আসছে ব্যাংক-বীমার ডিভিডেন্ড জোয়ার: শেয়ারবাজারে স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত
শেয়ারবাজার রিপোর্ট : টানা ৬ কার্যদিবস ধরে শেয়ারবাজারে সূচকের ঊর্ধ্বগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দৈনিক লেনদেন এবং বাজার মূলধনেও রয়েছে ইতিবাচক প্রভাব। এদিকে তালিকাভুক্ত সব ব্যাংক-বীমার আর্থিক হিসাব বছর শেষ হয়েছে ডিসেম্বর মাসে। চলতি মাসের শেষের দিকে এসব প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি অন্যান্য ডিসেম্বর ক্লোজিং কোম্পানিগুলোর ডিভিডেন্ডের ঘোষণা আসতে শুরু করবে । যার ইতিবাচক প্রভাব শেয়ারবাজারে পড়বে। এরই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে শেয়ারবাজারে স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত বহন করছে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, দেশের রাজনৈতিক সংকটের কারণে গত জানুয়ারি মাসে শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে । চলতি বছরের শুরুতে অর্থাৎ ১ জানুয়ারি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক ৪ হাজার ৯৪১.৫২ পয়েন্টে দাঁড়ায়। এদিন ডিএসইতে বাজার মূলধনের পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ২৯ হাজার ৩৫৬ কোটি ৬৩ লাখ ৮৭ হাজার টাকা। অন্যদিকে জানুয়ারি মাসের শেষদিকে ২৯ জানুয়ারি ডিএসইতে সূচক ৪ হাজার ৭২৪.০৪ পয়েন্টে দাঁড়ায়। এদিন বাজার মূলধনের পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ১৭ হাজার ৭৬৯ কোটি ৭৭ লাখ ৯৬ হাজার টাকা। অর্থাৎ জানুয়ারি মাসে ডিএসইর ব্রড ইনডেক্স কমেছে ২১৭.৪৭ পয়েন্ট এবং বাজার মূলধন কমেছে ১১ হাজার ৫৮৬ কোটি ৮৫ লাখ ৯১ হাজার টাকা।
এদিকে চলতি ফেব্রুয়ারি মাসে বাজার ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। ১ ফেব্রুয়ারি ডিএসইতে সূচক ছিল ৪ হাজার ৬৫৪.৯৫ পয়েন্ট। দৈনিক লেনদেন ছিল ১৮৪ কোটি ৬৮ লাখ ৫৩ হাজার টাকা। এছাড়া বাজার মূলধনের পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ১৪ হাজার ৮২ কোটি ৬৯ লাখ ৩১ হাজার টাকা। আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত ডিএসইতে সূচকের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৭৮৬.৬৯ পয়েন্টে। অন্যদিকে দৈনিক লেনদেন ও বাজার মূলধনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ২৯৯ কোটি ৪১ লাখ ৭৭ হাজার টাকা এবং ৩ লাখ ২২ হাজার ৭৩৪ কোটি ৩৯ লাখ ৩৫ হাজার টাকা।
এই ৮ কার্যদিবসে ডিএসই সূচক ১৩১.৭৪ পয়েন্ট বেড়েছে । এছাড়া লেনদেন ও বাজার মূলধন বেড়েছে যথাক্রমে ১১৪ কোটি ৭৩ লাখ ২৪ হাজার টাকা এবং ৮ হাজার ৬৫১ কোটি ৭০ লাখ ৪ হাজার টাকা।
এদিকে সামনে ব্যাংক-বীমা কোম্পানিগুলোর ডিভিডেন্ডের ঘোষণা আসবে। বিপুল পরিমাণ শেয়ার ধারণকারী এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দরে সামান্য ইতিবাচক প্রভাব পড়লে শেয়ারবাজারের সামগ্রিক সূচকে ঊর্ধ্বমূখী প্রবণতা বিরাজ করে। এছাড়া অন্যান্য বেশিরভাগ ভালো মৌলভিত্তির কোম্পানিগুলোর বছর শেষ হয় ডিসেম্বর মাসে । মূলত এই ইস্যুতেই বর্তমানে শেয়ারবাজারে স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত বহন করছে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
এ প্রসঙ্গে ডিএসইর সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বর্তমান শেয়ারহোল্ডার পরিচালক মো: শাকিল রিজভী শেয়ারবাজার নিউজ ডটকমকে জানান, বর্তমানে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর অনেক নিচে অবস্থান করছে। মার্কেট পিই রেশিও অনুযায়ী বর্তমান বাজার অত্যন্ত বিনিয়োগ উপযোগী। যদিও রাজনৈতিক সংকট অনেকটা শেয়ারবাজারে প্রভাব ফেলছে। তবে এই সংকট কেটে যাবে বলে আশা করা যায়। আগের যেকোনো সময়ের চাইতে বর্তমান মার্কেট অনেক ভালো অবস্থানে রয়েছে। সামনে শেয়ারবাজার আরো ভালো অবস্থানে যাবে। এখন বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ধরে রাখার কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করেন তিনি।
শেয়ারবাজার/সা/মু