সুদহার না বাড়ানোর সিদ্ধান্তে উর্ধ্বমুখী এশিয়ান শেয়ারবাজার
শেয়ারবাজার ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক (ইউএস ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক) সুদহার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসায় এশিয়ান শেয়ারবাজারের সূচকে উর্ধ্বমুখী প্রবণতা বিরাজ করছে।
এরই ধারাবাহিকতায় গত শুক্রবার (১৬ অক্টোবর) এশিয়ার প্রধান প্রধান দেশগুলোর শেয়ারবাজারের সূচক বেড়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ফেডারেল রিজার্ভ সুদহার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে। তাই শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বেড়েছে। কারণ ফেডারেলের এমন সিদ্ধান্তে বিশ্ব বিশেষ করে এশিয়া অঞ্চলের অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তবে বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে এর কোন প্রভাব পড়েনি। বরং বৃহষ্পতিবার সপ্তাহের শেষদিন দেশটির প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩৯ পয়েন্ট কমেছে। এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে দেশটির বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সংশয় রয়েছে। তাই নতুন ও চলমান বিনিয়োগে মন্দাভাব রয়েছে।
জাপান পুঁজিবাজারের প্রধান সূচক নিক্কি ইনডেক্স শুক্রবার ১.০৮ শতাংশ বেড়ে ১৮ হাজার ২৯১ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ফেডারেল ব্যাংকের এমন সিদ্ধান্তের কারণে ডলারের বিপরীতে ইয়েনের (জাপানি মুদ্রা) দর কমে যাওয়ায়েএর ইতিবাচক প্রভাব সে দেশটির শেয়ারবাজারে পড়েছে।
তাদের মতে, বর্তমানে টোকিওতে ১১৯.১২ ইয়েন দরে ডলার কেনা হচ্ছে। নিউইয়র্কে এ দর ছিল ১১৮.৮৮ ইয়েন। তাই ইয়েনের এমন দরপতনের কারণে জাপানে উৎপাদিত পণ্য বিদেশি পণ্যের তুলনায় অনেক শস্তায় পাওয়া যাচ্ছে। এতে দেশটির রপ্তানিও বাড়বে।
অন্যদিকে, এশিয়ার মধ্যে হংকং শেয়ারবাজারের প্রধান সূচক হ্যাংস্যাং ইডেক্স ০.৮ শতাংশ বেড়ে ২৩ হাজার ৬৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এদিকে চিনের শেয়ারবাজারের প্রধান সূচক সাংহাই কম্পোজিট রোজ ১.৬ শতাংশ বেড়ে ৩ হাজার ৩৯১ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফেডারেল রিজার্ভের এমন সিদ্ধান্তে চীনের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীরা্ আবারও সক্রিয় হয়ে উঠছে। এ ধারা বজায় থাকলে চীন গত সপ্তাহের বাজার ধস কাটিয়ে উঠতে পারবে।
এ বিষয়ে আইজি মার্কেটের গবেষক আনগুস নিকলসন বলেন, চাইনিজ ইক্যুইটি মার্কেট ধস কাটিয়ে ইতিবাচক ধারায় ফিরে আসছে।
তিনি বলেন, অক্টোবরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত সাংহাই কম্পোজিট ইনডেক্স ৯.৩ শতাংশ বেড়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ব প্রতিষ্ঠানগুলো পুনর্গঠন ও ১৩তম পঞ্চবার্ষিকি পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে চীন সরকারের এমন সিদ্ধান্তের ইতিবাচক প্রভাব দেশটির শেয়ারবাজারে পড়েছে।
এদিকে অস্ট্রেলিয়ার শেয়ারবাজারের প্রধান সূচক এস এন্ড পি/এএসএক্স২০০ ০.৭৩ শতাংশ বেড়ে ৫ হাজার ২৬৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে। তবে তালিকাভুক্ত ব্রিটিশ-অস্ট্রেলিয়ান মাইনিং জায়ান্ট রিও টিন্টো কোম্পানির শেয়ারদর এক শতাংশ কমেছে। কিন্তু গত তিনমাসে কোম্পানিটির আকরিক লোহা উৎপাদন ও বিপনন উল্লেখযোগ্য গারে বেড়েছে। এ বিষয়ে কোম্পানিটির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, গত তিন মাসে আকরিক লোহার চালান ১৭ শতাংশ বেড়েছে। যদিও অন্য পন্যগুলো যেমন কয়লা এবং লোহার দর পড়ে গেছে। আর এর প্রভাব শেয়ারবাজারে পড়েছে।
অন্যদিকে এশিয়ান প্রধান দেশগুলোয় শেয়ারবাজার সূচক বাড়লেও দক্ষিণ কোরিয়ার শেয়ারবাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। পরিণতিতে দেশটির প্রধান সূচক কসপি ইনডেক্স ০.১৫ শতাংশ কমে ২ হাজার ৩০ পয়েন্টে অবস্থান করছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশটির রপ্তানি বাণিজ্যের প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অস্থিরতা বিরাজ করছে।
সূত্র:বিবিসি
শেয়ারবাজারনিউজ/অ/মু