দুর্বল ভীত ও অস্বচ্ছতা নিয়ে পুঁজিবাজারে প্রবেশ করছে জাহিন স্পিনিং
শেয়ারবাজার রিপোর্ট : দুর্বল আর্থিক ভীত ও অস্বচ্ছতা নিয়ে পুঁজিবাজারে প্রবেশ করছে বস্ত্রখাতের জাহিন স্পিনিং মিলস লিমিটেড। পারিবারিক আধিপত্যে কোনো স্বাধীন পরিচালক ছাড়াই এ কোম্পানির কার্যক্রম চলছে। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্দেশিত করপোরেট গভর্নেন্স গাইডলাইন (সিজিজি) পরিপালন করেনি জাহিন স্পিনিং। তারপর ওপর প্রশ্নবিদ্ধ আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে এ কোম্পানিতে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ ঝুঁকির মধ্যে পড়ার আশঙ্কা করছেন বাজার বিশেষজ্ঞরা।
জানা যায়, পুঁজিবাজারে প্রাথমিক গণ প্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে ১ কোটি ২০ লাখ শেয়ার ছাড়ার মাধ্যমে ১২ কোটি টাকা উত্তোলনের প্রক্রিয়ায় রয়েছে জাহিন স্পিনিং মিলস। তার আগে ৪ কোটি ৩৫ লাখ শেয়ার প্রতিটি ১০ টাকায় প্লেসমেন্ট শেয়ার ছেড়ে কোম্পানিটি বিপুল পরিমাণ অর্থ উত্তোলন করেছে। কিন্তু ক্রেডিট রেটিং অনুযায়ী এ কোম্পানির আর্থিক ভীত সন্তোষজনক পর্যায়ে নেই। এর ক্রেডিট রেটিং দীর্ঘমেয়াদে ট্রিপল বি-৩ এবং স্বল্প মেয়াদে রয়েছে এসটি-৩ রেটিং। এই রেটিং দিয়ে লোয়ার মিডিয়াম গ্রেড বুঝানো হয়। অর্থাৎ ফিন্যান্সিয়াল কমিটমেন্টস রক্ষায় কোম্পানিটির ক্যাপাসিটি দুর্বল।
এদিকে কোম্পানির স্বচ্ছতা আনয়নে নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিজিজি পরিপালন বাধ্যতামূলক করলেও জাহিন স্পিনিং তা পরিপালন করেনি। কোম্পানির প্রতি ৫ জন পরিচালকের একজন স্বাধীন পরিচালকের আইন থাকলেও জাহিন স্পিনিং তা এখনো পরিপালন করেনি বলে দাখিলকৃত প্রসপেক্টাস থেকে জানা গেছে। পারিবারিক আধিপত্যে কোম্পানির কার্যক্রম চলছে। পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির কার্যক্রম পরিচালনায় এভাবে পারিবারিক আধিপত্যে নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন তুলেছেন বিনিয়োগকারীরা। এদিকে এ কোম্পানির প্রসপেক্টাসে বর্নিত আর্থিক প্রতিবেদনও অনেকটা প্রশ্নবিদ্ধ বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, ৩০ জুন ২০১৩ পর্যন্ত কর পরিশোধের পর মুনাফা ১ কোটি ৪৭ লাখ ২২ হাজার ৩৩ টাকা। ৩০ জুন ২০১৪ পর্যন্ত কর পরিশোধের পর মুনাফার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫ কোটি ৩১ লাখ ২ হাজার ৫০২ টাকা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে মুনাফা ৩.৬১ গুন বৃদ্ধি পেয়েছে। অথচ ২০১০ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত মুনাফায় এতো প্রভাব পড়েনি। বরং শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) অনেক কমেছে। ২০১০ সালে কোম্পানির ইপিএস ছিল ৯.৮৩ টাকা। এরপরে ২০১১ সালে কমে হয়েছে ৭.০৩ টাকা, ২০১২ সালে হয়েছে ২.৩৫ টাকা এবং ২০১৩ সালে তা আরো কমে হয়েছে ০.৫০ পয়সা। অথচ ২০১৪ সালে অর্থাৎ তালিকাভুক্তির অনুমোদনের সময়ে এর ইপিএস দ্বিগুণ বাড়িয়ে ১.০১ টাকা দেখানো হয়। এ ব্যাপারে কোম্পানির সিএফও ফারুক হোসেন শেয়ারবাজারনিউজ.কমকে জানান, এখন আইপিও নিয়ে অনেক ঝামেলা চলছে। আপনি আগামী সপ্তাহে যোগাযোগ করেন। সংশ্লিষ্টদের অভিমত শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্তির আগেই এ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন পুন:নিরীক্ষা করা জরুরি। পুঁজিবাজারে এরকম দুর্বল কোম্পানি প্রবেশ করার পূর্বে নিয়ন্ত্রক সংস্থার আরো গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা দরকার বলেও মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
শেয়ারবাজার রিপোর্ট/সা/অ