ডিএমআর সিকিউরিটিজের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎয়ের অভিযোগ
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ১৪নং ট্রেকহোল্ডার মৈত্রী বিশ্বাস এন্ড কোম্পানি বর্তমান ডিএমআর সিকিউরিটিজ লিমিটেডের বিরুদ্ধে বিনিয়োগকারীর অর্থ আত্মসাৎয়ের অভিযোগ উঠেছে। আদালত বিনিয়োগকারীর পক্ষ্যে রায় দেয়ার পর হাউজ কর্তৃপক্ষ অর্থ ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। বিনিয়োগকৃত টাকা ফেরত নেয়ার সিদ্ধান্ত নিলে গ্রাহককে মোট বিনিয়োগের এক-তৃতীয়াংশ অর্থ পরিশোধ করে বাকি টাকা হাউজ কর্তৃপক্ষ আত্মসাৎ করার পায়তারা করছে বলে অভিযোগ করেছেন ডিএমআর সিকিউরিটিজের বিনিয়োগকারী মো: শাহদাৎ হোসেন শিকদার। তার হাউজের ক্লায়েন্ট কোড নং: ২৭৩।
হাউজের অর্থ আত্মসাৎয়ের বিষয়ে ডিএসইর চীফ রেগুলেটর অফিসার বরাবর ভুক্তভোগি বিনিয়োগকারী অভিযোগপত্র দাখিল করেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে অভিযোগ পত্রের বিষয়ে হাউজের কাছে জানতে চাইলে সেখানকার রিপ্রেজেন্টেটিভ কনক শেয়ারবাজারনিউজ ডটকমকে জানান, এটা অনেক পুরনো ইস্যু। আপনাদের যা মন চায় আপনার লিখতে পারেন। এতে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। হাউজের আরেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আরকে দাস জানান, বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টে মামলা চলছে। এখনো এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।
অন্যদিকে ভুক্তভোগি বিনিয়োগকারী শাহদাৎ হোসেন শিকদার জানান, আমি শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে ২৩/৮/১৯৯৯ তারিখে মৈত্রী বিশ্বাস এন্ড কোম্পানি (বর্তমান ডিএমআর সিকিউরিটিজ,ডিএসই সদস্য নং-১৪) তে ৩ (তিন) লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করি। পরবর্তীতে দিন দিন শেয়ারবাজার নিম্নগামী হতে থাকলে আমি আমার বিনিয়োগকৃত টাকা ফেরৎ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেই, সেই মোতাবেক ০৭/০৩/২০০০ তারিখ উক্ত কোম্পানি আমাকে ১(এক) লক্ষ টাকা ফেরৎ দেয়, কিন্তু অবশিষ্ট ২(দুই) লক্ষ টাকা ফেরৎ দিতে অস্বীকার করলে আমি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (ডিএসই) এর নিকট অভিযোগপত্র দাখিল করি। অতপর ডিএসই বিষয়টি নিষ্পত্তিকল্পে একক জজের নিকট শুনানীর জন্য প্রেরণ করে এবং সে অনুযায়ী উভয় পক্ষের শুনানী শেষে জজ আমার পক্ষে রায় দেন। তারপর মৈত্রী বিশ্বাস এন্ড কোম্পানি উক্ত রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে ২৯/০৩/২০০০ তারিখে (৩ সদস্যের) যৌথ ব্যাঞ্চ পূর্ববতী একক বেঞ্চের রায় বহাল রাখেন। ডিএসই পর পর দুটি চিঠির মাধ্যমে উক্ত কোম্পানিকে (রায় মোতাবেক) আমার টাকা ফেরৎ দেওয়ার নির্দেশ দিলেও মৈত্রী বিশ্বাস কোম্পানি আমার টাকা প্রদান না করে উল্টো আমার বিরুদ্ধে ঢাকা ৫ম জজ আদালতে মামলা দায়ের করে এবং ডিএসই আমাকে মামলায় সহায়তা প্রদান করবে বলে আশ্বাস দেন।
ভুক্তভোগি আরো বলেন, আমি সুদূর ঝালকাঠী থেকে প্রতি তারিখে এসে মামলা তদরকি করতে থাকি, এক পর্যায়ে ডিসেম্বর ২০০২ মাসে আমি সৌদি আরবে চলে যাই। এদিকে আমার প্রতিনিধি/উকিল আমার মামলা চালিয়ে যেতে থাকেন। ২৫/০৬/২০০৬ তারিখ মৈত্রী বিশ্বাস কোম্পানী দায়েরকৃত মামলা খারিজ হয়। এরপর মৈত্রী বিশ্বাস কোম্পানি সিম মোকাদ্দমা দায়ের করলে তাং-১৮/০৩/২০০৮ তারিখে তা খারিজ হয়। এরপর অপর একটি মিসআপিল মামলা দায়ের করলে তাও ১৬/০৩/২০১০ তারিখে খারিজ হয়। উক্ত কোম্পানি পুনরায় আপিল করলে ০৮/০৫/২০১১ তারিখে ঢাকা ৪র্থ জেলা জজ আদালত মামলাটি শেষ বারেরমত খারিজ করে দেন। পরবর্তীতে আমার প্রতিনিধি/ছোট ভাই মৈত্রী বিশ্বাস কোম্পানিতে যোগাযোগ করলে সন্তোষজনক কোন বক্তব্য পাওয়া যায় নি।
এ পর্যায়ে আমি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, আমি বাংলাদেশ বিমান বাহিনী হতে ফেব্রুয়ারী ১৯৯৯-এ অবসর নিলে এককালীন মাত্র ৩(তিন) লক্ষ টাকা পাই। আমার এক বন্ধুর পরামর্শে সমুদয় টাকা শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করি। শেয়ার বাজারে কারো নগদ টাকা কোন মেম্বার আত্মসাৎ করতে পারে তা আমি কখনো ভাবতেও পারিনি। উপরোক্ত আমার বিরুদ্ধে মামলা করা এবং উক্ত মামলা পরিচালনা করা ‘মারার উপর খাড়ার ঘা’ এর মত। আনুমানিক ১১ বছর মামলা পরিচালনা করতে আমার কত টাকা খরচ হতে পারে তা আপনি সহজেই অনুমান করতে পারেন। এছাড়া গত ১৫ বছর আমি উক্ত দুই লাখ টাকা ব্যাংকে রাখতে আমি অনেক টাকা সুদসহ পেতাম।
তাই বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে আমার আকুল আবেদন, আমার প্রাপ্য টাকা মৈত্রী বিশ্বাস অ্যান্ড কোম্পানির কাছ থেকে ফেরত পেতে পারি সে ব্যাপারে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার আহবান জানাচ্ছি।
শেয়ারবাজারনিউজ/মু/ম.সা