আটকে আছে হাজার কোটি টাকা: ওটিসি উন্নয়নে কর্তৃপক্ষের নজর নেই
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: ইতিমধ্যে ভোগান্তি ও গলার কাঁটা হিসেবে ওভার দ্য কাউন্টার (ওটিসি) মার্কেট বেশ পরিচিতি লাভ করেছে। যেসকল কোম্পানিকে অনেকটা ধর পাকড়াও করে এ মার্কেটে নিয়ে আসা হয়েছে প্রায় অধিকাংশেরই পারফরমেন্স মন্দের সিঁড়ি পারি দিচ্ছে। শুধুমাত্র অল্প কিছু কোম্পানি যেগুলো নিয়মিত উৎপাদনের পাশাপাশি লাভে রয়েছে। বিনিয়োগকারীরা বলছেন, এ মার্কেটের ৬৬ কোম্পানিতে তাদের অনেক টাকা আটকে রয়েছে। যার নেপথ্যে এ মার্কেট প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজও পায়নি সক্রিয়তা। নিয়মিত লেনদেনের অভাব ও লেনদেন হলেও হাতে গোনা ২/১টি কোম্পানি ছাড়া অন্য কোন কোম্পানিতে ক্রেতাদের কোনো আগ্রহ নেই। ফলে নিস্ক্রিয়তার সাইনবোর্ড গলায় ঝুঁলিতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ৮ তলায় অবস্থান করছে এটি। ওটিসির এই নিস্ক্রিয়তার নেপথ্যে বাজার সংশ্লিষ্টরা কর্তৃপক্ষকেই দায়ী করছেন।
তারা বলছেন, যেসকল কোম্পানি এ মার্কেটে রয়েছে সবগুলোই দুর্বল মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানি। জেনেশুনে কেউ আগুনে হাত দিতে চাইবে না। প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজও একটি কোম্পানি এ মার্কেটে তালিকাভুক্ত হয়নি। নতুন নতুন কোম্পানির লিষ্টিং করতে হলে লিষ্টিং রুলস্ থাকা প্রয়োজন। কিন্তু এখানে তা নেই। লিষ্টিং রুলস্ না থাকার কারণে কোনো প্রকার লিষ্টিং কমিটিও নেই যারা নতুন কোম্পানিকে এ মার্কেটে তালিকাভুক্ত করতে কাজ করবে। মূল মার্কেটে লেনদেন করতে নতুন নতুন সফটওয়্যার যুক্ত করা হচ্ছে। অথচ ওটিসিতে নতুন সফটওয়্যার যুক্ত করাতো দূরের কথা। অদ্য পর্যন্ত নিজস্ব কোন সফটওয়্যারই নেই। বর্তমানে ডিএসইর ওয়েবসাইট ব্যবহার করে চলছে এর ঢিমেতালে কার্যক্রম।
মূল মার্কেটের সফটওয়্যার আধুনিক থেকে অত্যাধুনিক করার জন্য কোটি কোটি টাকা ব্যয় করা হচ্ছে। কিন্তু এখানে তা নেই। ফলে ওটিসির কার্যক্রম থমকে রয়েছে। ওটিসির নিস্ক্রিয়তার আরো একটি কারণ হচ্ছে এ মার্কেটে অটোমেটেড ট্রেড সিস্টেম নেই। ফলে লেনদেন করতে হলে নানান জটিলতায় পড়তে হয় বিনিয়োগকারীদের। এরকম ভোগান্তির ভয়ে কেউ এ মার্কেটে লেনদেন করতে ইচ্ছাপোষণ করে না।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ওটিসি মার্কেট বর্তমানে স্বল্প পরিসরে আবদ্ধ রয়েছে। এর পরিধি আরো বাড়ানো প্রয়োজন। বর্তমানে যেসকল কর্মকর্তা-কর্মচারী এ মার্কেটে কাজ করছে। এদের সাথে আরো দক্ষ লোকবল বাড়ানো উচিত। যাতে ওটিসিকে গতিশীল করতে যাবতীয় কাজকর্ম সম্পাদান করতে পারে। সবচেয়ে বড় প্রয়োজন বিএসইসি ও ডিএসইর এ মার্কেটের প্রতি সবসময় আন্তরিক থাকা। লিষ্টিং রুলস্, লিষ্টিং কমিটি, নিজস্ব সফটওয়্যার যুক্ত করা, অটোমেটেড ট্রেড সিস্টেম চালু ও এর মার্কেটের পরিসর আরো বাড়ানো হলে নিস্ক্রিয়তার ছাপ মুছে দিয়ে মূল মার্কেটের ন্যায় ওটিসি সক্রিয় অবস্থানে থাকবে বলে মনে করছেন তারা।
শেয়ারবাজারনিউজ/ম.সা