অপরাধ দমনে নমনীয় বিএসইসি
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: তালিকাভুক্ত কোম্পানির বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি, কারসাজিসহ বিভিন্ন অপরাধ দমনে নমনীয় ভূমিকা পালন করছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। কোম্পানিগুলো তাদের দাখিলকৃত অভিযোগের বিপরীতে যুক্তি উস্থাপন বা ভুলের ক্ষমা প্রার্থনা করলে জরিমানার পরিমাণ কমানোর পাশাপাশি অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিচ্ছে বিএসইসি।
বিষয়টি কোম্পানির জন্য সুখকর হলেও পুঁজিবাজারের স্বচ্ছতা আনয়নে বিএসইসির ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ছে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, শাহজিবাজার পাওয়ারের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা ভুলন ভৌমিককে ৩ লাখ টাকা জরিমানা করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। কিন্তু এ কর্মকর্তার আপিলের প্রেক্ষিতে জরিমানা ৩ লাখ টাকা থেকে এক লাখ টাকা কমিয়ে ২ লাখ টাকা নির্ধারণ করেছে বিএসইসি।
বিএসইসির এনফোর্সমেন্ট সূত্র জানায়, চলতি বছরের ২৮ জুন শাহজিবাজার পাওয়ারের প্রধান অর্থ কর্মকর্তাকে ২০১৩-২০১৪ হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকের মুনাফা কারসাজি করে বেশি দেখানোর অপরাধে ৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এর বিরুদ্ধে অভিযুক্ত কর্মকর্তা আপিল করেন। এ প্রেক্ষিতে বিএসইসি এ কর্মকর্তার জরিমানা এক লাখ টাকা কমিয়ে ২ লাখ টাকা নির্ধারণ করে আগামি ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে টাকা পরিশোধের নির্দেশ দিয়ে চিঠি দেয়। গত ২০ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত কর্মকর্তার কাছে এ চিঠি পাঠানো হয়।
এর আগে শাহজিবাজার পাওয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও পরিচালনা পর্ষদের অন্য সদস্যদের বিএসইসি চলতি বছরের গত ৭ জুলাই ৯ লাখ টাকা জরিমানা মওকুফ করে আগামি ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে বাকি টাকা পরিশোধের জন্য নির্দেশ দেয়। এর মধ্যে ব্যবস্থাপনা পরিচালককে এক লাখ টাকা এবং প্রত্যেক পরিচালককে ২ লাখ টাকা মওকুফ করা হয়।
এর পরে গত ১৩ জুলাই আবারো জরিমানার টাকা মওকুফের জন্য আবেদন করে তারা। এ আবেদনের প্রেক্ষিতে বিএসইসি ৫০ শতাংশ অর্থ অর্থাৎ ৪ লাখ টাকা আগামি ২৯ আগস্টের মধ্যে পরিশোধের নির্দেশ দেয়। কিন্তু বাকি ৫০ শতাংশ অর্থ পরিশোধের কোন সময়সীমা দেয়নি বিএসইসি।
উল্লেখ্য, কারসাজির অভিযোগে শাহজিবাজার পাওয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফিরোজ আলমকে ৫ লাখ টাকা, পরিচালক রেজাকুল হায়দারকে ১০ লাখ টাকা, একেএম বদিউল আলমকে ১০ লাখ টাকা, মো: শামসুজ্জামানকে ১০ লাখ টাকা এবং আনিস সালাহউদ্দিন আহমদকে ১০ লাখ টাকা ও প্রধান অর্থ কর্মকর্তা ভুলন ভৌমিককে ৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
শাহজিবাজার ইস্যুতে বিএসইসি’র এমন নমনীয় মনোভাব হতাশাজনক বলে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা।
তাদের মতে, অপরাধীদের প্রতি বিএসইসি’র এমন নমনীয় মনোভাব এ ধরণের অপরাধকেই উৎসাহ যোগাবে। পুঁজিবাজারের শৃঙ্খলা রক্ষায় অপরাধীদের প্রতি নমনীয় না হয়ে বিএসইসি’কে আরো কঠোর হওয়া প্রয়োজন।
এদিকে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনকে (বিএসসি) সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে বিএসইসি। সেপ্টেম্বরের ২০ তারিখে এ বিষয়ে একটি চিঠি কোম্পানির কাছে পাঠায় বিএসইসি।
এদিকে যদি কোম্পানি সত্যিকার অর্থেই আইন লঙ্ঘন না করে থাকে তাহলে কেন কোম্পানির বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। আর পরবর্তীতে আবার সেই অভিযোগ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে-এমন প্রশ্ন বাজার সংশ্লিষ্টদের।
শেয়ারবাজারনিউজ/অ/মু/ম.সা