থাকে। এই সুযোগে চর্বি অতি সহজেই আমাদের রক্তে বাসা বাধতে সুযোগ পায়। যার ফলে রক্তে কোলেস্টেরল এর মাত্রা বেড়ে যায়। আর ডাক্তারী বিদ্যামতে কোলেস্টেরল হলো রক্তের প্রধান শত্রু। এই কোলেস্টেরল বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় হৃৎপিন্ডের মাংসপেশীকে নিষ্ক্রিয় করে ব্যক্তিকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়। আর এ কারণেই অতিরিক্ত তেল চর্বি জাতীয় খাবার খাওয়ার আগে একটু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।

যাদের রক্তে কোলেস্টেরল এর মাত্রা বেশি অথবা বিপদ সীমার কাছাকাছি তাদের এসকল খাবার বেশি না খাওয়াই উত্তম। বয়স চল্লিশের ঘর পার হওয়ার পর রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ জেনে নেওয়া ভালো। নাহলে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল ব্যক্তিকে নীরবে মৃত্যুর মুখে ঠেলে নিয়ে যাবে।

ডাক্তারী বিজ্ঞানমতে, মানুষের দেহের যাবতীয় কর্মকান্ড পরিচালনাকারী হৃৎপিন্ড ও মস্তিষ্ককে এই কোলেস্টেরল ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। হৃৎপিন্ডের হার্ট এ্যাটাক ও ব্রেন স্ট্রোক এর জন্য কোলেস্টেরল-ই দায়ী। রক্তে কোলেস্টেরল এর মাত্রা কতটুকু হলে তা নিরাপদ সেটি নিয়েও বিভিন্ন ধরনের বিভ্রান্তি লক্ষ্য করা যায়। কারো মতে রক্তে সর্বমোট কোলেস্টেরল এর মাত্রা ২০০ মি.গ্রাম/ডিএল থাকলে সেটাকে নিরাপদ মনে করা যায়। আদতে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের মত পুরোপুরি ভিন্ন। তাদের মতে, সর্বমোট কোলেস্টেরল এর মাত্রা যদি ১৫০ মি.গ্রাম/ডিএল এর নিচে থাকে তাহলেসেটাকে নিরাপদ মনে করতে হবে।

সাধারণত যাদের রক্তে কোলেস্টেরল এর মাত্রা ১৫০ মি.গ্রাম/ডিএল এর নিচে থাকে তাদের হার্ট এ্যাটাক করার তেমন কোনো সম্ভাবনা নেই। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে যাদের দেহের রক্তে কোলেস্টেরল এর পরিমাণ ১৫০ থেকে ২০০ মি.গ্রাম/ডি.এল এর মধ্যে থাকে তাদের হার্ট এ্যাটাকের সম্ভাবনা কোলেস্টেরল এর মাত্রা ৩০০ এর চেয়েও অধিক হতে পারে। আমেরিকার এক গবেষণায় দেখা গেছে যেসব লোকের রক্তে কোলেস্টেরল এর মাত্রা ১৫০-২০০ মি.গ্রাম/ডিএল এর মধ্যে রয়েছে তাদের মধ্যে শতকরা প্রায় ৩৫ শতাংশ লোক হার্ট এ্যাটাকে আক্রান্ত হয়ে থাকেন।

কোলেস্টেরল নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এর দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার আগেই পরীক্ষা করে নিন আপনার হাইডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন। পরীক্ষার রিপোর্ট থেকে নিশ্চিত হোন আপনার রক্তের কোলেস্টেরল এর মাত্রা সম্পর্কে। পরীক্ষার রিপোর্টে যদি এইচএলডি-এর মাত্রা ৪-এর নিচে থাকে তাহলে আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন। হার্ট এ্যাটাক আপনার ধারেকাছেও ভিড়তে পারবে না।

আবার ডাক্তারী বিজ্ঞানমতে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে রক্তে কোলেস্টেরল এর পরিমাণ ২০০ মি.গ্রাম/ডিএল হলেও ভয় পাওয়ার তেমন কোনো কারণ নেই। যদি সেই ব্যক্তির রক্তে উচ্চমাত্রার এইচডিএল/ভালো জাতের কোলেস্টেরল থাকে। এসব কোলেস্টেরল হার্ট এ্যাটাকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সক্ষম। তবে কোলেস্টেরল এর মাত্রা ২০০ মি.গ্রাম/ডিএল স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ঝুকিপূর্ণ।

কোলেস্টেরল থেকে বাচার উপায়: এই ঈদে কোলেস্টেরল থেকে বাচতে হলে আমাদের সচেতনতার চেয়ে বড় কোনো সমাধান নেই। মাংস কাটার সময় মাংসের উপরের দিকে চর্বি কেটে আলাদা করে নিতে হবে। অবশ্য রান্নার আগে মাংসগুলোকে আগুনে কিছুক্ষণ ঝলসে নিলে মাংস থেকে অতিরিক্ত চর্বি আলাদা হয়ে যায়। এছাড়া মাংস ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করেও মাংস থেকে চর্বি আলাদা করা যায়।

আমাদের দেহের রক্তে কোলেস্টেরল বৃদ্ধির জন্য শুধামাত্র মাংসের চর্বিই দায়ী নয়। এছাড়া ঘি, বাটার অয়েল, ডিমের কুসম প্রভৃতিও রক্তে কোলেস্টেরল বৃদ্ধির জন্য দায়ী। তাই ঘি ও বাটার অয়েলের পরিবর্তে রান্নায় যতটা সম্ভব সয়াবিন তেল বা পাম অয়েল তেল ব্যবহার করতে হবে।

ডিমের তৈরি যেকোনো খাবার থেকে কুসুম বাদ দিতে হবে। এছাড়া প্রচুর পরিমাণে সবুজ শাক-সবজি ও ফলমূল রক্তে কোলেস্টেরল এর পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন ১০ গ্রাম পরিমাণ দ্রবণীয় আশযুক্ত খাবার খেলে রক্তের ৫-১০ ভাগ কোলেস্টেরল কমে যায়। তাই আসুন কোলেস্টেরল নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন না হয়ে এ সম্পর্কে সচেতন হই। যতটা সম্ভব পশুচর্বি বর্জন করে চলি এবং সবুজ শাক- সবজি ও ফলমূল খাওয়ার পরিমাণ বাড়িয়ে দেই।

শেয়ারবাজারনিউজ/রু

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.