আজ: শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ইং, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৫, শনিবার |

kidarkar

ইডিএফের কার্যক্রমে নজরদারি বাড়াতে বিএসইসি’র সহায়তা চায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক

DSC_0861শেয়ারবাজার রিপোর্ট : টেক্সটাইল খাতে দূষণমুক্ত উৎপাদন বাড়াতে পরিবেশবান্ধব সবুজ কারখানা তৈরির জন্য ৫০ কোটি ডলারের একটি নতুন রফতানি উন্নয়ন তহবিল (ইডিএফ) গঠন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রস্তাবিত তহবিলের কার্যক্রম পরিচালনা এবং নজরদারির জন্য পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকেও (বিএসইসি) প্রতিনিধিত্বমূলক অংশগ্রহণ করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর ড. আতিউর রহমান।

এছাড়া পরিবেশবান্ধব কারখানা তৈরির জন্য অন্য খাতের উদ্যোক্তারাও এ তহবিল থেকে সহায়তা পাবেন।

১৪ ফেব্রুয়ারি শনিবার দুপুরে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নিজস্ব কার্যালয়ে ‘এক্সেস টু ফাইন্যান্স এনভায়রনমেন্টাল সাসটেইনেবলিটি ইন দ্য টেক্সটাইল সেক্টর’বিষয়ক সেমিনারে বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর ড. আতিউর রহমান এমন ঘোষণা করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে গভর্নর বলেন, ‘টেক্সটাইল খাতের অনেক কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত রয়েছে। পাশাপাশি এখনো অনেক টেক্সটাইল খাতের কোম্পানি তালিকাভুক্ত হচ্ছে। তাই কোম্পানিগুলো যাতে আইপিও’র মাধ্যমে উত্তোলিত অর্থ এবং ইডিএফ থেকে প্রাপ্ত অর্থ পরিবেশবান্ধব কারখানা তৈরিতে ব্যবহার করতে পারে সেজন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পাশাপাশি বিএসইসি’রও নজরদারি প্রয়োজন’। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পাশাপাশি সরকারি এবং বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠানের সহযোগীতা পেলে পরিবেশের উন্নয়নে বাংলাদেশে সবুজ টেক্সটাইল প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব বলে মনে করছেন গভর্নর ড. আতিউর রহমান।

তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার ২০২১ সালের মধ্যে বস্ত্র খাতে রফতানি লক্ষ্যমাত্রা ৫০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু বস্ত্র খাতের কল-কারখানার মাধ্যমে দেশের পরিবেশের ব্যপক ক্ষতি হচ্ছে। তাই দেশের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে পরিবেশবান্ধব কারখানা তৈরির বিকল্প নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এখন পরিবেশবান্ধব কারখানা প্রতিষ্ঠার দিকে নজর দিচ্ছে। এজন্য তাদের বাজেটেও পর্যাপ্ত বরাদ্দ রাখছে। কিন্তু আমাদের দেশে এখনও বাজেটে এ ধরনের কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।’

তাই আগামী বাজেটে এবং আসন্ন ৭ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় পরিবেশবান্ধব কারখানা প্রতিষ্ঠার দিকে সুনজর দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান গভর্নর আতিউর রহমান।

গভর্নর বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রধান রপ্তানি আয়ের উৎস পোশাক খাত। এ খাতে বর্তমানে ৪০ লাখ মানুষ কর্মরত। এর ৮০ শতাংশই নারী। পোশাক খাতে পরিবেশবান্ধব কারখানার অভাবে রফতানি বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই আমাদের বস্ত্র খাতসহ রপ্তানি আয়ের প্রধান খাতগুলো পরিবেশবান্ধব করতে হবে।’

পলিসি রিসার্চ সূত্রে জানা যায়, প্রস্তাবিত ইডিএফ এর আকার ধরা হয়েছে ১.৫ বিলিয়ন ডলার। এ অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তত্বাবধানে দেশের সকল তফসিলি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব কারখানা তৈরির জন্য রপ্তানিকারক কোম্পানিগুলোতে বিতরণ করা হবে। টেক্সটাইল খাতের কোম্পানিগুলোর মধ্যে যারা টেক্সটাইল কোম্পানির মালিকপক্ষের এসোসিয়েশন বিটিএমএ এর অন্তর্ভুক্ত শুধুমাত্র তারাই এ তহাবিল থেকে অর্থ সহায়তা পাবে। তবে একটি কোম্পানি এ তহবিল থেকে সর্বোচ্চ ১৫ মিলিয়ন ডলার ঋণ নিতে পারবে। তহবিল থেকে প্রাপ্ত ঋণের সুদের হার ষান্মাষিক ভিত্তিতে ২.৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এর সাথে এ ঋণ প্রদানের জন্য অনুমোদন পাওয়া বাণিজ্যিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ষান্মাষিক ভিত্তিতে ১ শতাংশ হারে সুদ নিতে পারবে।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ওয়াটার (পিএসিটি) প্রোগ্রাম ম্যানেজার মৃণাল সরকার। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ. মনসুর।

এতে আরও বক্তব্য রাখেন বিজিএমইএ এর সাবেক সহ-সভাপতি মো. ফারুক হাসান, স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংকের সিইও মো. আবরার এ. আনোয়ার, সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. মুস্তাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. আখতারুজ্জামান, ফাইন্যান্সিয়াল এক্সিলেন্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান মামুন রশিদ এবং ডিবিএল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল জব্বার।

 

শেয়ারবাজার/অ

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.